জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর

বাঙালি নাট্যকার, সংগীতস্রষ্টা, সম্পাদক ও চিত্রশিল্পী

জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর (৪ মে ১৮৪৯ - ৪ মার্চ ১৯২৫) ছিলেন একজন বাঙালি নাট্যকার, সংগীতস্রষ্টা, চিত্রশিল্পী, সম্পাদক, অনুবাদক ও সংগঠক। তিনি মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পঞ্চমপুত্র এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অগ্রজ। স্বকীয় প্রতিভা ছাড়াও অন্যান্য প্রতিভাবানদের খুঁজে বের করার বিরল ক্ষমতা ছিল তাঁর। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্যিক জীবনের সূচনা হয় নাটক-প্রহসন রচনার মাধ্যমে। কিঞ্চিৎ জলযোগ (প্রহসন, ১৮৭২), পুরুবিক্রম নাটক (১৮৭৪), সরোজিনী বা চিতোর আক্রমণ নাটক (১৮৭৫), অশ্রুমতি নাটক (১৮৭৯), স্বপ্নময়ী নাটক (১৮৮২), হঠাৎ নবাব (প্রহসন, ১৮৮৪), অলীক বাবু (প্রহসন, ১৯০০) ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা। স্বপ্নময়ী (১৮৮০), বসন্তলীলা (১৯০০), ধ্যানভঙ্গ (ওই) নামে গীতিনাট্য রচনা করেন। নাটকের অনুরূপ সংগীতেও তাঁর সমান কৃতিত্ব ছিল। তাঁর স্বরলিপি গীতিমালা (১৮৯৭) একখানি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। আদি ব্রাহ্মসমাজ কর্তৃক প্রকাশিত ব্রহ্মসংগীত স্বরলিপি গ্রন্থমালায় (১-৬ খন্ড) তাঁর রচিত ৬১টি সংগীত সংকলিত হয়েছে। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনুবাদসাহিত্যগুলি হলো, কালিদাসের অভিজ্ঞানশকুন্তলম্, মালবিকাগ্নিমিত্র, বিক্রমোর্ব্বশী, ভবভূতির মালতী-মাধব ও উত্তর-চরিত, শূদ্রকের মৃচ্ছকটিকম্, মার্কাস অরিলিয়সের আত্মচিন্তা, শেক্সপিয়ারের জুলিয়াস সিজার, বাল গঙ্গাধর তিলকের শ্রীমদ্ভগবদগীতারহস্য অথবা কর্ম্মযোগশাস্ত্র। ১৮৮৯ সালে লালনের জীবদ্দশায় তাঁর একমাত্র চিত্রটি এঁকেছিলেন জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর।

চল রে চল সবে ভারত সন্তান, মাতৃভূমি করে আহ্বান।
–জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর
  • যদি কোন বিষয়ে তুমি দক্ষতা লাভ করিতে চাহ, তাহা হইলে, কাজে তাহা কর; আর যদি কোন বিষয়ে নিবৃত্ত হইতে চাহ, তাহা হইলে, একেবারেই তাহা করিও না।
    • এপিক্‌টেটসের উপদেশ- জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর, পৃষ্ঠা ৪২, প্রকাশক- সান্যাল এণ্ড কোম্পানি, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৪ বঙ্গাব্দ)
  • চল রে চল সবে ভারত সন্তান, মাতৃভূমি করে আহ্বান।
    বীর দর্পে পৌর‍ুষ গর্বে সাধ রে সাধ সবে দেশেরি কল্যাণ
    পুত্র ভিন্ন মাতৃদৈন্য কে করে মোচন?
    উঠ জাগো সবে, বলো মাগো, তব পদে সপিনু পরাণ।
    • চল রে চল সবে ভারত সন্তান, সাহিত্যমেলা, বাংলা, ষষ্ঠ শ্রেণি, প্রকাশক- পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, কলকাতা, পঞ্চম সংস্করণ, ডিসেম্বর ২০১৭, পৃষ্ঠা ১১৮

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা