আবুল ফজল
আবুল ফজল (১ জুলাই ১৯০৩-৪ মে ১৯৮৩) বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাহিত্যিক। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং রাষ্ট্রপতির শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি মূলত একজন চিন্তাশীল ও সমাজমনস্ক প্রবন্ধকার।
উক্তি
সম্পাদনা- একুশ মানে মাথা নত না করা।
- ভাষা আন্দোলন প্রসঙ্গে তার বক্তব্য।
- রবীন্দ্রনাথকে মুছে দেওয়ার মতো সামর্থ্য পাকিস্তান কেন, সমগ্র ভূমণ্ডলেরও নেই।
- বাংলাদেশের মানুষকে বাঙালি পরিচয় দেওয়ার হিম্মত কে জুগিয়েছে? শেখ মুজিব ছাড়া এর কি দ্বিতীয় কোনো জবাব আছে? শেখ মুজিবকে হত্যা করা মানে এক অর্থে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে হত্যা করা। তিনি ছিলেন আমাদের স্বাধীনতার, আমাদের হিম্মত আর সংগ্রামের প্রতীক।
- চুরি এবং ফাঁকিবাজি চলে রাজনীতি, ব্যবসা আর অর্থনীতিতে। সংগীতে, শিল্পে আর সাহিত্যে নয়।
- মানুষের চেয়ে কপট প্রাণী আজও সৃষ্টি হতে বাকি।
- অনুসন্ধিৎসাই মানুষকে সত্যের পথে টানিয়া লইয়া যায়। বিশ্বাস করিয়া মানুষের সুখ আছে জানি, কিন্তু সত্যের অনুসন্ধানে বা সত্যকে আবিষ্কার করিয়া মানুষের যে সুখ, আত্মপ্রসাদ—তাহার তুলনা নাই। সন্দেহই জ্ঞানের গোঁড়া—এইতো বড় বড় দার্শনিকের কথা। সন্দেহ হইতে মানুষের মনে অনুসন্ধিৎসা জাগে। এই অনুসন্ধিৎসাই মানুষকে জ্ঞানের পথে চালিত করে। আজ মুসলমান ছেলের মনে জীবনের বড় কিছু সম্বন্ধে সন্দেহ জাগিতে পারে না। সন্দেহ জাগিলে তাহার গলা টিপিয়া ধরা হয়।
- শিখা পত্রিকার ৩য় সংখ্যা, 'তরুণ আন্দোলনের গতি' শীর্ষক প্রবন্ধ, ১৯২৯ সাল।
- মানুষের জীবনে সভ্যতা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে সাহিত্যের একটি প্রধান ভূমিকা রয়েছে। সে ভূমিকায় আমি কখনো বিস্মৃত হইনি। তাই দেশের মানুষ আর সমাজের বিচিত্র সমস্যা বারবার আমার লেখায় ছায়াপাত করেছে। এমনি সময় আমার লেখাকে কণ্টকিতও করেনি তা নয়। ভয়ে বা প্রলোভনে আমি কখনো লেখাকে সাহিত্য তথা সত্যের পথ থেকে বিচ্যুত হতে দেইনি।
- ১৯৭৪ সালে ৭ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তনের সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভের পর ভাষণে
- রাষ্ট্রের দায়িত্ব শুধু প্রশাসন চালানোই নয়, জাতিকে আত্মমর্যাদাসম্পন্ন করে তোলাও রাষ্ট্রের এক বৃহত্তর দায়িত্ব। যে রাষ্ট্র হাতপাতা আর চাটুকারিতাকে দেয় প্রশ্রয়, সে রাষ্ট্র কিছুতেই আত্মমর্যাদাসম্পন্ন নাগরিক সৃষ্টি করতে পারে না।
তাই মানব-কল্যাণ অর্থে আমি দয়া বা করুণার বশবর্তী হয়ে দান-খয়রাতকে মনে করি না। মনুষ্যত্বের অবমাননা যে ক্রিয়াকর্মের অবশ্যম্ভাবী পরিণতি তাকে কিছুতেই মানব-কল্যাণ নামে অভিহিত করা যায় না।- মানব কল্যাণ প্রবন্ধ, মানবতন্ত্র প্রবন্ধ গ্রন্থ।
- মেয়েদের শিক্ষা, অবরোধ প্রথার উচ্ছেদ ইত্যাদি সম্বন্ধে বাঙালি-মুসলমান সমাজে বহুদিন হইতে আলোচনা চলিতেছে। কিন্তু আমাদের সমাজনেতারা শুধু বাক্যের ব্যবসাদারিতেই সমস্ত শক্তি ব্যয় করিয়া নিজেরা ফতুর হইতেছেন এবং সমাজকেও বিড়ম্বিত করিতেছেন।…আজ এই ঢাকা সাহিত্য সমাজের সভায় নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা তাঁহাদের স্ব স্ব পরিবারের মহিলাদের এই সভায় যদি লইয়া আসিতেন, তাহা হইলে এই আন্দোলন আজ একদিনে অন্তত আরো দশ বৎসর আগাইয়া যাইতে পারিত এবং সঙ্গে সঙ্গে এই আন্দোলনের সঙ্গে তাঁহাদের যে নাড়ির যোগ রহিয়াছে, তাহাও প্রমাণিত হইয়া যাইত। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আজ আমরা তাহার উল্টা দেখিতেছি।
- শিখা পত্রিকার শেষ সংখ্যা
- সকল রাজনীতির উদ্দেশ্য হওয়া উচিত জনকল্যাণ।
আবুল ফজল সম্পর্কে উক্তি
সম্পাদনা- আবুল ফজল ট্র্যাজেডির লেখক নন। সত্যি তাই। তাঁর লেখা আশাবাদী, সাহিত্যিককে তিনি বলেছেন সমাজের বিবেক। এ বিশেষ অর্থেই সাহিত্যিক তিনি। তিনি আমাদের চলমানতারই অংশ, আমাদের আশাবাদের স্থপতিদের একজন। জীবন-পথের এ অক্লান্ত যাত্রীর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক শ্রদ্ধার যেমন, তেমনি কৃতজ্ঞতারও।
- আবুল ফজলের সম্পর্কে আনোয়ার পাশা লিখিত 'সাহিত্যশিল্পী আবুল ফজল'
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাউইকিপিডিয়ায় আবুল ফজল (সাহিত্যিক) সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।