সৃজিত মুখোপাধ্যায়

সৃজিত মুখোপাধ্যায় বা সৃজিত মুখার্জি (জন্মঃ ২৩ সেপ্টেম্বর ১৯৭৭) একজন ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক, অভিনেতা, চিত্রনাট্যকার, অর্থনীতিবিদ। ২০১০ সালে প্রথম চলচ্চিত্র অটোগ্রাফ পরিচালনার পরপরই তিনি আলোচনায় আসেন। ছবিটি বাণিজ্যিকভাবে সফল হয় এবং সমালোচকদের দ্বারা প্রশংসিত হয়। তার সবগুলো ছবিই সমালোচকদের কাছে প্রশংসিত হয় এবং ব্যাপক সাড়া ফেলে। ৬১তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তার পরিচালিত 'জাতিস্মর' ছবিটি চারটি পুরস্কার জিতে নেয়। ৬২তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অনুষ্ঠানে তার পরিচালিত চতুষ্কোণ সিনেমাটির জন্য তিনি সেরা পরিচালক এবং সেরা চিত্রনাট্য বিভাগে পুরস্কার জিতে নেন। তার পরিচালিত রাজকাহিনী চলচ্চিত্রটি হিন্দিতে বেগম জান শিরোনামে পুনঃনির্মিত হয়েছে যার নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বিদ্যা বালান।

উক্তি সম্পাদনা

  • আমার মনে হয় দুনিয়াটা এতটাই অডিওভিস্যুয়াল হয়ে গেছে, যে দু’ঘন্টা সময় হাতে পেলেও আমরা নেটফ্লিক্সে একটা সিনেমা দেখব, একটা বই না পড়ে। আমি নিজেও সে দোষে দুষ্ট। যদিও এখন একটা চমৎকার বই পড়ছি – ‘স্যালভেশন অফ আ সেন্ট।’ আমার খুব প্রিয় জাপানি এক লেখকের বই……
  • আমি একদম মানুষের থেকে দূরে থাকি না। বরং উল্টোটাই। প্রায় প্রত্যেক বছর পুজোতেই ছবির প্রচারে যখন যাই, বহু মানুষের সঙ্গে দেখা করি। তাঁদের সঙ্গে কথা বলি। হলে হলে গিয়ে মানুষের ‘ফিডব্যাক’ নিই। মানুষকে বাদ দিয়ে কিছু হয় নাকি?
    • আনন্দবাজার পত্রিকার "উৎসব আনন্দ"তে সংযুক্তা বসুর নেওয়া সাক্ষাৎকার। ২০২৩
    • বাংলালাইভ-এর (banglalive.com) প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নেওয়া "প্রথম পুরুষ" শীর্ষক সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্বে। এপ্রিল ২০২০
  • ইংরেজি বর্ণমালার ছাব্বিশটা অক্ষরের প্রতিটা দিয়ে একটা করে সিনেমা বানিয়ে আমি থামব, এই হল প্ল্যান। ‘বেগমজান’ আর ‘বাইশে শ্রাবণ’ হয়েছে বলে ব্যাপারটা ছাব্বিশের জায়গায় সাতাশে চলে গেছে। সাতাশ যখন হয়েই গেছে, ওটা রাউন্ড অফ করে তিরিশটা সিনেমা বানিয়ে আমি থামব।
    • বাংলালাইভ-এর (banglalive.com) প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নেওয়া "প্রথম পুরুষ" শীর্ষক সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্বে। এপ্রিল ২০২০
  • আমি নিজেও কিন্তু নিজের সিনেমা দেখে কাঁদি। ... সত্যি কাঁদি। আমি গুমনামি দেখে কেঁদেছি। রাজকাহিনীর ক্লাইম্যাক্সে যতবার দরজাটা বন্ধ হয় আমি ভ্যাঁ-ভ্যাঁ করে পাগলের মতো কাঁদি। একটা জিনিস বুঝতে হবে। আমি ইন্টেলেকচুয়াল নই। আমি ইন্টেলেকচুয়ালদের জন্য সিনেমা বানাই না। আমি অবশ্য অন্যের সিনেমা দেখেও কাঁদি। অঝোরে কাঁদি। আমি ‘সিনেমাওয়ালা’ দেখে কেঁদেছি। আমি ‘নগরকীর্তন’ দেখে কেঁদেছি। ‘সাউন্ড অফ মিউজিক’ দেখে আমার এখনও গায়ে কাঁটা দেয়। আমি নিজে ইমোশনাল তো বটেই, সেই সঙ্গে একটা শিশুসুলভ উত্তেজনাও থাকে।
    • বাংলালাইভ-এর (banglalive.com) প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নেওয়া "প্রথম পুরুষ" শীর্ষক সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্বে। এপ্রিল ২০২০
  • সিনেমা আমার কাছে ম্যাজিক। এই যে আজ সন্ধ্যাবেলা ফেলুদার ডাবিং করছিলাম, এটাও একটা ম্যাজিক। সম্পূর্ণ অন্য দিনে তোলা একটা সিনে অন্য আর এক দিনে তোলা গলা বসছে। এরপর কাঠমান্ডুর বাজারের শব্দ আলাদা করে বসবে। সব মিলিয়ে একটা অন্য ব্রহ্মাণ্ড তৈরি হবে। এটা ম্যাজিক না? এই অন্য ব্রহ্মাণ্ডে ফেলুদা হেঁটে বেড়াচ্ছে। সেখানে কাকাবাবু আছে। সেখানে প্রবীর রায়চৌধুরী আছে। নেতাজিও আছেন। এই ম্যাজিকটা আছে বলে কোনও সমালোচনাই গায়ে লাগে না।
    • বাংলালাইভ-এর (banglalive.com) প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নেওয়া "প্রথম পুরুষ" শীর্ষক সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্বে। এপ্রিল ২০২০
  • আমি ডিটেলের দিকে খুবই নজর দিই। কিন্তু কখনওসখনও ভুল হয়ে যায়। আর মাল্টিটাস্কিংটা ইস্যু নয়। আমি যখন বছরে একটা করে সিনেমা বানাতাম, তখনও এরকম ভুল হয়েছে। বেন-হার সিনেমায় যেমন সেই রথের দৌড়ের সময় দেখা গেছিল প্লেন উড়ে যাচ্ছে, সেই ধরণের ভুল আর কি!
    • বাংলালাইভ-এর (banglalive.com) প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নেওয়া "প্রথম পুরুষ" শীর্ষক সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্বে। এপ্রিল ২০২০
  • প্রথম ছবিতে সব কিছু করে ফেলার একটা সাঙ্ঘাতিক চেষ্টা থাকে। প্রত্যেকটা সংলাপই সেখানে স্পেশ্যাল। কিন্তু বাস্তবে তো সেটা হয় না।
    • বাংলালাইভ-এর (banglalive.com) প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নেওয়া "প্রথম পুরুষ" শীর্ষক সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্বে। এপ্রিল ২০২০
  • আমার মধ্যেই তো প্রচুর ভায়োলেন্স। অনেক ভায়োলেন্ট জিনিস পড়েছি। অনেক ভায়োলেন্ট জিনিস দেখেছি। আমি যে পাড়ায় বড় হয়েছি সেটাই বেশ ভায়োলেন্ট ছিল। ভবানীপুরের গলির মধ্যে গ্যাং-ওয়ার দেখেছি আমি। আমার ছোটোবেলা থেকে থ্রিলারের প্রতিও একটা ঝোঁক ছিল।
    • "তোমার সিনেমায় ভায়োলেন্স যেভাবে এসেছে, বাংলা সিনেমা তা আগে দেখেনি। তুমি কি ইচ্ছাকৃতভাবেই সেটা এনেছ নাকি গল্পের খাতিরে?" প্রশ্নের জবাবে এই সাক্ষাৎকারে
  • লিঙ্গুইস্টিক ভায়োলেন্স আমি বাংলা সিনেমায় এনেছি। কিন্তু কোনও বিপ্লব ঘটানোর ইচ্ছে ছিল না। আপনাআপনিই এসেছে। আমার আলাপ কিন্তু অনেক রকম স্ট্রেটার মানুষের সঙ্গেই ছিল। আছেও। আমি ক্রিকেট খেলেছি বস্তির ছেলেদের সঙ্গে। আই কাম ফ্রম আ ব্রোকেন হোম। তাই বাড়িতেও প্রচুর ভায়োলেন্ট সিনস দেখতে হয়েছে। অতএব আমার পৃথিবীটাই আমার সিনেমায় ধরা পড়েছে। একইসঙ্গে মনে রাখতে হবে আমার বাবা-মা দু’জনেই অধ্যাপক ছিলেন। তাই শিক্ষিত, বুদ্ধিজীবী গোষ্ঠীর ভাষাও আমার ভালোমতো আয়ত্তে আছে। আমার জীবনটা অ্যাকচুয়ালি ‘বাইশে শ্রাবণ’ (হাসি)। বাংলা কবিতাও আছে, খিস্তিও আছে, রক্তপাত, নৃশংসতা সব আছে।
    • বাংলালাইভ-এর (banglalive.com) প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নেওয়া "প্রথম পুরুষ" শীর্ষক সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্বে। এপ্রিল ২০২০

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা