হিমু (চরিত্র)
হুমায়ন আহমেদ রচিত জনপ্রিয় কাল্পনিক চরিত্র
হিমু হুমায়ূন আহমেদের একটি অনন্য সৃষ্টি। নিচে বিভিন্ন উপন্যাসে হিমুর বিভিন্ন উক্তি তুলে ধরা হয়েছে।
উক্তি
সম্পাদনা- হাসিতে খুব সহজেই মানুষকে চেনা যায়। সব মানুষ একই ভঙ্গিতে কাঁদে কিন্তু হাসার সময় একেক জন একেক রকম করে হাসে
- ময়ুরাক্ষী
- ভালবাসার মানুষের সাথে বিয়ে না হওয়াটাই বোধ হয় ভাল।বিয়ে হলে মানুষটা থাকে ভালবাসা থাকে না।আর যদি বিয়ে না হয় তাহলে হয়ত বা ভালবাসাটা থাকে,শুধু মানুষটাই থাকে না। মানুষ এবং ভালবাসা এই দুয়ের মধ্যে ভালবাসাই হয়ত বেশি প্রিয়।
- কোথাও কেউ নেই
- যে মানব সন্তান ক্ষুদ্র কামনা জয় করতে পারে সে বৃহৎ কামনাও জয় করতে পারে।
- দরজার ওপাশে
- মানুষের স্বভাব হলো, কেউ যখন ভালোবাসে তখন নানান কর্মকাণ্ড করে সেই ভালোবাসা বাড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করে, আবার কেউ যখন রেগে যায় তখন তার রাগটাও বাড়িয়ে দিতে ইচ্ছা করে।
- আঙুল কাটা জগলু
- মেয়েদের অনেক গুণের মধ্যে বড় গুণ হলো এরা খুব সুন্দর করে চিঠি লিখতে পারে। কথাবার্তায় নিতান্ত এলোমেলো মেয়েও চিঠি লেখায় গোছানো। মেয়েদের চিঠিতে আরেকটা ব্যাপার থাকে - বিষাদময়তা। নিতান্ত আনন্দের সংবাদ দিয়ে লেখা চিঠির মধ্যেও তারা জানি কী করে সামান্য হলেও দুঃখ মিশিয়ে দেয়। কাজটা যে তারা ইচ্ছা করে করে তা না। প্রকৃতি তাদের চরিত্রে যে বিষাদময়তা দিয়ে রেখেছে তাই হয়তো চিঠিতে উঠে আসে।
- সে আসে ধীরে
- বড় বোকামিগুলি বুদ্ধিমান মানুষরাই করে।
- আঙুল কাটা জগলু
- বিবাহ এবং মৃত্যু এই দুই বিশেষ দিনে লতা-পাতা আত্মীয়দের দেখা যায়। সামাজিক মেলামেশা হয়। আন্তরিক আলাপ আলোচনা হয়।
- একজন হিমু এবং কয়েকটি ঝিঁ ঝিঁ পোকা
- জোছনা দেখতে দেখতে, আমার হটাৎ মনে হলো, প্রকৃতির কাছে কিছু চাইতে নেই, কারণ প্রকৃতি মানুষের কোনো ইচ্ছাই অপূর্ণ রাখে না
- দরজার ওপাশে
- কঠিন মানসিক যন্ত্রণায় কাউকে দগ্ধ করার আনন্দের কাছে সব আনন্দই ফিকে।
- ময়ুরাক্ষী
- মেয়েরা ভয়ঙ্কর দুর্যোগেও সাজ ঠিক রাখতে ভোলে না।
- হিমুর আছে জল
- কিছু মানুষ ধরেই নিয়েছে তারা যা ভাবছে তাই ঠিক। তাদের জগতটাই একমাত্র সত্যি জগত। এরা রহস্য খুঁজবে না। এরা স্বপ্ন দেখবে না
- ময়ুরাক্ষী
- কিছু মানুষ ধরেই নিয়েছে তারা যা ভাবছে তাই ঠিক। তাদের জগতটাই একমাত্র সত্যি জগত। এরা রহস্য খুঁজবে না। এরা স্বপ্ন দেখবে না
- ময়ুরাক্ষী
- যে মানুষ নিঃশব্দে হাসে তাহার বিষয়ে খুব সাবধান। দুই ধরনের মানুষ নিঃশব্দে হাসে- অতি উঁচু স্তরের সাধক এবং অতি নিম্নশ্রেণীর পিশাচ চরিত্রের মানুষ।
- তোমাদের এই নগরে
- প্রিয় মুখ কিছু দিন পরপর দেখতে হয়। মানুষের মস্তিষ্ক অপ্রিয়জনদের ছবি সুন্দর করে সাজিয়ে রাখে। প্রিয়জনদের ছবি কোনো এক বিচিত্র কারণে কখনো সাজায় না। যে জন্যে চোখ বণধ করে প্রিয়জনের চেহারা কখনোই মনে করা যায় না।
- হিমু
- হিমুরা কাউকে নিলপদ্ম দিতে পারে না
- হিমুর হাতে কয়েকটি নিলপদ্ম
- মানব জাতির সমস্যা হচ্ছে তাকে কোনো না কোনো সন্ধানে জীবন কাটাতে হয়. অর্থের সন্ধান, বিত্তের সন্ধান, সুখের সন্ধান, ভালবাসার সন্ধান, ইশ্বরের সন্ধান।
- হিমু ও একটি রাশিয়ান পরী
- বন্ধুত্ব তখনই গাঢ় হয় যখন কেউ কাউকে চিনে না
- হিমু এবং হাভার্ড Ph.D. বল্টু ভাই
- এই পৃথিবী, এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড কোনোটাই স্থির না। সবকিছু প্রচণ্ড গতিময়। ইলেক্ট্রন ঘুরছে নিউক্লিয়াসের চারদিকে, নিউক্লিয়াস ঘুরছে, চন্দ্র-সূর্য-গ্রহ-নক্ষত্র ঘুরছে। ছায়াপথ ছুটে ছুটে যাচ্ছে। শুধু মানুষ হাঁটা বন্ধ করে দিয়েছে।
- দরজার ওপাশে
- মানুষের মনের ভাব কখনোই মুখে প্রতিফলিত হয় না। মুখের ওপর সর্বদা পর্দা থাকে। শুধু মানুষ যখন হাসে তখন পর্দা দূরীভূত হয়। হাস্যরত একজন মানুষের মুখে তার মনের ছায়া দেখা যায়।
- হিম এবং কয়েকটি ঝিঁ ঝিঁ পোকা
- সুন্দরী মেয়েদের হাতের লেখা সুন্দর হয়। এটা হল নিপাতনে সিদ্ধ। সুন্দরীরা মনে প্রাণে জানে তারা সুন্দর। তাদের চেষ্টাই থাকে তাদের ঘিরে যা থাকবে সবই সুন্দর
- হিমুর রূপালী রাত্রি
- পৃথিবীতে আনন্দ এবং দুঃখ সব সময় থাকবে সমান সমান। বিজ্ঞানের ভাষায়- Conservation of আনন্দ। একজন কেউ চরম আনন্দ পেলে, অন্য জনকে চরম দুঃখ পেতে হবে।
- আজ হিমুর বিয়ে
- ট্রাফিক জ্যামের্ও একটা ভাল দিক আছে। এই সময়ে রাস্তা পারাপার করতে পারা যায়।
- পারাপার
- বাস্তবের সব গল্পের সুন্দর সুন্দর সমাপ্তি থাকলে ভালো হয়। বাস্তবের গল্পগুলির সমাপ্তি ভালো না। রূপকথার মতো সমাপ্তি বাস্তবে হয় না।
- হিমুর দ্বিতীয় প্রহর
- হিমুর প্রতিটি কথা ভুয়া। সত্যি কথা সে অতীতে কোনোদিন বলেনি। ভবিষ্যতেও বলবে না।
- সে আসে ধীরে
- ভালোবাসার মানুষদের খুব কাছে কখনো যেতে নেই।
- ময়ুরাক্ষী
- তুমি আমার জন্য দুফোঁটা চোখের জল ফেলেছো,
তার প্রতিদানে আমি জনম জনম কাঁদিব।
- তেঁতুল বনে জোছনা
- আলো যেমন চারপাশ আলো করে তোলে একজন পবিত্র মানুষও তার চারপাশ আলো করে তুলবেই
- পারাপার
- নিজেকে বোঝা নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। আমাদের প্রধান চেষ্টা অন্যকে বোঝা।
- পারাপার - হিমু
- অতি ভয়ঙ্কর যে গরল তাহাতেও অমৃত মিশ্রিত থাকে। অতি পবিত্র অমৃতে থাকে প্রাণসংহারক গরল। খাদ ছাড়া সোনা হয় না। গরল ছাড়া অমৃতও হয় না
- তোমাদের এই নগরে
- মেয়েরা অতি দূরের আত্মীয়কে কাছের মানুষ প্রমাণ করার জন্যে চট করে তুই বলে।
- পারাপার
- মানুষকে সহ্যের শেষসীমা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া সহজ কথা না। সবাই তা পারে না। যে পারে তার ক্ষমতাও হেলাফেলা করার মতো ক্ষমতা না।
- ময়ুরাক্ষী
- আনন্দে মানুষ হাসে আবার প্রবল দুঃখেও মানুষ হাসে। এখান থেকে আমরা কি এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি- আনন্দ এবং দুঃখ আলাদা কিছু না?
- দরজার ওপাশে
- কিছু কিছু মানুষ বিচিত্র ধরনের নিঃসঙ্গতা নিয়ে পৃথিবীতে আসে। কারোর সাধ্য নেই সেই নিঃসঙ্গতা দূর করে। সেই সব মানুষরা তাদের নিঃসঙ্গতা দূর করার চেষ্টা নিজেরাই করে। তা করতে গিয়ে কেউ বড় লেখক হয়, কেউ হয় চিত্রকর, বিজ্ঞানী। আবার কেউ হয়তো তার মতো ডাক্তার হয়। চারপাশের মানুষদের নিয়ে অসম্ভব ব্যস্ত থেকে নিজের নিঃসঙ্গতা ভুলে থাকতে চায়।
- তেতুল বনে জোছনা
- এক জিনিস বেশিদিন ধরে রাখতে নেই। ভোল পাল্টাতে হয়। অনেকটা সাপের খোলস ছাড়ার মতো। কিছুদিন অন্য সাজে থাকব --- তারপর আবার......
- ময়ুরাক্ষী
- সব চিকিৎসার বড় চিকিৎসা হলো মন-চিকিৎসা। মন যদি কোনো চিকিৎসা করতে বলে সেই চিকিৎসা করে দেখা দরকার।
- সে আসে ধীরে
- কোনো মেয়ে যদি জিজ্ঞেস করে - আপনি কি আমাকে চিনতে পারছেন, তাহলে তার মুখের উপর 'না' বলা যায় না। কেউ বললে আদালতে তার জেল জরিমানা দুই-ই হবার বিধান থাকা উচিত।
- দরজার ওপাশে
- ঘুমাইয়া রাত নষ্ট করিও না। দিনে নিদ্রা যাইবে। রাত কাটাইবে অনিদ্রায়। কারণ রাত্রি আত্ম-অনুসন্ধানের জন্য উত্তম। জগতের সকল পশু নিশিযাপন করে। পশু মাত্রই নিশাচর। মানুষ এক অর্থে পশু। নিশিযাপন তার অবশ্য কর্তব্যের একটি।
- দরজার ওপাশে
- কিছু কিছু ঘটনা মানুষ দ্রুত ভুলে যেতে চেষ্টা করে। সেই চেষ্টা সচেতনভাবেই করা হয় এবং সে কারণেই সে লজ্জিত বোধ করে। মৃত্যু এমন একটি ঘটনা। অতি প্রিয়জনের মৃত্যুও আমরা ভুলে যাবার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করি। আমাদের চলা-ফেরা, আচার-আচরণে মনে হয় না সেই প্রিয়জন কোনকালে আমাদের মধ্যে ছিল। কেন এ রকম করা হয়? আমাদের নিজেদের ব্যবহারে আমরা নিজেরাই অবশ্য লজ্জিত হই, যার জন্য প্রিয়জনটির একটি বড় ছবি যত্ন করে দেয়ালে টাঙানো হয় এবং একদিন কেউ খুব রাগারাগি করে- ফ্রেমে মাকড়শার জাল, কেউ দেখছেনা, ব্যাপারটা কি?
- দরজার ওপাশে
- সমস্ত কষ্টের মূলে আছে আমাদের উচ্চাশা। আমার উচ্চাশা ছিল বলে প্রথমদিকে খুবই কষ্ট পেয়েছি। শেষেরদিকে উচ্চাশা ত্যাগ করতে পেরেছিলাম। তাই খানিকটা আনন্দে ছিলাম। আনন্দে থাকাটাই বড় কথা।
- ময়ূরাক্ষী
- একটি বিবাহিত মেয়ের জীবন মানেই কি একের পর এক গ্লানিময় ক্লান্তির দীর্ঘ রজনী?
- কোথাও কেউ নেই
- বিভিন্ন পরিবেশে মানুষের বিভিন্ন পরিচয় পাওয়া যায়
- কোথাও কেউ নেই
- যার হাসি সুন্দর তার কান্না নাকি কুশ্রী।
- কোথাও কেউ নেই
- পৃথিবীতে অনেক রহস্য আছে। সেই সব রহস্যের একটা হচ্ছে মানবিক সম্পর্ক। এর কোনো ধরাবাধা নিয়ম নেই। হঠাৎ যেকোনো একজন মানুষের জন্যে হৃদয় মমতায় উদ্বেলিত হতে পারে।
- কোথাও কেউ নেই
- কিন্তু হিমুরা কখনো কারো হাত ধরে না।
- এবং হিমু
- মানুষ সহজে প্রতারিত হয় এরকম কথাগুলির একটি হচ্ছে - "আপনি বড়ই অভিমানী, নিজের কষ্ট প্রকাশ করেন না, লুকিয়ে রাখেন।
- হিমুর হাতে কয়েকটি নিলপদ্ম
- কিছু কিছু মানুষ বিচিত্র ধরনের নিঃসঙ্গতা নিয়ে পৃথিবীতে আসে। কারোর সাধ্য নেই সেই নিঃসঙ্গতা দূর করে। সেই সব মানুষরা তাদের নিঃসঙ্গতা দূর করার চেষ্টা নিজেরাই করে। তা করতে গিয়ে কেউ বড় লেখক হয়, কেউ হয় চিত্রকর, বিজ্ঞানী। আবার কেউ হয়তো তার মতো ডাক্তার হয়। চারপাশের মানুষদের নিয়ে অসম্ভব ব্যস্ত থেকে নিজের নিঃসঙ্গতা ভুলে থাকতে চায়।”
- তেতুল বনে জোছনা
- দশটি সত্যের সঙ্গে একটা মিথ্যা মিশিয়ে দাও, দেখবে মিথ্যটি সত্য বলে মনে হবে। কেউ এই মিথ্যা আলাদা করতে পারবে না। কিন্তু দশটি মিথ্যার সঙ্গে যদি একটি সত্যি মিশাও তাহলেও কিন্তু সত্য সত্যই থাকবে। মিথ্যা হবে না।
- দরজার ওপাশে
- মানুষ ভান করিতে জানে, পশু জানে না - এই একটি বিষয় ছাড়া মানুষের সঙ্গে পশুর কোনো তফাত নেই।
- হিমুর হাতে কয়েকটি নিলপদ্ম
- চোখ খোলা রাখলে মনের চোখ বন্ধ হয়ে যায়।
- পারাপার
- কত দ্রুত একজন মানুষ বদলায়। কত ভাবেই না বদলায়।
- কোথাও কেউ নেই
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাউইকিপিডিয়ায় হিমু সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।