আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ
বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ ও যুদ্ধাপরাধী
আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ ছিলেন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ ও সাবেক মিলিশিয়া কমান্ডার যিনি মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সচিব ছিলেন; ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত ও সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি আধা-সামরিক বাহিনী আল বদরের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড ছিলেন যারা যুদ্ধ চলাকালে গণহত্যা, লুটপাট, ধর্ষণে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহাযোগিতা দান করেছিল। এই বাহিনীটিই ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের দায়ে অভিযুক্ত। তিনি একাধারে গণহত্যা, লুটপাট, ধর্ষণে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহাযোগিতা দান এবং ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্বদানের দায়ে অভিযুক্ত।
উক্তি
সম্পাদনা- যতদিন পর্যন্ত দুনিয়ার বুক থেকে হিন্দুস্তানের নাম মুছে দেয়া না যাবে ততদিন পর্যন্ত আমরা বিশ্রাম নেবো না। আগামীকাল থেকে হিন্দু লেখকদের বই অথবা হিন্দুদের দালালী করে লেখা পুস্তকাদি লাইব্রেরীতে কেউ স্থান দিতে পারবে না, বিক্রি বা প্রচার করতে পারবে না। যদি করেন তবে পাকিস্তানের অস্তিত্বে বিশ্বাসী স্বেচ্ছাসেবকরা তা জ্বালিয়ে ভস্ম করে দেবে।
- ১৯৭১ সালের ৭ নভেম্বর ‘ঐতিহাসিক বদর দিবস’ উদযাপন করতে গিয়ে ঢাকার বায়তুল মোকাররমে ইসলামী ছাত্র সংঘের এক সমাবেশে আলী আহসান মুজাহিদ তার চার দফা ঘোষণায়। (সূত্র: দৈনিক পাকিস্তান, ৮ নভেম্বর ১৯৭১) [১]
- বাংলাদেশে কোনো মুক্তিযুদ্ধ হয়নি। যা হয়েছিলো, তা গৃহযুদ্ধ।
- ২০০৭ সালের ২৫ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনের সিঁড়ি বারান্দায় দাঁড়িয়ে বলেছিলেন। [২]
- বাংলাদেশে কোনো যুদ্ধাপরাধী নেই। এটা তাঁদের কল্পনাপ্রসূত। নিজেদের বানোয়াট একটা উদ্ভট চিন্তা। বাংলাদেশে কোনো যুদ্ধাপরাধী নেই। তখন থেকেই নাই। এখনো নাই। বাংলাদেশে কোনো স্বাধীনতাবিরোধী নেই।
- ২০০৭ সালের ২৫ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিদলের সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে।[৩]
- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতৃবৃন্দ যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। কাজেই তাদের তথাকথিত যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করার কোনো নৈতিক ও আইনগত সুযোগ নেই।
- জামায়াতের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে। [৪]
মুহাম্মদ মুজাহিদ সম্পর্কে উক্তি
সম্পাদনা- আমার দাদা মরহুম মওলানা আব্দুল আলী ১৯৬২সাল থেকে ৬৪ সাল পর্যন্ত ফরিদপুরে জামায়াতে ইসলামী থেকে এমএলএ ছিলেন। তাঁর অনুপ্রেরণাতেই আমার বাবা এবং তাঁর কয়েক ভাই স্কুল জীবনেই ইসলামী ছাত্র সংঘের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন।
- মুহাম্মদ মুজাহিদের ছেলে আলী আহমেদ মাবরুর [৫]
- আমরা ভাই, বোন দুলাভাই ও মাসহ মোট ১২ জন দেখা করেছি। আমার আব্বা অনেক দৃঢ় ও শক্ত রয়েছেন তাকে বিমর্ষ দেখা যায় নি। তিনি বলেছেন, আমি ৭১ এ কোনো অপরাধ করিনি। শুধুমাত্র ইসলামি আন্দোলন করার কারণে এ রায় দেয়া হয়েছে। এটা সরকারের ৪ বছরের নীল নকশার অংশ। ‘আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা, মিথ্যা, মিথ্যা। এখনো রিভিউয়ের রায়ের কপি আমার কাছে আসেনি।’ রায়ের কপি আসার পরে তিনি আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন। আমরা আব্বার এ ইচ্ছার কথাটি আইনজীবীদের জানাবো। তাদের মাধ্যমে তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইবেন কি না তা জানাবেন।
- মুজাহিদের ছেলে আলী আহমেদ মাবরুর। ১৯ নভেম্বর ২০১৫ এ মোহাম্মদ মুজাহিদের সঙ্গে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তার পরিবারের সদস্যরা সাক্ষাৎ করার পর। [৬]
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাউইকিপিডিয়ায় আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।