অর্ধেন্দুশেখর মুস্তফী

বাঙালি নাট্য অভিনেতা

অর্ধেন্দুশেখর মুস্তফি (২৫ জানুয়ারী ১৮৫০ — ৫ সেপ্টেম্বর ১৯০৮) ছিলেন একজন বাঙালি অভিনেতা, নাট্য লেখক এবং মঞ্চ ব্যক্তিত্ব। তিনি গিরিশচন্দ্র ঘোষের একজন প্রতিদ্বন্দ্বী এবং সহযোগী অভিনেতা হিসাবে পরিচিত ছিলেন। তিনি কলকাতার একজন সফল নাট্য শিক্ষকও ছিলেন। মুস্তাফি ১৮৭২ থেকে ১৯০৪ সাল পর্যন্ত ভারতীয় জাতীয় থিয়েটার, গ্রেট ন্যাশনাল থিয়েটার, পান্না থিয়েটার, আর্য নাট্য সমাজ, মিনার্ভা, অরোরা এবং স্টার থিয়েটারসহ বিভিন্ন পর্যায়ে অভিনয় করেছিলেন। বিনার ঝনকার নামে তিনি একটি বইও লিখেছিলেন।

অর্ধেন্দুশেখর মুস্তফী সম্পর্কে উক্তি

সম্পাদনা
  • অর্ধেন্দুশেখর মুস্তফী হলেন বিধাতার হাতেগড়া অভিনেতা।
    • অমৃতলাল বসু; উল্লেখিত হয়েছে: সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান (প্রথম খণ্ড), সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৪৮।
  • সেকালের শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বলে অতুলনীয় নাম কিনেছিলেন গিরিশ্চন্দ্র ও অর্ধেন্দুশেখর এবং বাংলাদেশের প্রায় সমস্ত অভিনেতাই ছিলেন তাঁদের শিষ্য বা প্রশিষ্য। কিন্তু তাঁদের গুরুর নাম কেউ জানে না। বোধ হয় তাঁরা ছিলেন জন্মনট, গোড়া থেকেই নাট্যকলায় ছিল তাঁদের অশিক্ষিতপটুত্ব।
  • অভিনেতা আছেন দুই রকম। এক, যিনি নিজের ভূমিকার মধ্যে একেবারে তন্ময় হয়ে ডুবে যান; আর এক, যিনি থাকেন সচেতন, ভূমিকার মধ্যে নিজের অস্তিত্বকে ডুবিয়ে দিতে চান না। দুই দলেই বড় বড় অভিনেতাকে দেখা যায়। এদেশে প্রথম দলে ছিলেন অমৃতলাল মিত্র ও দানীবাবু প্রভৃতি। দ্বিতীয় দলে দেখি অর্ধেন্দুশেখর, অমৃতলাল বসু এবং এ যুগের শিশিরকুমার প্রভৃতিকে।
  • অধিকাংশ অভিনেতাই বড় বড় ভূমিকার জন্যে লালায়িত হন। কিন্তু বড় বড় ভূমিকাভিনয়ের জন্যে অতুলনীয় যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও এবং নিজে নাট্যাচার্য হয়েও অর্ধেন্দুশেখর কখনো প্রধান রূপে পরিচিত হতে চাননি। প্রায়ই গ্রহণ করতেন ছোট ছোট অবান্তর ভূমিকা এবং প্রায়ই দেখা গিয়েছে তাঁর অপূর্ব অভিনয়নৈপুণ্যে সেই সব ছোট ছোট ভূমিকাই নাটকের মধ্যে অত্যন্ত প্রাধান্য বিস্তার করেছে।
  • অর্ধেন্দুশেখর দরিদ্র ছিলেন, কিন্তু তাঁর অসাধারণ শিল্পনিষ্ঠা কোনদিন তাঁকে টাকা-আনা-পয়সার দিকে আকৃষ্ট হতে দেয় নি। এমন কি এটা বলাও চলে যে, নিজেই তিনি নিজের মাথায় দারিদ্র্যের ভার তুলে নিয়েছিলেন এবং তারও কারণ গভীর নাট্যানুরাগ।
  • তাঁর মতো নিস্পৃহ এবং একান্তভাবেই নাট্যগতপ্রাণ শিল্পী বাংলা রঙ্গালয়ে আজ পর্যন্ত আর দেখা যায় নি। তিনি নিজে সম্পুর্ণ ভাবেই রিক্ত হয়ে আমাদের পরিপূর্ণ আনন্দদান করে গিয়েছেন।

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা