ঘুড়ি

এক প্রকারের হাল্কা খেলনা, যা সুতোয় টান দিয়ে আকাশে ওড়ানো হয়

ঘুড়ি এক প্রকারের হাল্কা খেলনা, যা সুতোয় টান দিয়ে আকাশে ওড়ানো হয়। পাতলা কাগজের সাথে চিকন কঞ্চি লাগিয়ে সাধারণত ঘুড়ি তৈরি করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের উপাদান ও নকশা দেওয়া ঘুড়িও দেখতে পাওয়াা যায়। সারা বিশ্বজুড়েই ঘুড়ি ওড়ানো একটি মজার খেলা।

ঘুড়িকে ওড়াতে হলে যেমন সুতো ধরে টানা দরকার, এরোপ্লেনকে ঠিক তেমনি বাতাস ঠেলে কলের জোরে টানতে হয়।—সুকুমার রায়
  • ঘুড়ির সূতায় যতক্ষণ টান থাকে ততক্ষণ আপনা হতেই বাতাসের ধাক্কায় ঘুড়িকে উপর দিকে ঠেলে রাখে, কিন্তু বাতাস যখন থেমে আসে তখন ঘুড়ির সুতো ধরে ক্রমাগত টান না দিলে সে বাতাসের ধাক্কাও পায় না, কাজেই তার উপর ভর করে উঠতেও পারে না।
    • সুকুমার রায়, ঘুড়ি ও ফানুষ, সুকুমার রায় সমগ্র রচনাবলী, দ্বিতীয় খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী ও কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৮৩
  • কারো আবার ছিল ঘুড়ি ওড়াবার শখ। কানাই মল্লিকের শখ ছিল ঘুড়ি ওড়াবার। ঘুড়ির সঙ্গে পাঁচ টাকা দশ টাকার নোট পর পর গেঁথে দিয়ে ঘুড়ি ওড়াতেন, সুতোর প্যাঁচ খেলতেন।
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঘরোয়া, দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ, ঘরোয়া-অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক-বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশসাল- ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৭৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৭-৩৮
  • একটা জিনিসের যতীন খুব যত্ন করতো! সেটি হচ্ছে তার ঘুড়ি। যে ঘুড়িটি তার মনে লাগতো সেটিকে সে যত্নে জোড়াতাড়া দিয়ে যতদিন সম্ভব রাখতো। খেলার সময়টা সে প্রায় ঘুড়ি উড়িয়েই কাটিয়ে দিত। এই ঘুড়ির জন্য কতদিন তাকে তাড়া খেতে হতো। ঘুড়ি ছিঁড়ে গেলে সে রান্নাঘরে গিয়ে উৎপাত করতো তার আঠা চাই বলে। ঘুড়ির ল্যাজ লাগাতে কিংবা সুতো কাটতে কাঁচি দরকার হলে সে মায়ের সেলায়ের বাক্স ঘেঁটে ঘণ্ট করে রেখে দিত। ঘুড়ি ওড়াতে আরম্ভ করলে তার খাওয়াদাওয়া মনে থাকতো না।
    • সুকুমার রায়, যতীনের জুতো, নানা গল্প, সুকুমার সমগ্র রচনাবলী- প্রথম খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী, কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৯১
  • তিন দিন ধরে নাকি দুই দলে পােড়াদয়
    ঘুড়ি-কাটাকাটি নিয়ে মাথা-ফাটাফাটি হয়
    কেউ বলে ঘুড়ি নয়, মনে হয় সন্ধ
    পােলিটিকালের যেন পাওয়া যায় গন্ধ।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঝিনেদার জমিদার কালাচাঁদ রায়রা, ছড়া-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দ (১৩৯৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৭
  • তাইতে আমি দৌড়ে গিয়ে, ঢিল মেরে আর খুঁচিয়ে
    ঘুড়ির পেটে দিলাম করে ফুটো—
    আবার দেখ, বুক ফুলিয়ে, সটান মাথা উঁচিয়ে
    আনছে কিনে নতুন ঘুড়ি দুটো!
    • সুকুমার রায়, ভালো ছেলের নালিশ, বিবিধ কবিতা, সুকুমার সমগ্র রচনাবলী- প্রথম খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী, কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৬৭
  • পার্ব্বতী সেদিন সকাল সকাল বাড়ি ফিরিয়া আসিল। পরদিন সকালবেলাই দেবদাসের সহিত তাহার দেখা হইল। তার হাতে একটা লাটাই ছিল—তবে ঘুড়ি নাই, সেইটা কিনিতে হইবে। পার্ব্বতীকে কাছে পাইয়া কহিল, পারু, টাকা দে।
    • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, দেবদাস, তৃতীয় পরিচ্ছেদ, দেবদাস - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রথম সংস্করণ,প্রথম প্রকাশ- মাঘ-১৩৫৪, প্রকাশক- সরকার এ্যাণ্ড কোং, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৮-১৯
  • ঘুড়িরে দেই আসমানে তুইল্যা, লাটাই রাখি হাতে। যতই উড়ে যতই পড়ে, আমার হাতেই সব।
    • অদ্বৈত মল্লবর্মণ, রাঙা নাও, তিতাস একটি নদীর নাম- অদ্বৈত মল্লবর্মণ, দ্বিতীয় সংস্করণ, প্রকাশক- পুথিঘর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৩০
  • ঘুড়ির হাতে বাঁশের লাটাই,
    উড়তে থাকে ছেলে;
    বঁড়শি দিয়ে মানুষ গাঁথে,
    মাছেরা ছিপ ফেলে!
    • যোগীন্দ্রনাথ সরকার, মজার মুল্লুক, হাসি রাশি - যোগীন্দ্রনাথ সরকার, প্রকাশক- সিটি বুক সোসাইটি, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দ (১৩০৬ বঙ্গাব্দ)পৃষ্ঠা ৪৪
  • ঘুড়িকে ওড়াতে হলে যেমন সুতো ধরে টানা দরকার, এরোপ্লেনকে ঠিক তেমনি বাতাস ঠেলে কলের জোরে টানতে হয়। সুতরাং ঘুড়িতে যতরকম বদভ্যাস আর কেরামতি দেখা যায়, এরোপ্লেনেও প্রায় সেইরকম। ঘুড়ির মতো সেও বেখাপ্পা ‘গোঁৎ' খেতে চায়, হঠাৎ শূন্যের মাঝে কাত হয়ে পড়তে চায়, আর এলোমেলো বাতাসে ঘুরপাক খেয়ে উলটাতে চায়। এতরকম তাল সামলে তবে এরোপ্লেন চালানো শিখতে হয়। ঘুড়িতে যদি বেখাপ্পা জোরে হ্যাঁচকা টান দেও তবে সে যেমন ফস্ করে ফেঁসে যেতে পারে, এরোপ্লেনও তেমনি ডানা ভেঙে ধপ্ করে পড়ে যাওয়া কিছু বিচিত্র নয়।
    • সুকুমার রায়, ঘুড়ি ও ফানুষ, সুকুমার রায় সমগ্র রচনাবলী, দ্বিতীয় খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী ও কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৮৪
  • জীবনের কাঁটা তারে তুমি অন্তহীনের অপূর্ণতায়
    বেওয়ারিশ ঘুড়ি উড়ে যাও অনাবিল আকাশের শূণ্যতায়
    • "ধূসর সময়", গীতিকার: রুম্মান আহমেদ
  • বিকেলবেলায় সবাই যখন বাড়ি ফিরছে, তখন ব্যোমকেশ দেখলে, ডাক্তারের ছেলেটা দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে মস্ত একটা লাল রঙের ঘুড়ি কিনছে। দেখে ব্যোমকেশ তার বন্ধু পাঁচকড়িকে বলল, “দেখেছিস, পাঁচু, আমাদের দেখিয়ে দেখিয়ে আবার ঘুড়ি কেনা হচ্ছে! এ-সব কিন্তু নেহাত বাড়াবাড়ি। নাহয় দুটো ঘুড়িই কেটেছিস বাপু, তার জন্যে এত কি গিরিম্বাড়ি!”
    • সুকুমার রায়, ব্যোমকেশের মাঞ্জা, সুকুমার রায় সমগ্র রচনাবলী, দ্বিতীয় খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী ও কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৩৮-১৩৯

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা