নদী

সাধারণত মিষ্টি জলের একটি প্রাকৃতিক জলধারা যা ঝরণাধারা

নদী সাধারণত মিষ্টি জলের একটি প্রাকৃতিক স্রোত যা ঝরনাধারা, বরফগলিত জলধারা অথবা প্রাকৃতিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সৃষ্ট হয়ে নানা পথ বেয়ে শেষে সাগর, মহাসাগর, হ্রদ বা অন্য কোন নদীতে গিয়ে মিলিত হয়। নদীকে তার গঠন অনুযায়ী শাখানদী, উপনদী, প্রধান নদী, নদ প্রভৃতি নামে অভিহিত করা যায়। আবার ভৌগোলিক অঞ্চলভেদে একটি নদীকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। প্রধান নদী সাধারণত পাহাড় হতে সৃষ্ট ঝরণা, হিমবাহ থেকে সৃষ্টি হয়, যেমন পদ্মা গঙ্গোত্রী হিমবাহ হতে উৎপন্ন হয়েছে। শাখানদী অন্য কোন নদী হতে উৎপন্ন হয়। যেমন বুড়িগঙ্গা ধলেশ্বরীর শাখা নদী। উপনদী সাধারণত অন্য নদীতে গিয়ে মেশে এবং প্রবাহ দান করে, যেমন আত্রাই নদী। বাংলা সাহিত্যে ও সঙ্গীত জগতে নদী গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।

নদীকে জিজ্ঞাসা করিতাম “তুমি কোথা হইতে আসিতেছ?” নদী উত্তর করিত “মহাদেবের জটা হইতে।” –জগদীশ চন্দ্র বসু
  • আমাদের ছোটো নদী
    চলে বাঁকে বাঁকে,
    বৈশাখ মাসে তার
    হাঁটুজল থাকে।
    পার হয়ে যায় গোরু,
    পার হয় গাড়ি-
    দুই ধার উঁচু তার,
    ঢালু তার পাড়ি।
    • ছােটো নদী- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, চিত্রবিচিত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দ (১৩৯৮ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৭
  • যখন অন্ধকার গাঢ়তর হইয়া আসিত এবং বাহিরের কোলাহল একে একে নীরব হইয়া যাইত তখন নদীর সেই কুলু কুলু ধ্বনির মধ্যে কত কথাই শুনিতে পাইতাম! কখন মনে হইত, এই যে অজস্র জলধারা প্রতিদিন চলিয়া যাইতেছে ইহা তো কখনও ফিরে না; তবে এই অনন্ত স্রোত কোথা হইতে আসিতেছে? ইহার কি শেষ নাই? নদীকে জিজ্ঞাসা করিতাম “তুমি কোথা হইতে আসিতেছ?” নদী উত্তর করিত “মহাদেবের জটা হইতে।” তখন ভগীরথের গঙ্গা আনয়ন বৃত্তান্ত স্মৃতিপথে উদিত হইত।
    • ভাগীরথীর উৎস-সন্ধানে- জগদীশ চন্দ্র বসু, অব্যক্ত, তৃতীয় সংস্করণ, লেখক- জগদীশ চন্দ্র বসু, প্রকাশক- বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯২১ খ্রিস্টাব্দ (১৩২৮ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭৭-৭৮
  • হে পর্বত, যত নদী করি নিরীক্ষণ,
    তোমাতেই করে তারা জনম গ্রহণ।
    ছোট বড় ঢেউ সব তাদের উপরে
    কল কল শব্দ করি সবে ক্রীড়া করে,
    নদী বেঁকে চুরে যায় দেশে দেশে,
    সাগরেতে পড়ে গিয়া সকলের শেষে।
    • নদী - সুকুমার রায়, সুকুমার সমগ্র রচনাবলী- প্রথম খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী, কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৪৯
  • নদীর একটা দার্শনিক রূপ আছে। নদী বহিয়া চলে। কালও বহিয়া চলে। কালের বহার শেষ নাই। নদীরও বহার শেষ নাই।
    • তিতাস একটি নদীর নাম- অদ্বৈত মল্লবর্মণ, দ্বিতীয় সংস্করণ, প্রকাশক- পুথিঘর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৭

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা