চিরকুমার সভা (নাটক)

১৯৩২ সালের চলচ্চিত্রের প্রচার পুস্তিকা

চিরকুমার সভা হল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক রচিত একটি বাংলা নাটক। এটি একটি প্রহসন। এটি ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়। এটি তারই লেখা প্রজাপতির নির্বন্ধ নামক উপন্যাসের নাট্যরূপ। এই নাটকে শৈলবালার পুরুষ ছদ্মবেশ ধারণ শেকসপিয়রীয় রীতির অনুসরণ।

  • অক্ষয়: ডিমের খোলা ভেঙে ফেললেই কিছু পাখি বেরোয় না। যথোচিত তা দিতে হবে, তাতে সময় লাগে।
  • অক্ষয়: ইলিশ মাছ অমনি দিব্যি থাকে, ধরলেই মারা যায়; প্রতিজ্ঞাও ঠিক তাই, তাকে বাঁধলেই তার সর্বনাশ।
  • রসিক: যাকে জন্তু বলে চেনা যায় না সেই জন্তুই ভয়ানক।
  • অক্ষয়: লেজই বল কবিত্বই বল ভিতরে না থাকলে জোর করে টেনে বের করবার জো নেই।
  • অক্ষয়: দেখো দাম্পত্যতত্ত্বানভিজ্ঞ বৃদ্ধ, আমরা যখন রাগ করি তখন স্বভাবত আমাদের কণ্ঠস্বর প্রবল হয়ে ওঠে, সেইটেই তোমাদের কর্ণগোচর হয়; আর অনুরাগে যখন আমাদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে আসে, কানের কাছে মুখ আনতে গিয়ে মুখ বারংবার লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পড়তে থাকে— তখন তো খবর পাও না।
  • শ্রীশ: আমাদের ব্রত কঠিন বলেই রসের দরকার বেশি। রুক্ষ মাটিতে ফসল ফলাতে গেলে কি জলসিঞ্চনের প্রয়োজন হয় না। চিরজীবন বিবাহ করব না এই প্রতিজ্ঞাই যথেষ্ট, তাই বলেই কি সবদিক থেকে শুকিয়ে মরতে হবে।
  • চন্দ্রবাবু: কোনো কালে মহৎ চেষ্টাকে মনে স্থান না দেওয়ার চেয়ে চেষ্টা করে অকৃতকার্য হওয়া ভালো।
  • অক্ষয়: নিজে যে ব্যক্তি ভূত অন্য লোকের জীবনসম্ভোগটা তার কাছে বাঞ্ছনীয় হতে পারেই না, এই মনে করে মানুষ ভূতকে ভয়ংকর কল্পনা করে।
  • পূর্ণ: শ্রীশবাবু, মরীচিকা মেলাতে পারে, কিন্তু তৃষ্ণা তো মেলায় না।
  • শ্রীশ: ভারতবর্ষে সন্ন্যাসধর্ম বলে একটা প্রকান্ড শক্তি আছে; তার ছাই ঝেড়ে, তার ঝুলিটা কেড়ে নিয়ে তার জটা মুড়িয়ে, তাকে সৌন্দর্যে এবং কর্মনিষ্ঠায় প্রতিষ্ঠিত করাই চিরকুমার সভার একমাত্র উদ্দেশ্য।
    • উৎস: চিরকুমার সভা, রবীন্দ্র রচনাবলী, ষষ্ঠ খন্ড; পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক প্রকাশিত ( ফাল্গুন ১৩৯১)

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা