রাজ্জাক

বাংলাদেশী অভিনেতা

আব্দুর রাজ্জাক (২৩শে জানুয়ারি ১৯৪২ - ২১শে আগস্ট ২০১৭) ছিলেন একজন জনপ্রিয় বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেতা যিনি নায়করাজ রাজ্জাক নামে সুপরিচিত। বাংলা চলচ্চিত্র পত্রিকা চিত্রালীর সম্পাদক আহমদ জামান চৌধুরী তাকে নায়করাজ উপাধি দিয়েছিলেন। নিজের জন্মস্থান কলকাতায় সপ্তম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত অবস্থায় মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে তার অভিনয় জীবন শুরু করেন এবং ১৯৬৬ সালে ১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন চলচ্চিত্রে একটি ছোট চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশী চলচ্চিত্রে তার অভিষেক ঘটে। তিনি জহির রায়হানের বেহুলা চলচ্চিত্রে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করেন। ষাটের দশকের শেষের দিকে এবং সত্তরের দশকেও তাকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের প্রধান অভিনেতা হিসেবে বিবেচনা করা হত। অভিনয় জীবনে তিনি বেহুলা, আগুন নিয়ে খেলা, এতটুকু আশা, নীল আকাশের নিচে, জীবন থেকে নেয়া, ওরা ১১ জন, অবুঝ মন, রংবাজ, আলোর মিছিল, অশিক্ষিত, ছুটির ঘণ্টা এবং বড় ভালো লোক ছিলসহ মোট ৩০০টি বাংলা ও উর্দু ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি সব মিলিয়ে ১৬টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন। তার মালিকানার রাজলক্ষী প্রোডাকশন থেকে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। তার পরিচালিত চলচ্চিত্রগুলো হলো মৌচোর, বদনাম, পাগলা রাজা, ঢাকা ৮৬, চাঁপা ডাঙ্গার বউ, জিনের বাদশা , রাজামিস্ত্রি, প্রফেসর, বাবা কেন চাকর, সন্তান যখন শত্রু, আমি বাঁচতে চাই, মন দিতে চাই ইত্যাদি।

  • আরো কতো কিছু করার বাকি রয়ে গেছে। যার জন্য জীবনটা উৎসর্গ করলাম আমার সেই প্রিয় চলচ্চিত্রের অবস্থা এখন ভালো নয়। কষ্ট পাই। অনেক কষ্ট।
  • আমার জীবনে অপূর্ণতা বলতে কিছু নেই। আজকের দিনে মনে হচ্ছে যুদ্ধ করে যে চলচ্চিত্রকে দাঁড় করিয়েছিলাম সেটা এখন আর নেই। নেই বলা ঠিক হবে না। তবে ধ্বংসের মুখে চলে গেছে। এই দুঃখটা রয়ে যাচ্ছে।
  • কঠোর অধ্যবসায় থাকতে হবে। ত্যাগ করতে শিখতে হবে। তাহলে একটা কিছু হতে পারে।
  • আমি আমার জীবনের অতীত ভুলি না। আমি এই শহরে রিফিউজি হয়ে এসেছি। স্ট্রাগল করেছি। না খেয়ে থেকেছি। যার জন্য পয়সার প্রতি আমার লোভ কোনদিন আসেনি। ওটা আসেনি বলেই আজকে আমি এতদূর শান্তিতে এসেছি।
  • সত্যিকারের তারকা থেকে যাচ্ছে আড়ালে। একটা নতুন ছেলে-মেয়ে কাজ করতে আসলেই তোমরা লিখছ নতুন রাজ্জাক, নতুন আলমগীর, নতুন কবরী, নতুন শাবানা। এটা ঠিক না। তাকে সময় দাও। সে নিজেকে প্রমাণ করুক। দর্শক নিচ্ছে না। কিন্তু তোমরা বলছ সে রাজ্জাক, অমুক, তমুক।
  • সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে আমি বদলেছি। যুদ্ধের পর দেখলাম দেশের যুবকদের মধ্যে একটা পরিবর্তন। তারা অনেক ফাস্ট হয়ে গেছে। ওরা যুদ্ধ দেখেছে। রক্ত দেখেছে। এখন অভাব দেখছে। কাজ নেই। হাতে পয়সা নেই। সমাজ তাদের জন্য কিছু করতে পারছে না। একটা অস্থিরতা সবখানে। মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের মধ্যে বিবাদে জড়াচ্ছে। আমি তখন সিদ্ধান্ত নিলাম নিজের ইমেজটাকে ভেঙে নতুন করে দাঁড় করাবো।

রাজ্জাক সম্পর্কে উক্তি

সম্পাদনা
  • চলচ্চিত্রের এই দুঃসময়ে সত্যি আজ আপনার কথা খুব মনে পড়ছে। আপনি বেঁচে থাকলে আপনাকে সঙ্গে নিয়ে হয়তো চলচ্চিত্রকে আরও অনেক দূরে নিয়ে যেতে পারতাম এবং সব সমস্যার খুব দ্রুত সমাধান করে ফেলতাম। হে পরম শ্রদ্ধেয় ওপারে অনেক ভালো থাকেন, শান্তিতে থাকেন আমাদের নায়করাজ রাজ্জাক।
  • নায়ক রাজ্জাক আমার অভিভাবক। তিনি না থাকলে চলচ্চিত্র শিল্পী হিসেবে পরিপূর্ণতা পেতাম না। নিজেকে মূল্যায়ন করতে পারতাম না। মাঝেমধ্যে একটু স্বার্থপরতা নিয়ে বলি রাজ্জাক আমার ভাই। যদিও রাজ্জাক ভাই সবার, সমগ্র দেশের। বাংলা চলচ্চিত্রের অভিভাবক রাজ্জাক। বাংলা চলচ্চিত্রের আশীর্বাদ তিনি।

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা