চাণক্য

প্রাচীন ভারতীয় দার্শনিক ও অর্থনীতিবিদ

চাণক্য (খ্রিস্টপূর্ব ৩৭০-২৮৩ অব্দ) ছিলেন একজন প্রাচীন ভারতীয় গুরু (শিক্ষক), দার্শনিক ও রাজ-উপদেষ্টা। তিনি প্রাচীন তক্ষশীলা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি ও রাষ্ট্রনীতির অধ্যাপক ছিলেন। তিনি মৌর্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের উত্থানে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেন। তিনিই তরুণ চন্দ্রগুপ্তকে শিক্ষা দিয়েছিলেন। মৌর্য সাম্রাজ্য ছিল ভারতীয় উপমহাদেশের নথিভুক্ত ইতিহাসে প্রথম সর্বভারতীয় সাম্রাজ্য। চাণক্য চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য ও তাঁর পুত্র বিন্দুসারের রাজ-উপদেষ্টার কাজ করেছিলেন। চাণক্যকে কৌটিল্য বা বিষ্ণুগুপ্ত নামেও অভিহিত করা হয়। তিনি প্রাচীন ভারতের রাষ্ট্রবিজ্ঞান গ্রন্থ অর্থশাস্ত্র-এর রচয়িতা। তাঁকেই ভারতের প্রথম অর্থনীতিবিদ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মনে করা হয়। প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে তাঁর অর্থনীতি তত্ত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। চাণক্যকে "ভারতের মাকিয়াভেল্লি" বলা হয়। যদিও তিনি নিকোলো মাকিয়াভেল্লির ১৮০০ বছর আগের মানুষ ছিলেন। গুপ্ত রাজবংশের শাসনের শেষ দিকে তাঁর বইটি হারিয়ে যায়। এটি আবার আবিষ্কৃত হয় ১৯১৫ সালে।

শিল্পীর কল্পনায় চাণক্যের ছবি
  • বিদ্বত্ত্বঞ্চ নৃপত্বঞ্চ নৈব তুল্যং কদাচন।,
    স্বদেশে পূজ্যতে রাজা বিদ্বান্‌ সর্ব্বত্র পূজ্যতে॥১॥
    • বাংলা অনুবাদ: বিদ্যাবান আর রাজা না হয় সমান।
      স্বদেশে নৃপতি পূজ্য সর্ব্বত্র বিদ্বান॥১॥
      • চাণক্যশ্লোক- চাণক্য, অনুবাদক- অজ্ঞাত, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দ (১২৬১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১
  • দুর্জনের সংসর্গ ত্যাগ করে সজ্জনের সঙ্গ করবে। অহোরাত্র পুণ্য করবে, সর্বদা নশ্বরতার কথা মনে রাখবে।
  • গুণহীন মানুষ যদি উচ্চ বংশেও জন্মায় তাতে কিছু আসে যায় না। নীচকুলে জন্মেও যদি কেউ শাস্ত্রজ্ঞ হয়, তবে দেবতারাও তাঁকে সম্মান করেন।
  • গুরু শিষ্যকে যদি একটি অক্ষরও শিক্ষা দেন,তবে পৃথিবীতে এমন কোনও জিনিস নেই, যা দিয়ে সেই শিষ্য গুরুর ঋণ শোধ করতে পারে।
  • লালয়েৎ পঞ্চবর্ষাণি দশবর্ষাণি তাড়য়েৎ।
    প্রাপ্তেতু যোড়শে বর্ষে পুত্রং মিত্রবদাচরেৎ॥৯॥
    • অনুবাদ- পাঁচ বছর বয়স অবধি পুত্রদের লালন করবে, দশ বছর অবধি তাদের চালনা করবে, ষোল বছরে পড়লে তাদের সঙ্গে বন্ধুর মত আচরণ করবে।
      • চাণক্যশ্লোক- চাণক্য, অনুবাদক- অজ্ঞাত, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দ (১২৬১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩
  • কর্কশ কথা অগ্নিদাহের চেয়েও ভয়ঙ্কর।
  • আপদাং কথিতঃ পন্থা ইন্দ্রিয়াণামসংযমঃ।
    তজ্জয়ঃ সম্পদাং মার্গো যেনেষ্টং তেন গম্যতাং॥৭২॥
    • অনুবাদ- আপদের নিশ্চিত পথ হল ইন্দ্রিয়গুলির অসংযম, তাদের জয় করা হল সম্পদের পথ, যার যেটি ঈপ্সিত সে সেই পথেই যায়।
      • চাণক্যশ্লোক- চাণক্য, অনুবাদক- অজ্ঞাত, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দ (১২৬১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৫
  • রুটি চুরি করতে গিয়ে যদি কোনো ব্যক্তি ধরা পড়ে, সেই দেশের জনগণের লজ্জিত হওয়া উচিত।[উৎস প্রয়োজন]

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা