গোধূলি
গোধূলি হলো ভোর ও সূর্যোদয়ের মধ্যবর্তী সময় এবং সূর্যাস্ত ও সন্ধ্যার মধ্যবর্তী সময়। সকালে সূর্য দিকচক্রবালের উপরে ওঠার আগে এবং সন্ধ্যায় দিকচক্রবালের নিচে নেমে যাবার পর কিছুকাল বিক্ষিপ্ত সৌরকিরণে আকাশে আলো থাকে। এই সময়টাকে গোধূলি বলে। গোধূলি কতক্ষণ থাকবে তা তারিখ এবং অক্ষাংশের উপর নির্ভর করে।
উক্তি
সম্পাদনা- গোধূলি লগ্ন উপস্থিত, গোলাব বিবাহে যাত্রার উদ্যোগ করিতে লাগিলেন। উচ্চিঙ্গড়া নহবৎ বাজাইতে আরম্ভ করিল; মৌমাছি সানাইয়ের বায়না লইয়াছিল, কিন্তু রাতকাণা বলিয়া সঙ্গে যাইতে পারিল না।
- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, ফুলের বিবাহ, কমলাকান্তের দপ্তর, কমলাকান্ত - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দ (১২৯২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১১৫
- এবার তবে জ্বালো
আপন তারার আলো,
রঙিন ছায়ার এই গোধূলি হোক অবসান।- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নটীর পূজা, তৃতীয় অঙ্ক, নটীর পূজা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮৪
- পরদিন ভবানী বাঁড়ুয্যের সঙ্গে শুভ গোধূলি-লগ্নে তিন বোনেরই একসঙ্গে বিয়ে হয়ে গেল। হ্যাঁ, পাত্রও সুপুরুষ বটে।
- বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ইছামতী, ইছামতী - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রকাশক- মিত্র ও ঘোষ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৬ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২০
- শুভ মিলনে, শ্রীকূজনে,
পরশ হিমের সন্ধ্যা।
রাঙা চেলি, শেষ গোধূলি,
এক তোড়া রজনীগন্ধা।- বিলেশ্বর গড়াই, শুভ মিলনে, মেঘ ঢাকা আলো - বিলেশ্বর গড়াই, প্রথম সংস্করণ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫৯ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৮
- আমি কলম ছুঁড়িয়া ফেলিয়া, বৃহৎ খাতা বন্ধ করিয়া তৎক্ষণাৎ টম্টম্ চড়িয়া ছুটিলাম। দেখিলাম, টম্টম্ ঠিক গোধূলি মুহূর্ত্তে আপনিই সেই পাষাণপ্রাসাদের দ্বারের কাছে গিয়া থামিল। দ্রুতপদে সিঁড়িগুলি উত্তীর্ণ হইয়া ঘরের মধ্যে প্রবেশ করিলাম।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ক্ষুধিত পাষাণ, গল্প-দশক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশসাল- ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩০২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৮৪
- আজি যদিও বৈবাহিক দিন নহে—তথাচ বিবাহে কোন বিঘ্ন নাই। গোধূলিলগ্নে কন্যা সম্প্রদান করিব। তুমি অদ্য উপবাস করিয়া থাকিবা মাত্র।
- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, কপালকুণ্ডলা, প্রথম খণ্ড, নবম পরিচ্ছেদ, কপালকুণ্ডলা - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দ (১২৭৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৪৬
- আঁধারে কিছুই আর নাহি যায় দেখা,
আবরিয়া গিরি নদী কানন প্রান্তর,
গোধূলি এখন তা’র তমোময় পাখা;
বিস্তার করিল ধীরে ধরণী উপর॥- জ্ঞানেন্দ্রমোহিনী দত্ত, অস্তমিত সূর্য্য, ধূলারাশি - জ্ঞানেন্দ্রমোহিনী দত্ত, প্রকাশসাল- ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩০১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৮
- নাগ-কেশরের ঝরা কেশর ধূলার সাথে মিতা।
গোধূলি সে রক্ত আলোয় জ্বালে আপন চিতা।- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কেন আমায় পাগল করে, প্রবাহিণী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮৪
- কোথাও সূর্য্যের আলো নেই, সব সময়ই যেন গোধূলি। আর সবটা ঘিরে বিরাজ করচে এক অপার্থিব ধরণের নিস্তব্ধতা - বাতাস বইচে তারও শব্দ নেই, পাখীর কুজন নেই সে বনে - মানুষের গলার সুর নেই, কোনো জানোয়ারের ডাক নেই।
- বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সপ্তম পরিচ্ছেদ, চাঁদের পাহাড় - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রকাশক- এম. সি. সরকার এন্ড সন্স লিমিটেড, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৯০
- জীবন শেষ করে;
জীবন গোধূলি বেলায়;
ভালবাসা তার শূন্য হয়ে ওঠে—
সীমানায়। সবকিছু দুঃখতে পায়॥- বিলেশ্বর গড়াই, কবিত্ব নয়, মেঘ ঢাকা আলো - বিলেশ্বর গড়াই, প্রথম সংস্করণ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫৯ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৫০
- গোধূলি নিঃশব্দে আসি আপন অঞ্চলে ঢাকে যথা
কর্মক্লান্ত সংসারের যত ক্ষত, যত মলিনতা,- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্মরণ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৮ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৫
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাউইকিপিডিয়ায় গোধূলি সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।
উইকিমিডিয়া কমন্সে গোধূলি সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে।
উইকিঅভিধানে গোধূলি শব্দটি খুঁজুন।