১। " ঝাউয়ের কাননে মিঠা মাঠে মটর- ক্ষেতের শেষে

    তোতার মতন চকিতে কখন আমি আসিয়াছি ভেসে। "
        ( আমি কবি, -- সেই কবি --    :    ঝরা পালক   ) 

২। " শঙ্খশুভ্র মেঘপুঞ্জে, শুক্লাকাশে, নক্ষত্রের রাতে ;

       ভেঙে যায় কীটপ্রায় ধরণীর বিশীর্ণ নির্মোক,
      তোমার চকিত স্পর্শে, হে অতন্দ্র দূর কল্পলোক! "
            ( নীলিমা  :  ঝরা পালক  ) 

৩। " নব নবীনের লাগি

     প্রদীপ ধরিয়া আঁধারের বুকে আমরা রয়েছি জাগি। "
                ( নব নবীনের লাগি  :  ঝরা পালক ) 

৪। " গাহি মানবের জয়!

    -- কোটি - কোটি বুকে কোটি ভগবান আঁখি মেলে জেগে রয়!   " 
            (    নব নবীনের লাগি   :  ঝরা পালক  )

৫। " ধবল কাশের দলে, আশ্বিনের গগনের তলে

        তোর তোরে ড়ে কিশোর, মৃগতৃষ্ণা কভু নাহি জ্বলে! " 
       (  কিশোরের প্রতি  :  ঝরা পালক   ) 

৬ । " যে বিরহ জাগে চরাচরে

               গোধূলির অবসানে শ্লোক ম্লান সাঁঝে,  "
            ( কিশোরের প্রতি  :   ঝরা পালক  ) 

৭। " দরিয়ার তীর ছাড়ি দেখ নাই দাব - মরুভূমি

                           জ্বলন্ত নিষ্ঠুর ! " 
      (  কিশোরের প্রতি   :  ঝরা পালক   ) 

৮। " কে যেন রেখেছে সবুজ ঘাসের কোমল গালিচা পাতি! / যত খুন যত খারাবীর ঘোরে পরান আছিল মাতি, / নিমেষে গিয়েছে ভেঙে / স্বপন - আবেশে রেঙে / আঁখি দুটি তার জৌলুস রাঙা হয়ে গেছে রাতারাতি। " ( মরীচিকার পিছে  : ঝরা পালক ) ৯। " অদূরে আকাশে মধুমালতীর পাপড়ি পড়িছে ঝরি

            নিভিছে দিনের আলো ; " 
    (  জীবন- মরণ দুয়ারে আমার  :  ঝরা পালক  )

১০। " দীর্ঘ দিবস বয়ে গেছে যারা হাসি অশ্রুর বোঝা

                 চাঁদের আলোকে ভেঙেছে তাদের ' রোজা ' ; " 
    (  জীবন - মরণ দুয়ারে আমার : ঝরা পালক  ) 

১১। " লুটায়ে রয়েছে কোথা সীমান্তে শরৎ ঊষার শ্বাস!

       ঘুগু - হরিয়াল - ডাহুক - শালিখ - গ্যাংচিল -             বুনোহাঁস " 
        (  বেদিয়া  :  ঝরা পালক ) 

১২ । " কোন দূর কুহকের কূল

      লক্ষ্য করি ছুটিতেছে নাবিকের হৃদয় - মাস্তুল 
        কে বা তাহা জানে।  "          
     ( নাবিক : ঝরা পালক  )                                           ১৩।  "  বনের চাতক বাঁধল বাসা মেঘের কিনারায়,-
           মনের চাতক হারিয়ে গেল দূরের দুরাশায়। " 
        ( বনের চাতক - মনের চাতক : ঝরা পালক ) 

১৪। " চিনিমাখা ছায়ায় ঢাকা চুনীর ঠোঁটের মাঝে

         লুকিয়ে আছে সে কোন মধু মৌমাছিদের ভিড়ে। "
        ( বনের চাতক - মনের চাতক  : ঝরা পালক )
         

১৫। " গাগরীর কোলে তার উথলিয়া ওঠে নাই আমাদের

                         গাঙিনীর  ঢেউ। " 
            ( একদিন খুঁজেছিনু যারে : ঝরা পালক ) 

১৬। " ছলাময় আকাশের নিচে

              লক্ষ প্রেতবধূদের  পিছে 
           ছুটিয়া চলিছে তব প্রেম - পিপাসার 
                                             অগ্নি - অভিসার! " 
            ( আলেয়া : ঝরা পালক ) 
       

১৭। " অনন্ত অঙ্গার দিয়া হৃদয়ের পাণ্ডুলিপি গড়ি,

          ঊষার বাতাস ভুলি,  -- পলাতকা রাত্রির পিছনে 
          যুগ - যুগ ছুটিতেছ কার অন্বেষণে! " 
      (  আলেয়া   :  ঝরা পালক  ) 

১৮। " বাংলার মাঠ - ঘাটে ফিরেছিনু বেনু হাতে একা,

       গঙ্গার তীরে কবে কার সাথে হয়েছিল দেখা। " 
       (  অস্তচাঁদে  : ঝরা পালক  ) 

১৯। " বাতাস আজি ঘুমিয়ে আছে

         জল - ডাহুকের  বুকের কাছে ; " 
     (  ছায়া প্রিয়া :   ঝরা পালক ) 

২০ । " কাঁদছে পাখি পউষনিশির

                    তেপান্তরের বক্ষে! " 
       (  ছায়া প্রিয়া :  ঝরা পালক ) 

২১। " মোর জানালার পাশে তারে দেখিয়াছি রাতের দুপুরে ---- / তখন শকুন বধূ যেতেছিল শ্মশানের পানে উড়ে - উড়ে। "

( ডাকিয়া কহিল মোরে রাজার দুলাল : ঝরা পালক ) 

২২। " শুক্লা একাদশী রাতে বিধবার বিছানায় যেই জ্যোৎস্না ভাসে / তারই বুকে চুপে - চুপে কবি আসে,--- সুর তার আসে! "

   (  কবি   : ঝরা পালক ) 

২৩। " জোনাকির মতো সে যে দূরে - দূরে যায় উড়ে উড়ে --- / আপনার মুখ দেখে ফেরে সে যে নদীর মুকুরে! "

      (   কবি  :  ঝরা পালক  ) 

২৪ " জ্বলে ওঠে আলেয়ার মতো তার লাল আঁখিখানি।

         আঁধারে ভাসায় খেয়া সে কোন পাষাণী! " 
        (  কবি : ঝরা পালক ) 

২৫। " বৈশাখের বেলাতটে, সমুদ্রের স্বর, ---

       অনন্ত, অভঙ্গ, উষ্ণ, আনন্দসুন্দর! " 
      ( সিন্ধু    :   ঝরা পালক ) 

২৬। " জয় পুরোহিত আহিতাগ্নিক, -- জয়, -- জয় চিন্ময়! / স্পর্শে তোমার নিশা টুটেছিল, --- উষা উঠেছিল জেগে "

   ( বিবেকানন্দ  :  ঝরা পালক ) 

২৭। " হে প্রেমিক মহাজন,

     তোমার পানেতে তাকাইল কোটি দরিদ্র -  নারায়ণ ; "
    (  বিবেকানন্দ   :   ঝরা পালক  ) 

২৮ । " মহামৈত্রীর বরদ - তীর্থে ---- পুণ্য ভারতপুরে

    পূজার ঘন্টা মিশিছে হরষে নামাজের সুরে - সুরে! " 
    (  হিন্দু - মুসলমান  :   ঝরা পালক  ) 

২৯। " আমার মনের চিতানলে জ্বলে লুটায়ে যেতেছে ছাই!

   আমার চোখের অশ্রুপুঞ্জে লভিয়াছে তারা ঠাঁই। " 
   (   নিখিল আমার ভাই  :  ঝরা পালক ) 

৩০ । " বরফের মতো চাঁদ ঢালিছে ফোয়ারা! "

      ( মাঠের গল্প - পেঁচা :  ধূসর পাণ্ডুলিপি  ) 
         

৩১। " নিঃসঙ্গ বুকের গানে

         নিশীথের বাতাসের মতো 
         একদিন এসেছিলে, --
       দিয়েছিলে এক রাত্রি দিতে পারো যত! " 
   ( সহজ  :  ধূসর পাণ্ডুলিপি )

৩২। " যে কবি পেয়েছে শুধু যন্ত্রণার বিষ

                        শুধু জেনেছে বিষাদ,
         মাটি আর রক্তের কর্কশ স্বাদ, 
        সে বুঝেছে, --- প্রলাপের ঘোরে 
        যে বকেছে, --- সেও যাবে সরে ; 
                একে - একে সবই  " 
      (  কয়েকটি লাইন : ধূসর পাণ্ডুলিপি )

৩৩। " তুমিও আমার মতো সমুদ্রের পানে, জানি, রয়েছো তাকায়ে, / ঢেউয়ের হুঁচোট লাগে গায়ে, --- / ঘুম ভেঙে যায় বার বার / তোমার ---- আমার! "

( কয়েকটি লাইন  :  ধূসর পাণ্ডুলিপি )

৩৪। " তারা ভরা আকাশের তলে,

           জীবন সবুজ হয়ে ফলে, 
            শিশিরের শব্দে গান গায় 
           অন্ধকার, --- আবেগ জানায় 
                             রাতের বাতাস! " 
      (   কয়েকটি লাইন : ধূসর পাণ্ডুলিপি )

৩৫। " গানের সুরের মতো বিকালের দিকের বাতাসে

        পৃথিবীর পথ ছেড়ে --- সন্ধ্যার মেঘের রঙ খুঁজে 
  হৃদয় ভাসিয়া যায়, -- সেখানে সে কারে ভালোবাসে!--"
(  অনেক আকাশ - ধূসর পাণ্ডুলিপি ) 
৩৬।  "আকাশ উঠিবে কেঁপে আবার সে সংগীতের ঝড়ে! "
    ( অনেক আকাশ : ধূসর পাণ্ডুলিপি )

৩৭। " গাছের শাখার জালে এলোমেলো আঁধারের মতো

 হৃদয় খুঁজিছে পথ, ভেসে - ভেসে, --- সে যে কারে চায়! "
( অনেক আকাশ :  ধূসর পাণ্ডুলিপি ) 
  

৩৮ । " রাঙা রোদ, -- নারীর মতন

       এ দেহ পেয়েছে যেন তাহার চুম্বন 
       ফসলের ক্ষেতে!  " 

( পিপাসার গান : ধূসর পাণ্ডুলিপি ) ৩৯। " বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ / খুঁজিতে যাই না আর ; "

     (  তিন নাম্বার সনেট : রূপসী বাংলা ) 

৪০। " কামরাঙা - লাল মেঘ যেন মৃত মনিয়ার মতো /

     গঙ্গা সাগরের ঢেউয়ে ডুবে গেছে  -- আসিয়াছে শান্ত অনুগত /  বাংলার নীল সন্ধ্যা --- কেশবতী কন্যা যেন এসেছে আকাশে : " 
  (  ছয় নাম্বার সনেট  :  রূপসী বাংলা  ) 
৪১ ।  "  বেহুলার লহনার মধুর জগতে 
   তাদের পায়ের ধুলো - মাখা পথে বিকায়ে দিয়েছি আমি মন  " 
 (  দশ নাম্বার সনেট : রূপসী বাংলা  ) 
৪২। " সুরঞ্জনা, আজও তুমি আমাদের পৃথিবীতে আছ ; 
     পৃথিবীর বয়সিনী তুমি এক মেয়ের মতন ; " 
       (  সুরঞ্জনা :  বনলতা সেন  ) 

৪৩ । " সবিতা, মানুষজন্ম আমরা পেয়েছি

        মনে হয় কোনো এক বসন্তের রাতে : " 
      ( সবিতা   :  বনলতা সেন  ) 

৪৪। " সুচেতনা, তুমি এক দূরতর দ্বীপ

         বিকেলের নক্ষত্রের কাছে : " 
        (  সুচেতনা  :  বনলতা সেন  )

৪৫ । " পৃথিবীর গভীর গভীরতর অসুখ এখন ;

        মানুষ তবুও ঋণী পৃথিবীর কাছে।  " 
     (   সুচেতনা : বনলতা সেন )

৪৬ । " আমরা জটিল ঢের হয়ে গেছি --- বহুদিন পুরাতন

           গ্রহে বেঁচে থেকে। " 
        (   আবহমান : বনলতা সেন )

৪৭। " সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মতন

  সন্ধ্যা নামে ; ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে চিল ; 

পৃথিবীর সব রঙ নিভে গেলে পাণ্ডুলিপি করে আয়োজন তখন গল্পের তরে জোনাকির রঙে ঝিলমিল ; "

   ( বনলতা সেন :  বনলতা সেন )

৪৮। " কার মুখ ? --- আমলকী শাখার পিছনে শিঙের মতন বাঁকা নীল চাঁদ একদিন দেখেছিল তাহা ; "

     (  স্বপ্ন :  মহাপৃথিবীপৃথিবী ) 

৪৯। " সকালের আকাশের মতন বয়স ; /

 সে সকাল কখনও আসে না ঘোর, স্বধর্মনিষ্ঠ রাত্রি বিনে। " 
    ( বিভিন্ন কোরাস : মহাপৃথিবী )

৫০। " সেইখানে যুথচারী কয়েকটি নারী

ঘনিষ্ঠ চাঁদের নিচে চোখ আর চুলের সংকেতে 

মেধাবিনী ; --- দেশ আর বিদেশের পুরুষেরা যুদ্ধ আর বাণিজ্যের রক্তে উঠিবে না মেতে। "

(  গোধূলিসন্ধির নৃত্য : সাতটিটি তারার তিমির )

৫১। " পিছনের ঢেউগুলো প্রতারণা করে ভেসে গেছে ;

      সামনের অভিভূত অন্তহীন সমুদ্রের মতন এসেছে ; "
     (  সূর্যপ্রতিম  : সাতটি তারার তিমির )