প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়
প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায় (১৮৫৫-১৯৪৭) ছিলেন একজন বাঙালি লেখক এবং কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের পরিদর্শক। তিনি কলকাতা পুলিশের লালবাজার থানার গোয়েন্দা বিভাগের দারোগা ছিলেন। তিনি দীর্ঘ ৩৩ বছর ধরে পুলিশ বিভাগে কর্মরত ছিলেন। প্রিয়নাথকে বাংলা গোয়েন্দা সাহিত্যের একজন পথিকৃৎ হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। দারোগার দপ্তর মাসিক গোয়েন্দা পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। তিনি ১৮৮৯ সাল থেকেই ‘দারোগার দফতর’ নামের ধারাবাহিক রচনা লিখতে শুরু করেন। ‘দারোগার দফতর’ নাম দিয়ে প্রিয়নাথের প্রায় ২০৬টি গ্রন্থ রচনার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ইংরেজ ডাকাত, মতিয়া বিবি, খুন না চুরি?, অদ্ভুত ফকির, ঘর-পোড়া লোক, মরণে মুক্তি প্রভৃতি। তিনি কয়েকটি উপন্যাসও লিখেছেন। এছাড়া তিনি বেশ কয়েকটি ডিটেকটিভ গল্পের রচয়িতা। তার রচনায় উঠে এসেছে তখনকার নানা বাস্তব সমাজচিত্র।
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/5/54/%E0%A6%87%E0%A6%82%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%9C_%E0%A6%A1%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A4_-_%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%A5_%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%96%E0%A7%8B%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A7%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC.pdf/page1-280px-%E0%A6%87%E0%A6%82%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%9C_%E0%A6%A1%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A4_-_%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%A5_%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%96%E0%A7%8B%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A7%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC.pdf.jpg)
—প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়
উক্তি
সম্পাদনা- ক্ষুধিতের অন্নই অভাব, তৃষ্ণার্ত্তের পানীয়ই অভাব, আর রোগীর স্বাস্থ্যপ্রদ ঔষধই অভাব। যখনই এই অভাব উপস্থিত হয়, তখনই অভাবমোচনের ইচ্ছাও জাগরিত হয়; প্রকৃতি এবিষয়ে শিক্ষয়িত্রী।
- সাধন, ধর্ম্মপ্রবন্ধ - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়, প্রকাশক- সংস্কৃত প্রেস ডিপোজিটরি, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দ (১২৯৯ বঙ্গাব্দ)),পৃষ্ঠা ৫৭
- ক্রমে জাহাজ আসিয়া উপস্থিত হইল। জেটিতে জাহাজ ভিড়াইয়া নঙ্গর করা হইলে, আমরা সর্ব্বাগ্রে গিয়া জাহাজে উঠিলাম। জাহাজে যে সকল আরোহী ছিল, তাহারাও ক্রমে জাহাজ হইতে অবতরণ করিতে আরম্ভ করিল।
- ছেলে-ভুল, দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ, ছেলে-ভুল - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়, প্রকাশসাল- ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দ (১৩০৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭
- একটা কাচের আলমারির মধ্যে নানারকমের ভাল ভাল পুতুল সাজান রহিয়াছে। প্রায় আধ ঘণ্টাকাল পুতুলগুলি অতি মনোযোগের সহিত দেখিলাম, যতবার দেখি, আশ যেন আর মেটে না। যে পুতুলের দিকে চাই, চক্ষু যেন আর নাড়িতে ইচ্ছা করে না। শুনিলাম, পুতুলগুলি কাঁচা মাটীর। কাঁচা মাটীর উপর তেমন সুন্দর রং আর কখনও দেখি নাই। নফরের কাজ দেখিয়া তাহার সুখ্যাতি না করিয়া থাকিতে পারিলাম না। বলিলাম, “এই সকল পুতুল কি তুমি নিজে গড়িয়াছ?”
- চূর্ণ প্রতিমা, তৃতীয় পরিচ্ছেদ, চূর্ণ প্রতিমা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়, প্রকাশক- দারোগার দপ্তর কার্য্যালয়, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৩ বঙ্গাব্দ),পৃষ্ঠা ১৮
- এইটী ইংরাজ চোরের মহৎ গুণ। ইংরাজ চোর যে পর্য্যন্ত মালসমেত ধরা না পড়ে, সে পর্য্যন্ত কাহার সাধ্য—উহার মুখ হইতে কোন কথা বাহির করে। কিন্তু যদি দেখিল, মালসমেত ধরা পড়িয়াছি—বাঁচিবার কোন উপায় নাই, তখন সে কোন কথা গোপন করিবে না—সকল কথা স্পষ্ট করিয়া বলিয়া দিবে।
- ইংরেজ ডাকাত, ইংরেজ ডাকাত - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়, দারোগার দপ্তর, ৩৩ম সংখ্যা, প্রকাশসাল- ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩০১ বঙ্গাব্দ),পৃষ্ঠা ২১-২২
- আমি যে হানিফ খাঁকে ধরাইয়া দিয়াছিলাম, সে মরিয়া ভূত হইয়াছে। ভূত হইয়াও সে আপন কার্য্য পরিত্যাগ করে নাই। সে এখনও ডাকাইত দলের দলপতি। সে দলপতির কার্য্য করে বটে, কিন্তু নিজে কিছুই গ্রহণ করে না। তাহার অংশে যাহা হয়, সে তাহা উড়াইয়া লইয়া গিয়া এক এক গ্রামের এক এক স্থানে ফেলিয়া দেয়, যে পায় সেই লয়, উহাতেই তাহার আমোদ।
- ভূতের বিচার, ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ, ভূতের বিচার - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়, প্রকাশসাল- ১৯১০ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৭ বঙ্গাব্দ),পৃষ্ঠা ১৮
- চিঠির কাগজখানি সাধারণ বাজারে কাগজ নহে, সাধারণ লােকে সে কাগজ ব্যবহার করা দূরে থাকুক, কখনও দেখিয়াছে কি না বলা যায় না। কাগজখানি আলােকের দিকে ধরিলাম; দেখিলাম, জলের অক্ষরে কি একটা কোম্পানীর নাম লেখা রহিয়াছে। সম্ভবত সেই কোম্পানিই ঐ প্রকারের চিঠির কাগজ প্রস্তুত করিয়া বিক্রয় করিয়া থাকে। কাগজখানি গোলাপের গন্ধে ভর্ভর করিতেছে। বুঝিলাম, পত্র-লেখক সামান্য ব্যক্তি ন’ন।
- ছবি, প্রথম পরিচ্ছেদ, ছবি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়, প্রকাশক- দারোগার দপ্তর কার্য্যালয়, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৩ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৪-৫
- যে স্থানে তারামণি বাস করিত, তাহার অনতিদূরে একটা বাগান আছে, ঐ বাগানের ভিতর ঘাঁটবাধান একটা পুষ্করিণীও আছে। ঐ পুষ্করিণীর জল অনেকটা ভাল বলিয়া নিকটবর্ত্তী দরিদ্র লোকজন ঐ পুষ্করিণীর জলই প্রায় ব্যবহার করিয়া থাকে।
- মতিয়া বিবি, চতুর্থ পরিচ্ছেদ, মতিয়া বিবি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়, প্রকাশক- দারোগার দপ্তর কার্য্যালয়, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩১১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৩
- বুসমেন্জাতীয় অধিবাসিগণ কৃষিকার্য্য জানিত না, শীকারলব্ধ জীব জন্তুগণের মাংসে অপনাপন উদর পূর্ত্তি করিত। তাহাদিগের অন্ত্রের মধ্যে ছিল,—তীর ও ধনুঃ। তীরের অগ্রফলকে এক প্রকার বিষ থাকিত।
- বুয়রদিগের উৎপত্তি, বুয়র ইতিহাস - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়, প্রকাশক- দারোগার দপ্তর কার্য্যালয়, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯০০ খ্রিস্টাব্দ (১৩০৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৬