আনন্দ বাগচী
ভারতীয় বাঙালি কবি ও উপন্যাসিক
আনন্দ বাগচী ( ১ জুলাই ১৯৩২ - ৯ জুন ২০১২) ছিলেন ভারতীয় বাঙালি কবি ও উপন্যাসিক।
উক্তি
সম্পাদনা- চকখড়ি রচনার সূত্রপাত দীর্ঘ তিন বছর আগে। দৈনন্দিন আঁচড় কাটতে কাটতে একদিন মনে হল, থাক, আর না। সব কিছু জীবনে যা ঘটে, যা দেখা দেয়, যা ভালো লাগে, সেই 'আমার ভালো লাগা' টুকু উপন্যাসের উপকরণ হয়ে উঠতে পারে তখনই, ব্যক্তি থেকে জিনিসটা যখন নৈর্ব্যক্তিকতায় উত্তীর্ণ হয়,—তা আমি জানি। কিন্তু অনেক কিছু বলতে পারার, এবং হুবহু বলতে পারার লোভ সংবরণ করা অত্যন্ত আয়াস- সাধ্য ব্যাপার, চেষ্টা করলেও কতটুকু যে পেরেছি বলা সহজ নয়, বিশেষ করে লেখকের পক্ষে।
- চকখড়ি, মুখবন্ধ চকখড়ি
- এটি আমার প্রথম উপন্যাস এবং প্রথম বয়সের উপন্যাস ৷ সুতরাং এর পরিকল্পনায়, এর গাঁথুনিতে হয়ত কিছু কিছু ত্রুটি রয়ে গেছে, কিন্তু উপন্যাসের কথা আর গাঁথুনির পিছনে যে আর একটি বস্তু আছে, সেটি যদি পাঠককে মুগ্ধ করে তাহলে আমার ক্ষোভের কিছু থাকবে না।
- চকখড়ি, মুখবন্ধ চকখড়ি
- এই জাতীয় একনায়কতন্ত্রের উপন্যাসে উপকাহিনী-শাখাকাহিনীর বিন্যাস সম্ভব হয় না, বলতে গেলে সব মিলে একটিই কাহিনী মোটা রেখায় এগিয়ে চলে । তার রাস্তাটা একমুখী, ইচ্ছে মত কলমটাকে ঘোরাবার উপায় নেই। তাই শুরু এবং শেষের মধ্যে হয়ত কোন মসৃণ সামঞ্জস্য রাখা হয়নি, বরং রুক্ষ, অসমান, অসমতল প্রতিবিন্যাসের দ্বারা একটি যৌগিক একাগ্রতাকে ফুটিয়ে তোলবার চেষ্টা করা হয়েছে। সমগ্র কাহিনীর ফলশ্রুতিতে গিয়ে তবেই সেটি বোঝা যাবে ৷
- চকখড়ি, মুখবন্ধ চকখড়ি
- সিনবাদ নাবিক তখন সেই অজানা দ্বীপে গাছের মাথায় চড়ে রুদ্ধ বাস। সেই সামুদ্রিক রাত্রির রোমাঞ্চিত প্রহরে নাগরাজ বেরিয়েছে শিকারের সন্ধানে, মাথায় জ্বলছে রত্ন-প্রদীপ মণি।
- চকখড়ি, পৃষ্ঠা ১৫ চকখড়ি
- এই অন্ধকার ঘরের মধ্যেই রাতের পর রাত আসে সকলে। আবছা স্টেজের ওপর যেন এসে দাঁড়ায় অভিনেতারা। ফেডলাইট ক্রমে প্রখর হবে, কিন্তু এখন চারপাশে যেন কোনই দৃশ্যপট নেই এক অন্ধকার ছাড়া।
- চকখড়ি, পৃষ্ঠা ১৫ চকখড়ি
- সেই অন্ধকারের কি বিচিত্র রূপ। কখনো গাদা, কখনো লাল, কখনো তা মরুভূমির মত দলে, কখনো ঘলে ফসফরাস চালা সমুদ্রের মত। 'আসে সমুদ্রবিলাসী ববিনসনক্রুসো, আসে লিলিপুটের দেশের গালিভার। জিতলজিনের জেন হয়ে যায় সামান্য রুটি চুবির অপরাধে। বার্ণারের বন এগিয়ে আসছে, ম্যাকবেথের মুখে ভয়ের অন্ধকার। যদ্দুর মনে পড়ে এই 'অন্ধকারের মধ্যেই ইহুদি শাইলক ছুরি শানিয়েছে অ্যান্টোনিয়র বুকের মাংস কাটবে বলে আর নেপোলিয়ান ছুটন্ত ঘোড়ার পিঠেই থেকে থেকে ঘুমিয়ে নিয়েছেন সুবিধা মত।
- চকখড়ি, পৃষ্ঠা ১৫ চকখড়ি
- রাত্রে পড়াশুন যত কম করা যায় ততই ভালো। চোখ ভালো থাকে ছেলেদের।
- চকখড়ি, পৃষ্ঠা ২৭ চকখড়ি
- রাত্রে হয় বসে বসে গল্প করে। নয় ও আকাশের তারা পড়ো । চিনে রাখো কোনটা দক্ষিণ আকাশে প্রথন ওঠে, কোনটা ফোটে সকলের শেষে। কাল- পুরুষকে লক্ষ্য করো একমনে। স্বাতী আর নৃগশিরাকে যখন এক মিনিটে খুঁজে বের করতে পারবে তখন বুঝবে। তুমি আকাশের অ আ ক খ শেষ করেছো ।
- চকখড়ি, পৃষ্ঠা ২৭ চকখড়ি
- কত কথা লেখা আছে আকাশের গায়ে, কত গল্প তারায় তারায়। শুধু কি জ্ঞান বাড়ে, চোখের জ্যোতিও।
- চকখড়ি, পৃষ্ঠা ২৮ চকখড়ি
- বাজনা বেজে উঠলো। এবার যাত্রা আরম্ভ হবে।
- চকখড়ি, পৃষ্ঠা ৪৪ চকখড়ি
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাউইকিপিডিয়ায় আনন্দ বাগচী সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।