এস এম সুলতান
বাংলাদেশী চিত্রশিল্পী
শেখ মোহাম্মদ সুলতান (১০ আগস্ট ১৯২৩ - ১০ অক্টোবর ১৯৯৪), একজন বাংলাদেশি প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী, যিনি এস এম সুলতান নামে সমধিক পরিচিত। ১৯৮২ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ম্যান অব অ্যাচিভমেন্ট এবং এশিয়া উইক পত্রিকা থেকে ম্যান অব এশিয়া পুরস্কার লাভ করেন। একই বছর তিনি একুশে পদক পান।
উক্তি
সম্পাদনা- শিল্পের কখনো পুরস্কার হয় না। শিল্পের ভার তো প্রকৃতি স্বীয় হাতে প্রদান করে।
- কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে 'ম্যান অব অ্যাচিভমেন্ট' সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে, উদ্ধৃত: দ্যা ডেইলি স্টার বাংলা
- এএকেক জায়গায় এভাবে পড়ে আছে সব। শ্রীনগরে গেলাম। সেখানকার কাজও নেই। শ্রীনগরে থাকাকালীন পাকিস্তান হয়ে গেলো। '৪৮-এ সেখান থেকে ফিরে এলাম। কোনো জিনিসই তো সেখান থেকে আনতে পারিনি। একটা কনভয় এনে বর্ডারে ছেড়ে দিয়ে গেলো। পাকিস্তান বর্ডারে। আমার সমস্ত কাজগুলোই সেখানে রয়ে গেলো। দেশে দেশে ঘুরেছি। সেখানে এঁকেছি। আর সেখানেই রেখে চলে এসেছি।
- সুলতানের হারিয়ে যাওয়া ছবি প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সুলতান বলেছিলেন সেই সময়ে তার জীবন নিয়ে, উদ্ধৃত: দ্যা ডেইলি স্টার বাংলা
- আমাদের দেশের মানুষ তো অনেক রুগ্ন, কৃষকায়। একেবারে কৃষক যে সেও খুব রোগা, তার গরু দুটো, বলদ দুটো -সেটাও রোগা...। [আমার ছবিতে তাদের বলিষ্ঠ হওয়াটা] মনের ব্যাপার। মন থেকে ওদের যেমনভাবে আমি ভালোবাসি যে আমাদের দেশের কৃষক সম্প্রদায়ইতো ব্রিটিশ সাম্রাজ্য গড়েছিলো। অর্থবিত্ত ওরাই তো যোগান দেয়। ...আর এই যত জমিদার রাজা মহারাজা আমাদের দেশের কম কেউ না। সবাই তো কৃষিনির্ভর একই জাতির ছেলে। আমার অতিকায় ছবিগুলোর কৃষকের অতিকায় অতিকায় দেহটা এই প্রশ্নই জাগায় যে, ওরা কৃশ কেন? ওরা রু্গ্ন কেন- যারা আমাদের অন্ন যোগায়। ফসল ফলায়।
- ১৯৯২ সালের সেপ্টেম্বরে নতুন ঢাকা ডাইজেস্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে, উদ্ধৃত: দৈনিক ইনকিলাব
- আমি সুখী। আমার কোনো অভাব নেই। সকল দিক দিয়েই আমি প্রশান্তির মধ্যে দিন কাটাই। আমার সব অভাবেরই পরিসমাপ্তি ঘটেছে।
- শেষ জীবনে ১৯৯২ সালের সেপ্টেম্বরে নতুন ঢাকা ডাইজেস্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে, উদ্ধৃত: দ্যা ডেইলি স্টার বাংলা
কথোপকথন
সম্পাদনা- ...আমি জীবনে ৮০ রকমের শাক খেয়েছি। এর ভেতর তিতা শাকই আছে ১০ রকমের। কিন্তু এখন আছে মাত্র ১৬ রকমের।
- আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুনকে বলেছিলেন সুলতান। উদ্ধৃত: দৈনিক সংবাদ
তার সম্পর্কে উক্তি
সম্পাদনা- তাঁর কাছে অবয়বধর্মিতাই প্রধান। তিনি আধুনিক, বিমূর্ত শিল্পের চর্চা করেননি; তাঁর আধুনিকতা ছিলো জীবনের শাশ্বত বোধ ও শিকড়ের প্রতিষ্ঠা করা। তিনি ফর্মের নিরীক্ষাকে গুরুত্ব দেননি, দিয়েছেন মানুষের ভেতরের শক্তির উত্থানকে, ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই এবং ঔপনিবেশিক সংগ্রামের নানা প্রকাশকে তিনি সময়ের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে উপস্থাপন করেছেন। এটাই তাঁর কাছে ছিলো 'আধুনিকতা', অর্থাৎ তিনি ইউরো-কেন্দ্রিক, নগর নির্ভর, যান্ত্রিকতা-আবদ্ধ আধুনিকতার পরিবর্তে অন্বেষণ করেছেন অনেকটা ইউরোপের রেনেসাঁর শিল্পীদের মতো মানবের কর্মবিশ্বকে।
- সুলতানের কাছে আধুনিকতার সংজ্ঞা কেমন ছিলো তা বলতে গিয়ে বাংলাপিডিয়ায় তার জীবনীর লেখক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, উদ্ধৃত: বাংলাপিডিয়া
- কোনো কোনো মানুষ জন্মায়, জন্মের সীমানা যাদের ধরে রাখতে পারে না। অথচ যাদের সবাইকে ক্ষণজন্মাও বলা যাবে না। এরকম অদ্ভুত প্রকৃতির শিশু অনেক জন্মগ্রহণ করে জগতে, জন্মের বন্ধন ছিন্ন করার জন্য যাদের রয়েছে এক স্বভাবিক আকুতি। শেখ মুহাম্মদ সুলতান সে সৌভাগ্যের বরে ভাগ্যবান, আবার সে দুর্ভাগ্যের অভিশাপে অভিশপ্ত।
- সুলতান সম্পর্কে আহমদ ছফার বয়ান, উদ্ধৃত: দ্যা ডেইলি স্টার বাংলা
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাউইকিমিডিয়া কমন্সে এস এম সুলতান সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে।
উইকিপিডিয়ায় এস এম সুলতান সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।