মুকুন্দ দাস
মুকুন্দ দাস (ফেব্রুয়ারি ২২, ১৮৭৮ - মে ১৮, ১৯৩৪) বাঙালি কবি যাকে চারণ কবি বলেও অভিহিত করা হয়। মুকুন্দ দাস স্বদেশী ও অসহযোগ আন্দোলনের সময় বহু স্বদেশী বিপ্লবাত্মক গান ও নাটক রচনা করে খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি ছিলেন স্বদেশী যাত্রার প্রবর্তক। প্রকৃতপক্ষে তিনি একজন চারণকবি ছিলেন।
উক্তি
সম্পাদনা- “অগ্নিময়ী মায়ের ছেলে আগুন নিয়েই খেলবে তারা।
মরেনি বীর সেনাদল আবার আগুন জ্বালবে তারা।।” — মুকুন্দ দাস, অগ্নিময়ী মায়ের ছেলে আগুন নিয়েই খেলবে তারা [১]
- “বেসুরেই বাজবে তাদের রনোন্মাদের যন্ত্র গুলি,
গগন ছেয়ে উঠবে তাদের, নৃত্য পায়ের মুক্ত ধুলি।” — মুকুন্দ দাস,অগ্নিময়ী মায়ের ছেলে আগুন নিয়েই খেলবে তারা [২]
- “ত্যাগ মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে, লভিয়া নূতন প্রাণ,
সমান সূত্রে হইবে মিলিত, হিন্দু মুসলমান।” — মুকুন্দ দাস [৩]
- “আবার যখন গান ধরেছি, গাব গো সেই গান
বুকটা যাতে ফুলে উঠে, শিরায় যাতে অগ্নি ছোটে
তন্দ্রা যাতে যায় গো ছুটে, মাতায় যাতে প্রাণ” — মুকুন্দ দাস, আবার যখন গান ধরেছি, গাব গো সেই গান [৪]
- “গান গেয়েছি অনেক বটে, তাকে কি কয় গান!
আকাশ পৃথ্বী হলো না তায় টলটলায়মান
ভূমিকম্প জলোচ্ছ্বাস উঠলো না তার ঘূর্ণি বাতাস
কোটি প্রাণের সমুদ্রে আজ ডাকলো নাকো বান” — মুকুন্দ দাস, আবার যখন গান ধরেছি, গাব গো সেই গান [৫]
- “এখন দেখছি কালে স্রোতে,
বইছে তার বিপরীত ধারা,
ত্যাগীর ছেলে ভোগীর পায়ে,
ঢালছে কত অশ্রুধারা;” — মুকুন্দ দাস, আমরা কেন ভোগে ভুলিব [৬]
- “আমরা নেহাৎ গরীব
আমরা নেহাৎ ছোট
তবু আছি ত্রিশ কোটি
জেগে ওঠ” — মুকুন্দ দাস, আমরা নেহাৎ গরীব [৭]
- “হিন্দু পার্শী জৈন সাঁই
মুচি ডোম মেথর কসাই
আমরা সকলেই এক মায়ের ছেলে
এই মহামন্ত্র ভুলব না” — মুকুন্দ দাস, আমরা বিচার করে চলবো না [৮]
- “ছাড়তে হবে জাতির বিচার
নইলে ভারত উঠবে না” — মুকুন্দ দাস, আমরা বিচার করে চলবো না [৯]
- “আমার আদেশ মান্য করেই
চলছে সবেই ভাই
তাইতো আমার সেই "আমিটা"
জাগিয়ে তোলা চাই” — মুকুন্দ দাস, আমার ভেতর আসল আমি [১০]
- “আমি দশ হাজার প্রাণ যদি পেতাম
তবে ফিরিঙ্গী বণিকের গৌরব রবি
অতল জলে ডুবিয়ে দিতাম” — মুকুন্দ দাস,আমি দশ হাজার প্রাণ যদি পেতাম [১১]
- “পাব কি আর এমন ছেলে দেশের লাগি কাঁদে প্রাণ
ভব সাগরে বইছে হাওয়া কাল সাগরে ডাকছে বান” — মুকুন্দ দাস,আমি গাইব কি আর শুনবে কে রে [১২]
- “আয় রে বাঙালি আয় সেজে আয়,
আয় লেগে যাই দেশের কাজে।
দেখাই জগতে ভেতো বাঙালি,
দাঁড়াইতে জানে বীর সমাজে।।” — মুকুন্দ দাস,আয় রে বাঙ্গালী আয় সেজে আয় [১৩]
- “কোটি কন্ঠে আজ জয় মা বলিয়া,
দ্বেষ হিংসা আদি চরণে দলিয়া;
দাঁড়া রে বাঙালি আপনা ভুলিয়া,
সাজাই বাংলা নূতন সাজে।।” — মুকুন্দ দাস, আয় রে বাঙ্গালী আয় সেজে আয় [১৪]
- “এডিটার খোঁজ রাখে কজনার?
চল্লিশ কোটি মায়ের ছেলে নাম ছাপে সে দুজনার” — মুকুন্দ দাস, এডিটার খোঁজ রাখে ক’জনার [১৫]
- “বুঝলে না দীন ভারতবাসী শক্তি মহাশক্তির পায়।।” — মুকুন্দ দাস, এ ভবে পাগল চেনা বিষম দায় [১৬]
- “এমন দিন কি আসবে মোদের,
আমরা আবার মানুষ হবো।
ভুলে যাব দলাদলি,
প্রাণে প্রাণ মিলিয়ে দিব।।” — মুকুন্দ দাস, এমন দিন কি আসবে মোদের [১৭]
- “এসেছ নেংটা যাইবে নেংটা
মাঝখানে কেন গণ্ডগোল।
কেউ বলে বাবা, কেউ বলে দাদা,
কেউ বলে ভাই, আবোল তাবোল।।” — মুকুন্দ দাস, এসেছ নেংটা যাইবে নেংটা [১৮]
- “এসেছে ভারতে নব জাগরণ,
পেয়েছে ভারত নূতন প্রাণ
মাতৃমন্ত্রে লয়েছে দীক্ষা
জগতে শিক্ষা করিবে দান।।” — মুকুন্দ দাস, এসেছে ভারতে নব জাগরণ [১৯]
- “করমেরই যুগ এসেছে, সবাই কাজে লেগে গেছে,
মোরাই শুধু রব কি শয়ান।
চিরদিন রব নীচে, চলব সবার পিছে পিছে,
সহিব শত অপমান।।” — মুকুন্দ দাস, করমেরই যুগ এসেছে, সবাই কাজে লেগে গেছে [২০]
- “সারিতে দেশের কাজ
পর রে বীরের সাজ
করে লয়ে করম-নিশান।
জীবন ব্রত সাধ অবিরত
এ নহে বিরামের স্থান।” — মুকুন্দ দাস, কাঁপায়ে মেদিনী কর জয়ধ্বনি [২১]
- “কেতাবধারী হোম রা চোম রাই
নেতা বলে মানতে হবে।
মনুষ্যত্ব থাক বা না থাক
তার হুকুমেই চলতে হবে।।” — মুকুন্দ দাস, কেতাবধারী হোম্ রা চোম্ রাই [২২]
- “কে যেন ঐ চাঁদের কোণে
উঁকি মারে কথা কয়;
ধরতে গেলে দেয় না ধরা,
চাঁদের মাঝেই লুকিয়ে রয়।” — মুকুন্দ দাস, কে যেন ঐ চাঁদের কোণে [২৩]
- “সব দিয়ে যা ছিল শেষে,
সে আমি টাও আজ গেল ভেসে,
রইল না আর আমার কিছু,
রূপ-সাগরে হইনু লয়।।” — মুকুন্দ দাস, কে যেন ঐ চাঁদের কোণে [২৪]
- “হয়েছে দুনিয়ার কি দোষ,
সবে খোঁজে পরের দোষ।
দেখে আমার পাচ্ছে হাসি,
বাবুদের কি জ্ঞানের জোর।।” — মুকুন্দ দাস, ঘোর কলিকাল যা দেখি সব উল্টা তোর [২৫]
- “ছল চাতুরী কপটতা মেকী মাল আর চলবে কদিন?
হাড়ি মুচির চোখ খুলেছে
দেশের কি আর আছে সেদিন।।” — মুকুন্দ দাস, ছল চাতুরী কপটতা মেকী মাল আর চলবে ক'দিন? [২৬]
- “ছেড়ে দাও কাঁচের চুড়ি বঙ্গনারী
কভু হাতে আর পরো না।
জাগো জননী ও ভগিনী
মোহের ঘুমে আর থেকো না।।” — মুকুন্দ দাস, ছেড়ে দেও কাঁচের চুড়ী বঙ্গনারী [২৭]