হীরক রাজার দেশে

১৯৮০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ভারতীয় বাংলা চলচ্চিত্র

হীরক রাজার দেশে (মুক্তি: ১৯৮০) ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় পরিচালিত একটি জনপ্রিয় চলচ্চিত্র। এটি গুপী গাইন বাঘা বাইন সিরিজের একটি চলচ্চিত্র। এর একটি বিশেষ দিক হচ্ছে মূল শিল্পীদের সকল সংলাপ ছড়ার আকারে করা হয়েছে। তবে কেবল একটি চরিত্র ছড়ার ভাষায় কথা বলেননি। তিনি হলেন উদয়ন পণ্ডিত, যিনি একজন শিক্ষক।

উক্তি সম্পাদনা

   

ওরা যত বেশি পড়ে
তত বেশি জানে
তত কম মানে।

রাজসভায় হীরক রাজা, উদয়ন পণ্ডিতের ছাত্রদের সম্বন্ধে

মগজ ধোলাইয়ের সূত্র সম্পাদনা

  • বাকি রাখা খাজনা, মোটে ভাল কাজ না
  • ভর পেট নাও খাই, রাজ কর দেওয়া চাই
  • যায় যদি যাক প্রাণ, হীরকের রাজা ভগবান
  • যে কয় পেটে খেলে পিঠে সয়, তার কথা ঠিক নয়
  • যে করে খনিতে শ্রম, যেন তারে ডরে যম
  • অনাহারে নাহি খেদ, বেশি খেলে বাড়ে মেদ
  • ধন্য শ্রমিকের দান, হীরকের রাজা ভগবান
  • লেখাপড়া করে যে, অনাহারে মরে সে
  • দড়ি ধরে মারো টান, রাজা হবে খানখান
  • জানার কোন শেষ নাই, জানার চেষ্টা বৃথা তাই

গান সম্পাদনা

   

মোরা দুজনায় রাজার জামাই
মোরা খাই দাই ঘুরি ফিরি
আহা কি মোদের ছিরি
মোরা দিনে করি বাবুগিরি
রাতে আয়েসে ঘুমাই
মোরা দুজনায় রাজার জামাই
      ... ... ...
এইবারে শোন মোদের কেমনে হয়েছে এই হাল
মোদের না ছিল চুলানা ছিলও চাল
শেষে দিলেন ভূতের রাজা
দিলেন ভূতের রাজা
তিন বর তাজা তাজা
সেই বরে ফিরেছে কপাল
মোদের সেই বরে ফিরেছে কপাল
সেই বরে এত রোশনাই
মোদের সেই বরে এত রোশনাই

মোরা দুজনায় রাজার জামাই
   

না না – আর বিলম্ব নয়, আর বিলম্ব নয়!
এখানো মোদের শরীরে রক্ত
রয়েছে গরম মেটেনি শখ তো
আছে যত হাড় সবই ত শক্ত
এখনো ধকল সয়।
      ... ... ...
এখনো আছে সময়, এখনও আছে সময়,
আর বিলম্ব না না, আর বিলম্ব নয়।
চলহে, কোথাও ঘুরে আসি গিয়ে।
সুর করে চল যাই ঘুরে আসি প্রাণ ভরে
বনেতে পাহাড়ে মরুপ্রান্তর।।

আর বিলম্ব নয়
   

“দেখো ভাল-জনে রইল ভাঙা ঘরে
মন্দ সে যে সিংহাসন চড়ে।।
ও ভাই, সোনার ফসল ফলায় যে তার
দুই বেলা জোটে না আহার।।
হিরার খনির মুজুর হয়ে
কানা-কড়ি নাই,
ও ভাই হিরার খনির মুজুর হয়ে
কানা-কড়ি নাই
ও তার কানা-কড়ি নাই।
ওরে ভাই রে, ওরে ভাই রে, ভাইরে
আমি কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায়
ওরে ভাইরে, ভাইরে
কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায়।

কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায়
   

আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে।
শাখে শাখে পাখি ডাকে
কত শোভা চারি পাশে।।
আজকে মোদের বড়ই সুখের দিন।
আজি ঘরের বাধন ছেড়ে মোরা হয়েছি স্বাধীন।
আহা হয়েছি স্বাধীন
...

আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে
   

এসে হীরকদেশে
দেখে হীরের চমক,
এতো খাতির পেয়ে
দেখে রাজার জমক
মোদের মন ভরে গেছে খুশীতে।

মোরা সে কথা জানাই
রাজা এতোই রসিক
রাজা এতো দরাজ
রাজা এতো মিশুক
এতো চিকন মেজাজ,
মোদের প্রান ভরে গেছে তাই
...

দৃশ্য দেখি অন্য
   

ধোরনাকো ধোরনাকো ধোরনাকো ধোরনাকো ধোরনাকো শান্ত্রীমশাই!
হাত কেন বাড়াও ভাই?
নোড়নাকো নোড়নাকো নোড়নাকো নোড়নাকো ওইখানে দাড়াও ভাই
আর বেশি সময় নাই
তুমি এইদিকে চেয়ে থেক না দেখ না, দেখ না-
এখন মোরা নই রাজার জামাই মোরা করব এখন ডাকাতি
রাতারাতি – দেখে দুঃখ কেন পাও কওত –
তুমি ঐ দিকে ঘুরে রওত –
আহা ঘোরনাকো ঘোরনাকো ঘোরনাকো ঘোরনাকো
ঐ দিকে ঘোর ভাই – শান্ত্রীমশাই, শান্ত্রীমশাই!

ধোরনাকো শান্ত্রীমশাই
   

সা রে গা – সা গা গা – সা গা মা গা –
পায়ে পড়ি বাঘ মামা কোরনাকো রাগ, মামা –
তুমি যে এ ঘরে কেতা জানত?
এ যে বিনা মেঘে পড়ে বাজ
কেঁচে বুঝি গেল কাজ
দয়া করে থাকো হোয়ে শান্ত!
 ...

পায়ে পড়ি বাঘ মামা
   

নহি যন্ত্র নহি যন্ত্র, আমি প্রাণী
আমি জানি
রাজা দুষ্ট, রাজা মন্দ
রাজা ধৃষ্ট, রাজা অন্ধ
রাজা নিচ, রাজা ক্রুর, রাজা খল
রাজা অনাচারের সীমা ছেড়ে
অভাগারে ভাতে মেরে
আনে দেশে ঘোর অমঙ্গল
    ... ... ...
এইবারে রাজা শোন,
যেন নিস্তার নেই কোনো,
এসেছে তোমার যম , তুমি রাজা অক্ষম ,
মরণের দিন তুমি গোন…
রাজা ধিক, ধিক, ধিক!!

নহি যন্ত্র

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা