হাসনাত আব্দুল হাই

বাংলাদেশি সাহিত্যিক

হাসনাত আব্দুল হাই (জন্ম: ১৭ মে, ১৯৩৭) একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশি কবি ও ঔপন্যাসিক। বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হন।

হাসনাত আব্দুল হাই
  • আমার প্রাণশক্তির উৎস হলো, জীবন সম্পর্কে অপরিসীম কৌতূহল। কৌতূহলই আমাকে এ পর্যন্ত টেনে এনেছে। মানুষ সম্পর্কে আমার কৌতূহলের শেষ নেই। কৌতূহল থেকে আসে পর্যবেক্ষণ। গভীর পর্যবেক্ষণ শক্তি না থাকলে লেখক হওয়া যায় না।

একদিনের ঘটনা বলি শোনো। আমার মোবাইলটা হঠাৎ নষ্ট হয়ে গেল। ধানমন্ডিতে গ্লোরিয়া জিনস যেখানে, সেখানে স্যামসাং মোবাইলের একটা দোকান আছে। ভাবলাম, সেখানে যাই। ধানমন্ডি ২৭ নম্বরের শেষ মাথায় আই হসপিটালের ওখান থেকে ফুটপাত ধরে হাঁটছিলাম। তখন সন্ধ্যা হয়ে আসছে। হঠাৎ দেখি ফুটপাতে একটা লোক কাপড় বিছিয়ে কী যেন বিক্রি করছে। আমি তাকে বললাম, আচ্ছা ভাই, এখানে গ্লোরিয়া জিনসটা কোথায়? সে বলল, এই তো সামনে। হাঁটতে হাঁটতে খানিকটা যাওয়ার পর আমার মনে হলো, আরে, এ তো সাধারণ হকার নয়! সাধারণ হকারের পক্ষে গ্লোরিয়া জিনসের নাম জানার কথা না। আমি আবার ফিরে গেলাম তার কাছে। দেখলাম, লোকটার চোখেমুখে একধরনের লজ্জা, কুণ্ঠিত হয়ে আছে যেন। কাপড় বিছিয়ে যেসব জিনিস বিক্রি করছে—চিরুনি, টুথপেস্ট, আয়না—তাতে মনে হলো, সে মোটেও প্রফেশনাল হকার না। বুঝলাম, লোকটা মধ্যবিত্ত। খুব আর্থিক সংকটে পড়েছে। ঈদের আগে হাজার দুয়েক টাকার পুঁজি নিয়ে ব্যবসায় নেমে পড়েছে জীবন বাঁচানোর তাগিদে। আমার প্রয়োজন নেই, তবু তার কাছ থেকে এটা-সেটা কিনলাম। এই যে আমি লোকটার শ্রেণি চিনলাম, তার বর্তমান পরিস্থিতি আন্দাজ করতে পারলাম, এটা সম্ভব হয়েছে আমার কৌতূহল আর পর্যবেক্ষণশক্তির কারণে। কৌতূহল ছাড়া কোনো মানুষ লেখক হতে পারে না, শিল্পী হতে পারে না।

  • পর্যবেক্ষণ শক্তি নিয়ে প্রথম আলো
  • বাংলাদেশের সাহিত্যে দুটো ইভেন্ট বড় ধরনের অবদান রেখেছে। একটি হলো বইমেলা, আরেকটি ঈদসংখ্যা। ঈদসংখ্যার বেশির ভাগ লেখাই পরে বইমেলায় বই আকারে বের হয়। তাই আমি ঈদসংখ্যা পড়ি। লেখক হিসেবে আমার সমসাময়িকদের লেখালেখি সম্পর্কে তো আমাকে জানতে হবে। তারা আমার কমিউনিটি। তারা কী লিখছে, তা না জানলে আমি আমার গতিপ্রকৃতি ঠিক করতে পারব না। আমার লেখালেখি কিছু হচ্ছে কি না, তা–ও বুঝতে পারব না। এ জন্য আমি সমসাময়িক লেখকদের লেখা পড়ি। আর নতুনদের লেখা পড়া আমার দায়িত্ব মনে করি। একই সঙ্গে সেসব লেখা সম্পর্কে অন্যকে জানানোও নৈতিক দায়িত্ব মনে করি। এ জন্যই ফেসবুকে পাঠপ্রতিক্রিয়া লিখি।

আমাদের নতুন প্রজন্মের কথাসাহিত্যিকেরা, কবিরা প্রচুর লিখছেন। অনুবাদকের সংখ্যা অনেক বেড়েছে—এটা নিঃসন্দেহে আশাব্যঞ্জক। কিন্তু মননশীল সাহিত্য, গবেষণাভিত্তিক লেখা খুব কম হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি। গল্প-উপন্যাসও প্রচুর লেখা হচ্ছে। কিন্তু খুব কম লেখাতেই আমি নতুন আঙ্গিক দেখতে পাচ্ছি, নতুন বিষয় দেখতে পাচ্ছি। ভাষা নির্মাণও কেউ করছে না। আঙ্গিক ও ভাষা নির্মাণের দিক থেকে আমরা পিছিয়ে আছি। তবে কবিতায় আমরা খুব এগিয়ে গিয়েছি।

হাসনাত আবদুল হাইকে নিয়ে উক্তি

সম্পাদনা
  • এই লেখার মাধ্যমে হাসনাত আবদুল হাই নারী জাতিকে চরমভাবে অসম্মান করেছেন। তার লেখাটি হেফাজতে ইসলামের কাছাকাছি। একজন সাহিত্যিকের কাছ থেকে মানুষ অনেক কিছু শেখে। তিনি যে ধরনের লেখা লিখেছেন, তাতে দেশও চরমভাবে অপমাণিত হয়েছে।

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা