শব্দ

এক ধরনের শক্তি

পদার্থবিজ্ঞানে শব্দ হলো একধরনের কম্পন যা গ্যাস, তরল বা কঠিন মাধ্যমের সাহায্যে শব্দ তরঙ্গ হিসাবে সঞ্চালিত হয়। মানব শারীরতত্ত্ব এবং মনোবিজ্ঞানে শব্দ হলো একধরনের তরঙ্গের শ্রবণ এবং মস্তিষ্ক কর্তৃক এগুলো উপলব্ধি করা।

  • কতকগুলি শব্দ এরূপ আছে যে তাহাদের উত্তর বিভক্তি থাকে না। সুতরাং যেমন শব্দ তেমনই থাকে কোন পরিবর্ত্তন হয় না। এই সকল শব্দকে অব্যয় বলে। যথা প্রাতঃ, উচ্চৈঃ, ধিক্। প্র, পরা, অপ, সম্, নি, অব, অনু, নির্, দুর্, বি, অধি, সু, উৎ, পরি, প্রতি, অভি, অতি, অপি, উপ, আ। যদি ক্রিয়ার সহিত যোগ হয় তাহা হইলে প্র অবধি আ পর্য্যন্ত কুড়িটী অব্যয়কে উপসর্গ বলা যায়।
  • ‘হরবোলা’ ছাড়াও একদল লোক আছে যারা নানারকম শব্দের নকল করে। তারা কিন্তু মুখে আওয়াজ করে না, কোনো জন্তু কিম্বা পাখির শব্দও নকল করে না, তাদের কাজই হচ্ছে অভিনয়ের সময় আড়াল থেকে নানারকম শব্দের নকল করে অভিনয়টাকে সত্যি ঘটনার মতো দেখাতে চেষ্টা করা। ঝড়-বৃষ্টির শব্দ, বাজ-পড়ার শব্দ, রেলের শব্দ, জাহাজের শব্দ, ঘোড়ার শব্দ, পায়ের শব্দ, বন্দুকের আওয়াজ, বাঘ সিংহের ডাক-এই-সবের আশ্চর্যরকম নকল এরা করতে পারে। অনেক মাথা খাটিয়ে সামান্য যন্ত্রের সাহায্যে এরা কতরকমের শব্দ নকল করে।
  • অভিধানে ‘পরিভাষা’র অর্থ-সংক্ষেপার্থ শব্দ। অর্থাৎ যে শব্দের দ্বারা সংক্ষেপে কোনও বিষয় সুনির্দিষ্ট ভাবে ব্যক্ত করা যায় তা পরিভাষা। যে শব্দের অনেক অর্থ, সে শব্দও যদি প্রসঙ্গবিশেষে নির্দিষ্ট অর্থে প্রযুক্ত হয় তবে তা পরিভাষাস্থানীয়। সাধারণত ‘পরিভাষা' বললে এমন শব্দ বা শব্দাবলী বােঝায় যার অর্থ পণ্ডিতগণের সম্মতিতে স্থিরীকৃত হয়েছে এবং যা দর্শনবিজ্ঞানাদির আলােচনায় প্রয়ােগ করলে অর্থবােধে সংশয় ঘটে না।
    • রাজশেখর বসু - লঘুগুরু প্রবন্ধাবলী, বাংলা পরিভাষা, ১৯৩৯ (পৃ. ৯০-১০৯)।
  • ভারতবর্ষের অন্যান্য গৌড়ীয় ভাষায় শব্দগুলি অনেক স্থলে বিনা কারণেই স্ত্রী ও পুরুষ শ্রেণীতে বিভক্ত হইয়াছে। হিন্দিতে ভোঁ (ভ্রু), মৃত্যু, আগ (অগ্নি), ধূপ শব্দগুলি স্ত্রীলিঙ্গ। সােনা, রুপা, হীরা, প্রেম, লােভ পুংলিঙ্গ। বাংলা শব্দে এরূপ অকারণ, কাল্পনিক, বা উচ্চারণমূলক স্ত্রী পুরুষ ভেদ নাই। এমন-কি, অনেক সময় স্বাভাবিক স্ত্রীবাচক শব্দও স্ত্রীলিঙ্গসূচক কোনাে প্রত্যয় গ্রহণ করে না।
  • রাত্রির অল্পান্ধকার উপক্রমকেই বলে প্রদোষ, রাত্রির অন্ধকার পরিশেষের বিশেষ কোনাে শব্দ আমার জানা নেই। সেই কারণে প্রয়ােজন উপস্থিত হলে ওই শব্দটাকে উভয় অর্থেই ব্যবহার করবার ইচ্ছা হয়। এমনি করেই প্রয়ােজনের তাগিদে শব্দের অর্থবিস্তৃতি ভাষায় ঘটে থাকে।
  • শব্দের একত্ব ও বহুত্বকে সংখ্যা বা বচন কহে। বঙ্গভাষায় দুইটী মাত্র বচন আছে। একবচন ও বহুবচন। একবচনের পদে একটি বস্তু বুঝায়, বহুবচনের পদে এক ভিন্ন অনেক বস্তু বুঝাইয়া থাকে। একবচনে শব্দের রূপান্তর হয় না। বহুবচনে শব্দের উত্তর রা, এরা দিগ, গণ ও গুলা ইত্যাদি শব্দ ব্যবহৃত হইয়া থাকে।

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা