জ্ঞানদানন্দিনী দেবী

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভ্রাতৃবধূ ১৯ শতকের একজন সমাজ সংস্কারক যিনি বাংলার নারীদের ক্ষমতায়ন ও বিভ

জ্ঞানদানন্দিনী দেবী বা জ্ঞানদানন্দিনী ঠাকুর (২৬ জুলাই ১৮৫০ – ১ অক্টোবর ১৯৪১) ছিলেন ১৯ শতকের একজন সমাজ সংস্কারক যিনি বাংলার নারীদের ক্ষমতায়ন ও বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের নেতৃত্বের জন্য খ্যাতি অর্জন করেন। বাংলার নারীদের পোশাকে পরিবর্তন সাধন ও তাদেরকে আধুনিকারূপে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তিনি নিরলস কাজ করেছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর দ্বিতীয় অগ্রজ সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তিনিই ছিলেন প্রথম একজন যিনি অন্তঃপুর থেকে বেরিয়ে এসে অসামরিক ভোজসভায় যোগ দিয়ে অভিজাত ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের দৃষ্টিগোচরে আসেন। তাঁর প্রধান সাহিত্যকর্মগুলি হলো–ইংরাজনিন্দা ও দেশানুরাগ, টাকডুমাডুম, সাত ভাই চম্পা, স্মৃতিকথা প্রভৃতি।

বিলেতে প্রথম বরফ-পড়া দেখে আমি এত মোহিত হয়েছিলুম যে, পাতলা রেশমী শাড়ি পরেই বাইরে ছুটে গেলুম, আর যেমন পড়ছে কুড়তে লাগলুম। সবাই বারণ করেছিল যে এখন বাইরে যেও না। তার দরুণ খুব অসুখ করেছিল। উপর-হাতে ফুলো হয়ে ভিতরে ঘা হয়ে গেল। তখন Lord Lister আমাকে দেখেছিলেন—যিনি পরে antiseptic বের করেন।
—জ্ঞানদানন্দিনী দেবী
  • বিলেতে প্রথম বরফ-পড়া দেখে আমি এত মোহিত হয়েছিলুম যে, পাতলা রেশমী শাড়ি পরেই বাইরে ছুটে গেলুম, আর যেমন পড়ছে কুড়তে লাগলুম। সবাই বারণ করেছিল যে এখন বাইরে যেও না। তার দরুণ খুব অসুখ করেছিল। উপর-হাতে ফুলো হয়ে ভিতরে ঘা হয়ে গেল। তখন Lord Lister আমাকে দেখেছিলেন—যিনি পরে antiseptic বের করেন।
    • বিলাতের কথা, স্মৃতিকথা– জ্ঞানদানন্দিনী দেবী, প্রকাশক– রূপা পাবলিকেশন্‌স, প্রকাশস্থান– কলকাতা, প্রয়াগরাজ, মুম্বই, প্রকাশসাল– ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৩ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৯-৪০
  • আমার ছেলেবেলায় কতকগুলি জিনিসে খুব আমোদ হত। তার মধ্যে হরির লুট ছিল সবচেয়ে স্মরণীয় অনুষ্ঠান। নিজেদের বা অন্য কারো বাড়ী অসুখ-বিসুখ বিপদ-আপদ হলেই হরির লুট মানা হত। যেখানেই হোক না কেন, পাড়ার সকলেই তাতে যোগ দিত। দেবতা অধিষ্ঠিত কোন বট অশ্বখ বা বড় পুরনো গাছতলায়ই প্রায় হরির লুট দেওয়া হত। পাড়ার সকলের সঙ্গে আইমা আমাকেও কোলে করে নিয়ে সেই জায়গায় যেতেন। বাতাসা ছড়ানো আরম্ভ হলে তিনি আমাকে কুড়োবার জন্যে কোল থেকে নাবিয়ে দিতেন। মস্ত লম্বা হাত-পাওয়ালা লোক সব ছুটোছুটি করে হরির লুট কুড়োতেন, আমার ক্ষুদে ক্ষুদে হাত পা তার ভিতরে প্রায় কিছুই কুড়োতে পারত না।
    • ছেলেবেলার কথা, স্মৃতিকথা– জ্ঞানদানন্দিনী দেবী, প্রকাশক– রূপা পাবলিকেশন্‌স, প্রকাশস্থান– কলকাতা, প্রয়াগরাজ, মুম্বই, প্রকাশসাল– ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৩ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৫-১৬

জ্ঞানদানন্দিনী দেবীকে নিয়ে উক্তি

সম্পাদনা
  • স্বামীর উৎসাহ ও নিজের যত্ন-চেষ্টায় জ্ঞানদানন্দিনী নিজেকে সুশিক্ষিতা করিয়া তুলিয়াছিলেন। বাংলা সাহিত্যের প্রতি তাঁহার আন্তরিক অনুরাগ ছিল।
    • ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বঙ্গসাহিত্যে নারী– ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রকাশক– বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল– ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৩

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা