আবু সাঈদ
কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত
আবু সাঈদ (২রা মার্চ ১৯৯৯ - ১৬ জুলাই ২০২৪) ছিলেন একজন বাংলাদেশী শিক্ষার্থী ও ২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সক্রিয়কর্মী। তিনি এই আন্দোলনের রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সমন্বয়ক ছিলেন। ১৬ জুলাই আন্দোলন চলাকালে একজন পুলিশ সদস্যের গুলিতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। কোটা আন্দোলনকারীরা তাকে আন্দোলনের প্রথম শহীদ বলে আখ্যায়িত করেছে।
উক্তি
সম্পাদনা- স্যার! এই মুহূর্তে আপনাকে ভীষণ দরকার স্যার! আপনার সমসাময়িক সময়ে যারা ছিল সবাই তো মরে গেছে, কিন্তু আপনি মরেও অমর। আপনার সমাধি, আমাদের প্রেরণা। আপনার চেতনায় আমরা উদ্ভাসিত। এই প্রজন্মে যারা আছেন, আপনারাও প্রকৃতির নিয়মে একসময় মারা যাবেন। কিন্তু যতদিন বেঁচে আছেন মেরুদণ্ড নিয়ে বাঁচুন। নায্যদাবিকে সমর্থন জানান, রাস্তায় নামুন, শিক্ষার্থীদের ঢাল হয়ে দাড়াঁন। প্রকৃত সম্মান এবং শ্রদ্ধা পাবেন। মৃত্যুর সাথে সাথেই কালের গর্ভে হারিয়ে যাবেন না। আজন্ম বেঁচে থাকবেন শামসুজ্জোহা হয়ে।' অন্তত একজন "শামসুজ্জোহা" হয়ে মরে যাওয়াটা অনেক বেশি আনন্দের, সম্মানের আর গর্বের,'
- ১৫ জুলাই ২০২৪ মঙ্গলবার ১২টা ৩৭ মিনিটে ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে নিহত মোহাম্মদ শামসুজ্জোহাকে স্মরণ করে ফেসবুকে পোস্ট বলেন[১]
আবু সাঈদ নিয়ে উক্তি
সম্পাদনা- আবু সাঈদ-মুগ্ধরা মরে না। তারা বেঁচে থাকে আমাদের অন্তরে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে…।’
- তানজিম হাসান সাকিব ৫ আগস্ট ২০২৪ আবু সাঈদ ও মুগ্ধকে স্মরণ করে এক ফেসবুক পোস্ট লিখেছেন
- প্রায় এক মাস হলো আমি নিজের দেশে নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খবরের চ্যানেলে তৃতীয় বিশ্বের কোনো খবরই তেমন একটা চলেনা। আর আমি খুব একটা ফোনের পোকা নই তাই এত খারাপ একটা খবর কানে আসতে দেরি হলো। এই তো কয়েক মাস আগে বাংলাদেশ গেলাম, খুব ইচ্ছে ছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়ার। চারুকলা যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল, জীবনের একটা স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে। প্রতিবার আসি, ব্যস্ততায় যাওয়া হয়না, মা‘ও খুব যেতে চাইতেন বাংলাদেশ, নিয়ে যাওয়া হয়নি। কিন্তু আজ একটা ভিডিও দেখলাম, গুলির ধোঁয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা আক্রান্ত। ছাত্র বয়স গেছে সেই কবে, তবে জাহাঙ্গীরনগর আর আমার যাদবপুর খুব কাছাকাছি। কাঠ গোলাপের গাছগুলোও কেমন এক রকম। এক রকম আকাশের মেঘগুলোও। কেবল আজ ওখানে বারুদের গন্ধ।’‘ময়দান ভারী হয়ে নামে কুয়াশায়, দিগন্তের দিকে মিলিয়ে যায় রুটমার্চ, তার মাঝখানে পথে পড়ে আছে ও কি কৃষ্ণচূড়া? নিচু হয়ে বসে হাতে তুলে নিই, তোমার ছিন্ন শির, তিমির।’ এমন এক আপ্যায়নপ্রিয় জাতি দেখিনি, খাবারের নিমন্ত্রণ যেন শেষ হতেই চায় না, অমন সুন্দর করে সারা রাস্তা জুড়ে ভাষার আল্পনা আর কোথায় দেখবো? নয়নজুড়ানো দেওয়াল লেখা? এ বোধহয় মুক্তিযুদ্ধের শপথ নেওয়া একটা জাতির পক্ষেই সম্ভব। আজ অস্থির লাগছে। আমিও তো সন্তানের জননী। আশা করবো বাংলাদেশ শান্ত হবে। অনেকটা দূরে আছি, এই প্রার্থনাটুকুই করতে পারি। অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো, সেই আমাদের আলো, আলো হোক, ভাল হোক সকলের।
- দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান: সম্মানিত দেশবাসী, আপনারা সকলেই অবগত আছেন, আমার ছেলে আবু সাঈদ গত ১৬/০৭/২০২৪ তারিখে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসরের গুলিতে নির্মমভাবে শহিদ হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, কতিপয় কিছু লোক শহিদ আবু সাঈদের ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। শহিদ আবু সাঈদের প্রতি ভালোবাসা থেকেই আপনারা এমন উদ্যোগ নিয়েছেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। আমরা আপনাদের ভালোবাসাকে সম্মান করি। কিন্তু আমার ছেলেটাকে কত কষ্ট দিয়ে হত্যা করা হয়েছে আপনারা দেখেছেন। আমি চাই না আমার ছেলে দুনিয়াতে যেমন কষ্ট পেয়েছে, আখিরাতেও তেমন কষ্ট পাক। আমরা মুসলমান। আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস করি। যেহেতু ইসলাম ধর্মে সকল মূর্তি বা ভাস্কর্য বা প্রতিকৃতি বানানো নিষিদ্ধ, সেহেতু আপনাদের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি- দেশের কোনো স্থানে আমার ছেলের মূর্তি বা ভাস্কর্য বা প্রতিকৃতি যেন না বানানো হয়। আমি আপনাদের অনুরোধ করছি, আমার ছেলের জন্য যদি কিছু করতেই চান, তাহলে জনকল্যাণমুখী এমন কিছু কাজ করুন যার সওয়ার আবু সাঈদ কবরে পাবে। সর্বোপরি, আমরা আপনাদের কাছে শহিদ আবু সাঈদের জন্য দোয়া চাই, আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করেন। আমাদের জন্যও দোয়া চাই। বিনীত, মকবুল, তারিখ: ০৮-০৮-২০২৪ইং (শহিদ আবু সাঈদের পিতা), মোঃ আবু হোসেন (বড় ভাই), রমজান, বকুল
- ইসলামের বিরোধী হিসেবে উল্লেখ করে আবু সাঈদের ভাস্কর্য না বানানোর জন্য দেশবাসীকে তার বাবা ও ভাইদের লিখিত বার্তা [৪] [৫] "ভাস্কর্য নির্মাণের পরিবর্তে জনকল্যাণমুখী কিছু করুন-আবু সাঈদের বাবা (Instead of building a sculpture, do something for public welfare - Abu Saeed's father)"। Daily Inqilab। ৯ আগস্ট ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৪।"আবু সাঈদের ভাস্কর্য না বানানোর অনুরোধ (Request not to make sculpture of Abu Saeed)"। Daily Kaler Kantho। ১০ আগস্ট ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৪।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাউইকিপিডিয়ায় আবু সাঈদ সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।