ঘোড়া

স্তন্যপায়ী, তৃণভোজী, চতুষ্পদী প্রাণী

ঘোড়া বা ঘোটক হলো প্রাণিজগতের অতিপরিচিত একটি চতুষ্পদ প্রাণী। দ্রুতগামী বলে একে তুরগ বা তুরঙ্গমও বলা হয়। চতুষ্পদ প্রাণীর মধ্যে গরুর পর ঘোড়াও মানুষের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ঘোড়া অত্যন্ত প্রভুভক্ত, দ্রুতগামী ও কষ্টসহিষ্ণু। সারা পৃথিবীতে নানা প্রজাতির ঘোড়া দেখতে পাওয়া যায়। আরবের ঘোড়া সবচেয়ে শক্তিশালী হয়। আবার অস্ট্রেলিয়ার ঘোড়া আকারে বেশ বড় হয়। ঘোড়া সাদা, কালো, ধূসর প্রভৃতি রঙের হয়ে থাকে।

ঘোড়া ঘোড়া ঘোড়া,
দুই ঠ্যাং তোর খোঁড়া;
মার্‌‌ব চাবুক যেই,
নাচ্‌‌বি ধেই ধেই!
যোগীন্দ্রনাথ সরকার
  • ঘোড়া ঘোড়া ঘোড়া,
    দুই ঠ্যাং তোর খোঁড়া;
    মার্‌‌ব চাবুক যেই,
    নাচ্‌‌বি ধেই ধেই!
    • যোগীন্দ্রনাথ সরকার, ঠ্যাং খোঁড়া, খুকুমণির ছড়া - যোগীন্দ্রনাথ সরকার, প্রকাশক- সিটি বুক সোসাইটি, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দ (১৩০৬ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৬১
  • ঘোড়ার গাড়ি একখানি পাওয়া গেল, ঠিকেগাড়ি। তাতে করেই আসতে হবে আমাদের নদীর ব্রিজের কাছ পর্যন্ত। আমরা কয়জন এক গাড়িতে ঠেসাঠেসি করে; দীপুদা উঠে বসলেন ভিতরে, ব্যাপার দেখে আমি একেবারে কোচ-বক্সে চড়ে বসলুম।
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঘরোয়া, পঞ্চম পরিচ্ছেদ, ঘরোয়া-অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক-বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশসাল- ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৭৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭৭
  • আমি যাচ্ছি রাঙা ঘোড়ার 'পরে
    টগবগিয়ে তোমার পাশে পাশে।
    রাস্তা থেকে ঘোড়ার খুরে খুরে
    রাঙা ধুলোয় মেঘ উড়িয়ে আসে॥
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বীরপুরুষ, শিশু - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ (১৪২৬ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৫২
  • কতকগুলা ঘোড়সোয়ার আমাদের সম্মুখ দিয়া যাইতেছিল; হাতী দেখিয়া তাহাদের ঘোড়া ভড়্‌কাইয়া লাফালাফি করিতে লাগিল; একটা উট হঠাৎ মাথাঝাঁকানি দেওয়ায় উটের সোয়ার উষ্ট্রপৃষ্ঠ হইতে ভূতলে পতিত হইল। এই হাতীর দেশে এমন কোন জীবজন্তু নাই যে, হাতীর পাশ দিয়া গেলে ভয় না পায়।
    • পিয়ের-লোটি, জালিকাটা বেলে-পাথরের নগর, ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ, পিয়ের-লোটির ফরাসী থেকে অনুবাদ, অনুবাদক- জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- ইণ্ডিয়ান পাবলিশিং হাউস, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৮৩
  • মহীনের ঘোড়াগুলো ঘাস খায় কার্তিকের জ্যোৎস্নার প্রান্তরে,
    প্রস্তরযুগের সব ঘোড়া যেন— এখনও ঘাসের লোভে চরে
    পৃথিবীর কিমাকার ডাইনামোর ’পরে।
    • জীবনানন্দ দাশ, ঘোড়া, জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা, প্রকাশক- নাভানা, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮৩
  • সার্কাস শুরু হল। টুকিটাকি দুটো-একটা খেলার পর শেষ হবে ঘোড়ার খেলা দেখিয়ে। দেশী মেয়ে ঘোড়ার খেলা দেখাবে। দেখি কোত্থেকে একটা ঘোড়া হাড়গোড়-বের-করা ধরে আনা হয়েছে, মেয়েও একটি জোগাড় হয়েছে, সেই মেয়েকে সার্কাসের মেমদের মতো টাইট পরিয়ে সাজানো হয়েছে। দেশী মেয়ে ঘোড়ায় চেপে তো খানিক দৌড়ঝাঁপ করে খেলা শেষ করলে। এই হল দেশী সার্কাস।
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঘরোয়া, ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ, ঘরোয়া-অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক-বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশসাল- ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৭৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮৪
  • উধাও হয়ে ছুটত ঘোড়া,— কোথাও যেতে মানা নাই,
    পঙক্ষীরাজের সামিল সে যে, কিন্তু পিঠে ডানা নাই;
    গ্রীষ্ম, বাদল, কি শীতে,
    সকাল দুপুর নিশীথে,
    খেয়াল-মত চলত কুমার যেথায় খুশি অনিবার,
    মানত না সে ত্র্যহস্পর্শ, বারবেলা কি শনিবার।
    • সুনির্মল বসু, অপরূপ-কথা, সুনির্মল বসুর শ্রেষ্ঠ কবিতা- সুনির্মল বসু, প্রকাশক- মিত্র ও ঘোষ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১২৯
  • প্রাণীটি হচ্ছে ঘোড়া। এ ডিম পাড়ে না তবু বাজারে তার ডিম নিয়ে একটা গুজব আছে, তাই এ’কে দ্বিজ বলা চলে।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঘোড়া, লিপিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- ইণ্ডিয়ান প্রেস লিমিটেড, প্রকাশসাল- ১৯২২ খ্রিস্টাব্দ (১৩২৯ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭৬
  • একমাস চলিয়া গেল, তথাপি রাজা ঘোড়া ফিরাইয়া দিলেন না দেখিয়া, বামদেব তাঁহার আত্রেয় নামক শিষ্যকে দিয়া ঘোড়া দুটি চাহিয়া পাঠাইলেন। কিছুকাল পরে আত্রেয় শুধু হাতে ফিরিয়া আসিয়া দুঃখের সহিত বলিলেন, “ভগবন, আমি রাজার নিকট ঘোড়া চাহিলে তিনি তাহা দিতে অস্বীকার করিলেন। বলিলেন, এমন ঘোড়া রাজারই উপযুক্ত। ব্রাহ্মণের আবার ঘোড়ার প্রয়োজন কি? আপনি আশ্রমে চলিয়া যান!”
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, বামদেব ও বামীর কথা, মহাভারতের কথা, উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, প্রকাশক- বসাক বুক স্টোর প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রকাশসাল-১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৫৭৬-৫৭৭
  • সে ব্যক্তি ঘোড়া হইতে নামিয়া, খানিক বিশ্রাম করিবার নিমিত্ত, ঘোড়ার ছায়ায় বসিল। তাহাকে ঘোড়ার ছায়ায় বসিতে দেখিয়া, যাহার ঘোড়া, সে কহিল, ভাল, তুমি ঘোড়ার ছায়ায় বসিবে কেন? ঘোড়া তোমার নয়; এ আমার ঘোড়া, আমি উহার ছায়ায় বসিব, তোমায় কখনও বসিতে দিব না। তখন সে ব্যক্তি কহিল, আমি, সমস্ত দিনের জন্যে, ঘোড়া ভাড়া করিয়াছি; কেন তুমি আমায় উহার ছায়ায় বসিতে দিবে না? অপর ব্যক্তি কহিল, তোমাকে ঘোড়াই ভাড়া দিয়াছি, ঘোড়ার ছায়া ত ভাড়া দি নাই। এই রূপে, ক্রমে ক্রমে, বিবাদ উপস্থিত হওয়াতে, উভয়ে, ঘোড়া ছাড়িয়া দিয়া, মারামারি করিতে লাগিল। এই সুযোগে, ঘোড়া বেগে দৌড়িয়া পলায়ন করিল, আর উহার সন্ধান পাওয়া গেল না।
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, ঘোটকের ছায়া, কথামালা- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, চতুশ্চত্বারিংশ সংস্করণ, প্রকাশক- সংস্কৃত প্রেস ডিপোজিটরি, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দ (১২৯২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮৩
  • নবগোপাল মিত্তির ঐ পর্যন্ত করলেন, দেশী সার্কাস খুলে দেশী মেয়েকে দিয়ে ঘোড়ার খেলা দেখালেন। কোথায় হিন্দুমেলা আর কোথায় দেশী সার্কাস। সারা জীবন এই দেশী দেশী করেই গেলেন, নিজের যা-কিছু টাকাকড়ি সব ঐতেই খুইয়ে শেষে ভিক্ষেশিক্ষে করে সার্কাস দেখিয়ে গেলেন।
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঘরোয়া, ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ, ঘরোয়া-অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক-বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশসাল- ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৭৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮৪

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা