শামসুর রাহমান

বাংলাদেশি কবি ও সাংবাদিক

শামসুর রাহমান (২৩ অক্টোবর ১৯২৯ - ১৭ আগস্ট ২০০৬) বাংলাদেশ ও আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি। সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক, স্বাধীনতা পদক, জীবনানন্দ পুরস্কার সহ বহু সম্মাননা লাভ করেছেন।

পহেলা ফাল্গুনের উৎসবে শামসুর রাহমান (১৪১২)

উক্তি সম্পাদনা

   

স্বাধীনতা নামক শব্দটি
ভরাট গলায় দীপ্ত উচ্চারণ করে বারবার
তৃপ্তি পেতে চাই। শহরের আনাচে কানাচে
প্রতিটি রাস্তায়
অলিতে-গলিতে,
রঙিন সাইনবোর্ড, প্রত্যেক বাড়িতে
স্বাধীনতা নামক শব্দটি আমি লিখে দিতে চাই
বিশাল অক্ষরে।

"বন্দী শিবির থেকে" (১৯৭২)
   

তুমি বারবার বলো ঘুরে ফিরে সেই একই কথা
তাহলে প্রমাণ দাও, সত্যি ভালোবাসো কি না।

"প্রমাণ", প্রেমের কবিতা (১৯৮১)
   

তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা,
তোমাকে পাওয়ার জন্যে আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায়?
আর কতবার দেখতে হবে খাণ্ডবদাহন?

"তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা"
   

ফ্রেমের ভেতর থেকে আমার সন্তান
চেয়ে থাকে নিষ্পলক,তার চোখে নেই রাগ কিংবা অভিমান।

"একটি ফটোগ্রাফ"
   

স্বাধীনতা তুমি
রবিঠাকুরের অজর কবিতা, অবিনাশী গান।
স্বাধীনতা তুমি
কাজী নজরুল ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলানো
মহান পুরুষ, সৃষ্টিসুখের উল্লাসে কাঁপা-
স্বাধীনতা তুমি
শহীদ মিনারে অমর একুশে ফেব্রুয়ারির উজ্জ্বল সভা

"স্বাধীনতা তুমি"
   

আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখন্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা।

"আসাদের শার্ট"
   

তোমার শরীর দেখি ছিঁড়ে খায় শকুন শেয়াল,
তোমার উদাস বুকে পদধ্বনি শোকমিছিলের।
কখনো তোমার খাঁ খাঁ বিবস্ত্র শরীর ঢেকে দেয়
পতাকা ব্যানারে, ওরা লজ্জাতুর তোমার সন্তান।
মারিতে মরোনিত তুমি, ম্যাক্সিম গোর্কির জননীর
মতো তুমি সংগ্রাম ও শান্তি করো হৃদয়ে ধারণ।

"হে বঙ্গ"
   

জীবন মানেই
তালে তালে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে চলা, নিশান ওড়ানো
জীবন মানেই
অন্যায়ের প্রতিবাদ শূন্যে মুঠি তোলা।

   

সারারাত নূর হোসেনের চোখ এক ফোঁটা ঘুমও
শিশিরের মত
জমেনি, বরং তার শিরায় শিরায়
জ্বলছে আতশবাজি সারারাত, কী এক ভীষণ
নূর হোসেনের বুক নয় বাংলাদেশের হৃদয়।

"বুক তাঁর বাংলাদেশের হৃদয়"
   

তোমাকে দেখার সঙ্গে সঙ্গে, কী আশ্চর্য,
আমার মনে পড়লো ডেনমার্কের যুবরাজের উক্তি-
‘এই করোটির ভেতরে ছিলো জবান
এবং একদা সে গান গাইতে পারতো’।

"দেখা হলোনা", (কাজী নজরুল ইসলামকে দেখার পর শামসুর রাহমানের উক্তি)

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা