শাহাদুজ্জামান

বাংলাদেশী কথাসাহিত্যিক ও চিকিৎসা নৃবিজ্ঞানী

শাহাদুজ্জামান (জন্ম: ১৯৬০) বাংলাদেশী লেখক। গল্প-উপন্যাস তার কাজের প্রধান ক্ষেত্র হলেও তিনি গবেষণা, অনুবাদ, ভ্রমণ এবং প্রবন্ধও লিখেছেন। সাহিত্যে অবদানের জন্য পেয়েছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার।

  • আমি কোনো কবি হতে চাইনি, কোনো ছোট গল্পকার হতে চাইনি, প্রাবন্ধিক হতে চাইনি, ঔপন্যাসিকও হতে চাইনি।
  • সাহিত্য হলো অক্ষরের ভেতর দিয়ে একটি দ্বিতীয় জীবন তৈরি করা।
  • গল্পদাদুরা যে গল্প বলে, সে গল্প আমি বলতে চাই না, আমি বলতে চেয়েছি যে, আমার গল্পটা শেষ করার পরে পাঠকের মনে কোনো গল্প থাকবে না, বরং একটি ভাবনা থাকবে।
  • আমি কোনো উপন্যাস লিখতে আসিনি, আমি কোনো জীবনবৃত্তান্ত লিখতে আসিনি, চোখ দিয়ে কেবল দেখতে চেয়েছি আমার প্রিয় কবি জীবনানন্দকে, কেবল মনের গহীনে আঁকতে চেয়েছি তার প্রতিচ্ছবি, অক্ষরের মধ্য দিয়ে পেতে চেয়েছি তার সান্নিধ্য এবং কলমে সৃষ্ট করতে চেয়েছি কেবল একটা সাহিত্যকর্ম।
    • একজন কমলালেবু প্রসঙ্গে
  • শহীদুল জহিরকে আমি বাংলা সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ লেখক মনে করি।
  • একটি ডকুমেন্টারি দেখছিলাম টুইন টাওয়ারে আটকে পড়া মানুষগুলোর মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে করা শেষ মোবাইল কল এবং টেক্স মেসেজগুলো নিয়ে। মানুষ ধোঁয়া আর আগুনের হলকার মধ্যে দাঁড়িয়ে হাতে যে কয়েক মুহূর্ত পেয়েছে, তাতে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে তার প্রিয়জনের সঙ্গে। মা, স্ত্রী, স্বামী, ভাইকে একটা কি দুটো বাক্য বলতে পেরেছে তারা। আমি লক্ষ করছিলাম, প্রায় সবাই একটি বাক্য অবধারিতভাবে বলছে, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি।’ মনে পড়ছিল, সম্প্রতি আমাদের দেশের বিডিআরের ঘটনার সময়েও এমনি কয়েকজন অফিসার মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে প্রিয়জনকে ফোন করেছিলেন। তাঁদের আত্মীয়দের সাক্ষাত্কারে লক্ষ করেছি অনেকের ক্ষেত্রেই শেষ বাক্যটি ছিল, ‘আমাকে মাফ করে দিও।’ আমি ভিন্ন দুই দেশে মানুষের অন্তিম বয়ানের এই সাংস্কৃতিক ভিন্নতার ভাবনায় তাড়িত হই। কেন এক দেশের মানুষ মৃত্যুর আগে প্রিয়জনকে তার ভালোবাসাটি নিশ্চিত করবার ব্যাপারে এতটা উদগ্রীব আর আরেকটি দেশে মানুষ তার প্রিয়জনের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী?
    • চিরকুট (২০১১)

কয়েকটি বিহ্বল গল্প' (১৯৯৬)

সম্পাদনা
  • আর কিছু নয় শুধু অগণন ভ্রান্তিবিলাস মানুষকে ঘিরে থাকে অনুক্ষণ। মানুষ অবিরাম দিনকে রাত হয়ে যেতে দেখেও বলে দিন কখনো রাত হয় না। মানুষ ভুলে যায় বীজে বৃক্ষের ছায়াও প্রচ্ছন্ন থাকে। টগরের গন্ধভরা চিরায়ত হাওয়া মানুষ পুরে রাখে টয়োটার টায়ারে, টায়ারে। বুঝি তাই মানুষ কাছে গেলে প্রকৃত সারস উড়ে যায়। মানুষ শঙ্খমালার অভিমান মনে রাখে না। টাপুর টুপুর বৃষ্টিতে মানুষ যে তিন কন্যার বিয়ে দেয়, জানে না কি হলো তাদের শেষে।
    • কয়েকটি বিহ্বল গল্প (১৯৯৬)
  • একটি বৃক্ষই অরণ্য হয়ে উঠতে পারে যদি তা হয় যথেষ্ট সবুজ আর প্রহেলিকাময়।
    • কয়েকটি বিহ্বল গল্প (১৯৯৬)
  • অলৌকিক অংক কষে মানুষই মানুষকে বলে দেয় সফল অথবা ব্যর্থ।
    • কয়েকটি বিহ্বল গল্প (১৯৯৬)

মামলার সাক্ষী ময়না পাখী (২০১৯)

সম্পাদনা
  • আমি আবারও স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই যে মৃত্যু সম্পর্কে আমার অবস্থান খুব পরিষ্কার, আমি এর ঘোর বিরোধী।
    • মামলার সাক্ষী ময়না পাখী (২০১৯)
  • এভাবে তাকিয়ে দেখতে দেখতে তার বেশ ভালো বোঝা হয়ে গেছে যে কখনো কখনো বিজয়ী হওয়ার চেয়ে বিজিত হওয়া ভালো।
    • মামলার সাক্ষী ময়না পাখী (২০১৯)
  • মানুষ ভীষণ নাজুক। কতটা নাজুক মানুষ তা নিজেই জানে না।
    • মামলার সাক্ষী ময়না পাখী (২০১৯)


বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা