কৈলাসবাসিনী দেবী

বাঙালি লেখিকা

কৈলাসবাসিনী দেবী (১৮৩৭ - অজানা) ছিলেন একজন ব্রিটিশ ভারতীয় বাঙালি লেখিকা। তৎকালীন সময়ে প্রচলিত নানা কুসংস্কার এবং সামাজিক সমস্যাবলী নিয়ে লেখালেখি করেছেন তিনি।

  • এই বাল্য-বিবাহ যে অতি অনিষ্টের মুল তাহা কাহার না বিদিত আছে, এবং এই বাল্য-বিবাহই আমাদিগের হীনাবস্থার এক প্রধান কারণ হইয়াছে, এই বাল্য বিবাহই আমাদিগের দুর্ভাগ্যের সোপান স্বরূপ!
  • আমাদিগের দেশে যদি এই বাল্য-বিবাহ প্রচলিত না থাকিত, তাহা হইলে আমাদিগের এদেশ কত সুখজনক হইত তাহা বলা যায় না।
  • অতি প্রাচীনকালে এই ভারতবর্ষে চারি বর্ণ মাত্র ছিল, যথা ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র। পুরাণে কথিত আছে যে, এই সকল বর্ণ ব্রহ্মার অঙ্গ প্রত্যঙ্গ হইতে উৎপন্ন হয়, এবং তাহাদিগের কার্যকারণেরও বিশেষ নিয়মাদি ছিল, যথা ব্রাহ্মণগণ বেদ অধ্যয়ন, ক্ষত্রিয়গণ রাজ্য শাসন, ও বৈশ্যগণ ব্যবসায়, এবং শূদ্রগণ দাসত্ব কর্ম্মে নিযুক্ত থাকিত। কিন্তু এক্ষণকার মত আচার ব্যবহারাদির কোন কঠিন নিয়ম তৎকালে প্রচলিত হয় নাই। কেহ কাহার অন্ন গ্রহণ করিলে তাহার জাতি নাশ হইত না, কেহ অন্য জাতীয় কন্যা গ্রহণ করিলেও পতিত হইত না।
    • "জাতিভেদ", হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা, কলকাতা, ১৮৬৩।
  • আহা! এই বৈধব্য যন্ত্রণা যে কতদূর অসহনীয় তাহা বলিবার নহে। হায়! এই বিষম যন্ত্রণা সহ্য করিতে অসমর্থা হইয়া পূর্বতন কামিনীগণ সহমরণরূপ কঠোর ব্রতে ব্রতী হইয়া এই দুঃসহ যন্ত্রণা হইতে পরিত্রাণ পাইতেন। কিন্তু এক্ষণে সে প্রথা প্রচলিত নাই, সুতরাং আধুনিক বিধবাগণ সেই হৃদয় বিদারক বিষম যন্ত্রণা হইতে মুক্ত হইতে না পারিয়া দিবানিশি অতি প্রদীপ্ত অনলে দগ্ধ হইতে থাকেন।

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা