মহীনের ঘোড়াগুলি

প্রথম বাংলা রক ব্যান্ড

মহীনের ঘোড়াগুলি ১৯৭৬ সালে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত বাংলা স্বাধীন রক ব্যান্ড। এটি ভারত উপমহাদেশের প্রথম রক ব্যান্ড। গৌতম চট্টোপাধ্যায়, বিশ্বনাথ চট্টোপাধ্যায়, প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, রঞ্জন ঘোষাল, এব্রাহাম মজুমদার, তাপস দাস ও তপেশ বন্দ্যোপাধ্যায়, এই সাত জন সঙ্গীতশিল্পী সহকারে নব্বই দশকের পর তারা ভারতীয় রক যুগের কিংবদন্তি এবং সর্বাধিক প্রভাবশালী আভা-গার্দ সঙ্গীতদল হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। সত্তরের দশকে দলটি গড়ে উঠলেও প্রাথমিকভাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়। আশির দশকের প্রারম্ভে ব্যান্ডটি ভেঙে যাবার পর সদস্যরা বিভিন্ন কর্মজীবনে মনোনিবেশ দেয়।

১৯৭৯ সালে রবীন্দ্রসদনে কনসার্টের সময়ে মহীনের ঘোড়াগুলি; বাম থেকে: রাজা ব্যানার্জী, প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, তাপস দাস, প্রণব সেনগুপ্ত, গৌতম চট্টোপাধ্যায় এবং রঞ্জন ঘোষাল। এব্রাহাম মজুমদার এবং বিশ্বনাথ চট্টোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন, যদিও এখানে অদৃশ্যমান।
   

ভেসে আসে কলকাতা কুয়াশা-তুলিতে আঁকা
শহরতলির ভোর মনেপড়ে
কাঠচাঁপা আর কৃষ্ণ-চূড়ার শৈশব শুধু খেলা করে
স্মৃতির ভেতর ট্রামের ধ্বনি বিবাগী সুর গড়ে
এই প্রবাসে ক্যালেন্ডারের পাতাই শুধু ঝরে
কলকাতা – ও – কলকাতা

"ভেসে আসে কলকাতা", গীতিকার: রঞ্জন ঘোষাল, তাপস দাস
   

দিন চলে যায় সন্ধ্যা বেলায়
বসে একা উদাস হাওয়ায়
যতো ভাবি সুর বন পথ দূর
সুবাসী বায়ে, মহুয়া মুকুল

"মেরুন সন্ধ্যালোক", গীতিকার: গৌতম চট্টোপাধ্যায়, রঞ্জন ঘোষাল
   

ভালোবাসি জ্যোৎস্নায় কাশবনে ছুটতে
ছায়া ঘেরা মেঠোপথে ভালোবাসি হাঁটতে
দূর পাহাড়ের গায়ে গোধূলীর আলো মেখে
কাছে ডাকে ধান খেত সবুজ দিগন্তে

তবুও কিছুই যেন ভালো যে লাগেনা কেন
উদাসী পথের মাঝে মন পড়ে থাকে যেন
কোথায় রয়েছে ভাবি লুকিয়ে বিষাদ তবুও

"হায়, ভালোবাসি", গীতিকার: রঞ্জন ঘোষাল, তাপস দাস, তপেশ বন্দ্যোপাধ্যায়
   

আধো-আলো-আঁধারের কোন এক নগরের
মেস ঘরে থাকি চারজন
ট্রাম লরি টেম্পোরা শব্দের আলপনা
দিয়ে ঘিরে রাখে সারাখ’ন
রাত কিবা কিবা দিন ঘেমো ঘরে আলোহীন
ভৌতিক কেরাণীরা রই
আবছায়ে নড়িচড়ি থুতনিতে রুখু দাড়ি
এই কোলাহলে নিরজন

"অজানা উড়ন্ত বস্তু বা অ-উ-ব", গীতিকার: রঞ্জন ঘোষাল
   

শুধু শেষ নয় শুরুতেই
বড়শির আঁকশিতে বিঁধে, আকাশের দিকে পিঠ হাজার চড়ক ঘুরছে
নিচে শত হাততালি মেরে
উল্লাসে ফেটে গেছ কতোবার
ঝুলন্ত মানুষের ব্যথাছবি রাঙা চোখে চেয়ে
তা মানো কি?

"সুধীজন শোনো, গীতিকার: রঞ্জন ঘোষাল
   

এই সুরে বহুদূরে চলে যাবো, চলে যাবো-
পথ দেখাবো পথ দেখাবো
আসলে এসো না এই নতুনপুরে
আর ভাবনা নেই
আপনাতেই সুর ঝরাবো সুর ঝরাবো
সব ঝরাবো সব ঝরাবো
সবকিছু যা আছে পুরোনোতেই।

"এই সুরে বহুদূরে", গীতিকার: তাপস দাস
   

সে বুঝি শুয়ে আছে চৈত্রের
হলুদ বিকেল
যেখানে চূর্ণ ফুল ঝরে তার আঁচলে
যেখানে চূর্ণফুল ঝরে তার
কাফনে

"চৈত্রের কাফন", গীতিকার: রঞ্জন ঘোষাল

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা