মনোমোহন বসু

বাঙালি নাট্যকার এবং লেখক

মনোমোহন বসু (১৭ জুলাই ১৮৩১-৪ ফেব্রুয়ারি ১৯১২) ছিলেন একজন বিশিষ্ট নাট্যকার এবং এবং মঞ্চাধ্যক্ষ। তিনি অধুনা পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অন্তর্গত ছোট জাগুলিয়ার বিখ্যাত বসু পরিবারের সন্তান। তৎকালীন যুগে যাত্রার মান খুবই নীচুস্তরে নেমে গিয়েছিল। মনোমোহন যাত্রাকে উন্নত করে মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা বাড়াবার চেষ্টা করেন। তার রচিত নাটকগুলি বাইরে থেকে আধুনিক নাটকের মতো ছিল কিন্তু ভিতর থেকে ছিল এদেশের যাত্রাধর্মী। এই নাটকগুলি যাত্রার মতো খোলামঞ্চে এবং আধুনিক থিয়েটারের মত স্টেজ বেঁধেও অভিনয় করা যেত। তিনি বেশ কয়েকটি রঙ্গালয়ে পেশাদারিভাবে মঞ্চাধ্যক্ষের কাজ করেন এবং বাংলা থিয়েটারের যুগবদলের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে তিনি যাত্রাকে উন্নত এবং সংগীতের অংশগুলিকে মার্জিত করেন।

  • যেখানে পতিতা নিয়ে অভিনয় হয়, সেখানে আমি নেই।
  • আমি তো নারী নিয়ে অভিনয়ের বিরোধী নই, আমার আপত্তি পতিতাদের জন্যে। কিন্তু হিন্দুদের কুলকন্যারা যে নটী হয়ে রঙ্গমঞ্চে আরোহণ করবেন, এমন কথা স্বপ্নেও আমি ভাবতে পারি না। সেই জন্যেই আমি নারীর পার্টে পুরুষদেরই দেখতে চাই। জানি তার ফলে অভিনয় স্বাভাবিক হয় না, কিন্তু স্বাভাবিকতা রক্ষা করতে গিয়ে সমাজের সর্বনাশ করতে যাব কেন? দেখছেন তো, পতিতাদের সঙ্গে ওঠা-বসা করে থিয়েটারের অভিনেতাদের কতটা চারিত্রিক অবনতি হয়েছে? নট বলতে এখন বোঝায় সমাজ-ছাড়া বাপে-খেদানো, মায়ে-তাড়ানো, মাতাল, মূর্খ লোককে।
    • মনোমোহন বসু নারীদের দিয়ে অভিনয় করানোর বিরোধিতা কেন করেন এমন প্রশ্নের উত্তর। উল্লেখ হয়েছে: প্রসাদদাস রায়, "মনোমোহন বসু ", যাঁদের দেখেছি, কলকাতা, ১৯৫১।

মনোমোহন বসু সম্পর্কিত উক্তি

সম্পাদনা
  • এখনকার বুড়োরা হয়তো মনোমোহন বসুকে চিনতে পারবেন, কিন্তু এখনকার ছেলেরা বোধ হয় তাঁর পরিচয় জানেন না। এজন্যে ছেলেদের দোষ দিই না, প্রধানতঃ এজন্যে দায়ী হচ্ছেন সাহিত্যিকরা, কারণ অতীতের স্মরণীয় নামগুলিকে তাঁরা লোকের চোখের সামনে জাগিয়ে রাখবার চেষ্টা করেন না।
  • মনোমোহন বসুকে এর মধ্যেই আমরা ভুলতে বসেছি, অথচ, আমাদের নাট্য-সাহিত্যে তিনি অপ্রধান ভূমিকাগ্রহণ করেননি। যাঁরা বাংলা নাট্য-সাহিত্যের ভিত্তিস্থাপন করেছিলেন, সেই রামনারায়ণ তর্করত্ন, কালীপ্রসন্ন সিংহ, মাইকেল মধুসূদনদীনবন্ধু মিত্রের সঙ্গে তিনিও ছিলেন একজন প্রধান কর্মী।

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা