গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর

ভারতীয় চিত্র ও কার্টুনশিল্পী

গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৭ সেপ্টেম্বর, ১৮৬৭ - ১৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৮) ছিলেন একজন বঙ্গীয় ঘরানার চিত্র ও কার্টুন শিল্পী। শিল্পরসিক ও মঞ্চাভিনেতা হিসেবেও তাঁর সুনাম রয়েছে। আধুনিক শিল্পের নানাদিকে গগনেন্দ্রনাথকে পথিকৃৎ বলা যেতে পারে। অন্তর্দৃষ্টি ও প্রকাশভঙ্গির উজ্জ্বলতায় তাঁর চিত্রসম্ভার ভাস্বর। তাঁর চিত্রকলা প্যারিস, লন্ডন, হামবুর্গ, বার্লিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি শহরে ১৯১৪ থেকে ১৯২৭ সালের মধ্যে প্রদর্শিত হয়। এগুলি শিল্পের কঠোর সমালোচকদেরও প্রশংসা কুড়ায়। তিনি জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারের সদস্য ছিলেন।

গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে উক্তি

সম্পাদনা
  • ১৩৪৪ সালের শেষের দিকে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পরেই গগনেন্দ্রনাথ ইহলোক ত্যাগ করেন। শরৎচন্দ্রের মৃত্যুর পর দেশব্যাপী সাড়া পড়ে গিয়েছিল এবং ছোট বড় প্রত্যেক পত্রিকায় দেখা গিয়েছিল তাঁর সাহিত্যসাধনা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা। কিন্তু শিল্পী গগনেন্দ্রনাথের মৃত্যুর পর কোন সাময়িক পত্রিকাতেই তাঁর আর্ট নিয়ে বিশিষ্ট আলোচনা আমার দৃষ্টিগোচর হয় নি। এর কারণ কি বাঙালী লেখক ও পত্রিকাওয়ালাদের চিত্রকলা সম্বন্ধে অপরিসীম অজ্ঞতা? না চিত্রকলার প্রতি অবহেলা? অথচ সূক্ষ্মবিচারে প্রমাণিত হবে, সাহিত্যে ও চিত্রকলায় যথাক্রমে শরৎচন্দ্রের ও গগনেন্দ্রনাথের প্রতিভা হচ্ছে তুল্যমূল্য।
  • চেষ্টা করলে তাঁর হাতের কাজের ভিতর থেকে জাপানী, চৈনিক ও য়ুরোপীয় প্রভাবও আবিষ্কার করা যেতে পারে। কিন্তু তিনি যেখান থেকে যা-কিছু গ্রহণ করেছেন, দেশী ছাঁচে ঢেলে একেবারে নিজের ক’রে নিতে পেরেছেন।
  • কিন্তু পৃথিবীতে তাঁর জীবনের শেষ কয়েক বৎসর কেটে গিয়েছে দারুণ এক ট্রাজেডির ভিতর দিয়ে। দেহ লোপ পাবার আগেই মৃত্যু হয়েছিল শিল্পী গগনেন্দ্রনাথের। শেষ জীবনে তিনি পক্ষাঘাত রোগের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁকে চোখে দেখলে কিছু বোঝবার যো ছিল না, দেহ যেন স্বাস্থ্যসুন্দর— চলছেন, ফিরছেন, হাসছেন, গাড়ীতে চড়ে বেড়াতে যাচ্ছেন। কিন্তু কথা কইতেও পারতেন না, ছবি আঁকতেও পারতেন না।... শিল্পীর পক্ষে এ হচ্ছে চরম ট্রাজেডি। এই ট্রাজেডির দুঃখ ভোগ করতে করতেই গগনেন্দ্রনাথকে ত্যাগ করতে হয়েছিল মর্তধাম।
  • গগনেন্দ্রনাথ,
    রেখার রঙের তীর হতে তীরে
    ফিরেছিল তব মন,
    রূপের গভীরে হয়েছিল নিমগন।
    গেল চলি’ তব জীবনের তরী
    রেখার সীমার পার
    অরূপ ছবির রহস্য মাঝে
    অমল শুভ্রতার॥

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা