সুফিয়া আহমেদ

একুশে পদক প্রাপ্ত ব্যক্তি

সুফিয়া আহমেদ (২০ নভেম্বর, ১৯৩২ - ৯ এপ্রিল, ২০২০) হলেন একজন বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ। তার জন্মগত নাম ইবরাহিম। ১৯৯৪ সালে তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী জাতীয় অধ্যাপক নির্বাচিত হন। ভাষা আন্দোলনে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে।

  • সেসময়কার প্রেক্ষাপটে ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন তার মত যেসব মেয়েরা, সেটি তাদের জন্য মোটেই সহজ ছিল না। তারপরও নারী-পুরুষ ভেদাভেদ ভুলে সেই আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন।
  • স্বাধিকার আদায় করতে হবে এটা ছিল প্রাণের তাগিদ। নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদেই সেদিন রাস্তায় নেমেছিলাম। ১৯৫২ সালের সে সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীসংখ্যা ছিল বড়জোর ৭০। ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল। এই ধারা ভাঙা হবে কি না এ নিয়ে ছাত্রনেতাদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিলো। তবে নিয়ম-শৃঙ্খলার কঠোরতা ভেঙে মুখের ভাষা রক্ষার তাগিদে সেদিনের আন্দোলনে ছাত্রীরাও এসেছিলেন।
  • সামনে এগিয়ে যাচ্ছি, ‘এমন সময় পুলিশ মিছিলের ওপর প্রচণ্ডভাবে লাঠিচার্জ ও ব্যাপকভাবে টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। টিয়ারগ্যাসের কালো ধোঁয়ায় চারদিক অন্ধকার হয়ে যায়। মিছিলকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। টিয়ারগ্যাসের ঝাঁঝে আমার চোখে ভীষণভাবে জ্বালাপোড়া শুরু হয়। চোখ লাল হয়ে অশ্রুসজল হয়ে ওঠে। চোখ দিয়ে শুধু পানি ঝরতে থাকে। অসহ্য যন্ত্রণা বোধ করি। কোনো রকমে হাঁটতে হাঁটতে এস এম হলের প্রভোস্টের বাড়ির সামনের মাঠে আশ্রয় নেই।’
    • ইতিহাস সম্মিলনী ৯ প্রবন্ধ সংগ্রহ, পৃ. ২৪০

তার সম্পর্কে উক্তি

সম্পাদনা
  • রাজনৈতিক ইতিহাস, ব্যাংকিং নীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়ন, শরণার্থী সুরক্ষাসহ অনেক বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন সুফিয়া আহমেদ। পাশাপাশি সন্তানের জন্য ছিলেন সবচেয়ে বড় বন্ধু।
  • শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত বলতেন সুফিয়া আহমেদ বাংলাদেশের গর্ব ও অহংকার। ব্যক্তি সুফিয়া আহমেদের ভেতরে ও বাইরে অসাধারণ এক সামঞ্জস্য ছিল।
  • তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের একজন বিনম্র, বিদগ্ধ ও নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক এবং গবেষক। অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন গুণী এই শিক্ষক বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদের সভাপতিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। নতুন জ্ঞান সৃষ্টি ও বিতরণে তিনি অনন্য অবদান রেখে গেছেন।

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা