শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়
ভারতীয় রাজনীতিবিদ
শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় (৬ জুলাই ১৯০১-২৩ জুন ১৯৫৩) ছিলেন একজন ভারতীয় পন্ডিত ও হিন্দু জাতীয়তাবাদী নেতা। তিনি প্রথম হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল 'ভারতীয় জনসংঘ' গঠন করেন।তিনি ছিলেন হিন্দু মহাসভার সভাপতি এবং জহরলাল নেহেরুর ক্যাবিনেটের অন্যতম মন্ত্রী তিনি।
উক্তি
সম্পাদনা- ভারত ভাগ না হলেও বাংলাকে অবশ্যই ভাগ করতে হবে।
- শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি।১৯৪৭ সালের মে মাসে, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি লর্ড মাউন্টব্যাটেনকে উদ্দেশ্য করে একটি চিঠিতে এটি লিখেন।[১]
- না আর টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। যা শুনলাম, সাহায্য করার মতো ব্যাপারটা নয়। আগে জানতে পারলে তাও করতাম না।
- কাজী নজরুল ইসলাম অসুস্থ হলে তাঁকে সাহায্য করার জন্য গঠিত "নজরুল সাহায্য কমিটির" সভাপতি ছিলেন শ্যামাপ্রসাদ।এই কমিটি যখন নজরুলকে টাকা সরবরাহ করা বন্ধ করে দেয় তখন শ্যামাপ্রসাদকে টাকা বন্ধ করে দেওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করা হলে তিনি এই মন্তব্যটি করেন। [২]
- বঙ্গদেশকে রক্ষা করিবার জন্য একটি গৃহবাহিনী গঠনের অধিকার আমাদের দেওয়া হউক।
- সুভাষচন্দ্রের নেতৃত্বে যখন আজাদ হিন্দ ফৌজ লড়ছিল, তখন শ্যামাপ্রসাদ ইংরেজ শাসকদের সহায়তা করার জন্য আগ বাড়িয়ে এটি বলেছিলেন। (রমেশচন্দ্র মজুমদার লিখিত ‘বাংলাদেশের ইতিহাস’ গ্রন্থে উল্লিখিত শ্যামাপ্রসাদের পত্র থেকে উদ্ধৃত)[৩]
- সুভাষচন্দ্র আমার সাথে দেখা করেন এবং বলেন, হিন্দু মহাসভা যদি বাংলায় রাজনৈতিক সংগঠন হিসবে মাথাচাড়া দিতে চায়, তবে সেটা জন্মের আগেই গুঁড়িয়ে দিতে বাধ্য হব, যদি বলপ্রয়োগ করতে হয়, তা হলে সেটাই করব।
- শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি তার ডায়েরিতে এটি লিখছেন। [৪]
- সুভাষ আর লীগের হাত-মেলানোকে আমরা খোলাখুলি হিন্দুবিরোধী দেশবিরোধী বলে নিন্দা করেছিলাম।
- শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি [৫]
- আমি মনে করি না, গত তিন মাসের মধ্যে যেসব অর্থহীন উচ্ছৃঙ্খলতা ও নাশকতামূলক কাজ করা হয়েছে, তার দ্বারা আমাদের দেশের স্বাধীনতা লাভের সহায়তা হবে।
- "ভারত ছাড়ো আন্দোলনকে" শ্যামাপ্রসাদ উচ্ছৃঙ্খলতা আখ্যা দিয়ে এটি বলেছিলেন। [৬]
- যদি পাকিস্তানে থাকতে চাও, তবে ব্যাগপত্তর গুছিয়ে এক্ষুনি ভারত ছাড়ো।
- ১৯৪১ সালে ফেব্রুয়ারিতে আয়োজিত হিন্দু মহাসভার এক সমাবেশে মুসলমান সম্প্রদায়ের উদ্দেশে এ কথা বলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। [৭]
তার সম্পর্কে উক্তি
সম্পাদনা- শ্যামাপ্রসাদ কোনও দিন স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেননি। তিনি ব্রিটিশ গভর্নরকে পরামর্শ দেন, কীভাবে ভারত ছাড়ো আন্দোলনকে দাবিয়ে রাখা যায়। নেতাজির মেজদা শরৎচন্দ্র বসু বাংলার ঐক্য বজায় রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। শ্যামাপ্রসাদ বাংলাকে ভাগ করার দাবি করেছিলেন। পূর্ব বাংলার হিন্দুদের দুর্দশার জন্য শ্যামাপ্রসাদ সরাসরিভাবে দায়ী।
- অধ্যাপক সুগত বসু [৮]
- মি: শ্যামা প্রসাদ মুখার্জীর ন্যায় সাম্প্রদায়িকতাবাদিগণ এই পরিকল্পনা (সোহরাওয়ার্দী-বসু চুক্তি) বাস্তবায়িত করিতে দেয় নাই।
- শেখ মুজিবুর রহমান । নেতাকে যেমন দেখিয়াছি। দৈনিক ইত্তেফাক (বিশেষ সোহরাওয়ার্দী সংখ্যা) — ০৫ ডিসেম্বর, ১৯৬৯ইং । পৃ: ১৪৩-১৪৬
- শ্যামাপ্রসাদ ছিলেন অত্যন্ত চতুর ও সুযোগসন্ধানী। রাজনৈতিক আদর্শ নয়, ছলে বলে কৌশলে ক্ষমতার অধিকারী হওয়া ছিল তাঁর প্রধান উদ্দেশ্য।
- মার্কিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মাইনর উইনার। [৯]
- শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী ১৯৪৭ সালে ঠিক যেভাবে হিন্দু মুসলমান ভেদাভেদ ঘটিয়ে বাংলা ভাগ করেছিলেন, এখনও আবার সেই একই উদ্দেশ্য নিয়ে একটি দিন বেছে নিয়ে উদযাপন করা হচ্ছে।
- অধ্যাপক সুগত বসু [১০]
- শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ছিলেন এক জন সত্যিকারের জাতীয়তাবাদী। তিনি বার বার বলেছিলেন, পাকিস্তান সম্পর্কে আমাদের আচরণ অত্যন্ত দুর্বল। যা সমগ্র ভারতবাসী ২৬/১১ হামলার পরে বুঝতে পারে। ... শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় কখনও চাননি এক দেশ, দুই নিশান, দুই প্রধান, দুই বিধান। ৩৭০ ধারা অবলুপ্তির সঙ্গে সঙ্গে শ্যামাপ্রসাদের সেই স্বপ্ন পূরণের পথে এগোনো গিয়েছে। ... ২০১৯-এর ৫ আগস্টের আগে কেউ এই সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণকরতে পারেনি।
- কাশ্মীর-কৃতিত্ব মোদীর, দাবি জয়শঙ্করের - আনন্দবাজার পত্রিকা। একটি অরাজনৈতিক সংস্থার আয়োজিত শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতা উপলক্ষে কাশ্মীর সম্পর্কিত সংবিধানের ৩৭০ ধারা অবলুপ্তি প্রসঙ্গে কলকাতায় এই বক্তব্য রাখেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্কর।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাউইকিপিডিয়ায় শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।