বিনোদিনী দাসী

ভারতীয় অভিনেত্রী

বিনোদিনী দাসী (১৮৬২ - ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৪১) ছিলেন উনিশ শতকের খ্যাতনাম্নী নাট্যাভিনেত্রী। দারিদ্রের জন্য অল্প বয়সেই সাধারণ রঙ্গালয়ে যোগ দেন। ১৮৭৪ সালের ডিসেম্বরে গ্রেট ন্যাশনাল থিয়েটারে তিনি বারো বছর বয়সে শত্রুসংহার নাটকে দ্রৌপদীর সখীর ছোট একটি চরিত্রে প্রথম অভিনয় করেন। ১৮৭৪ থেকে একটানা ১২ বছর তিনি অভিনয় করেন। ১৮৮৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর তিনি শেষবার অভিনয় করেন। তিনি ৫০টি নাটকে ৬০টিরও বেশি চরিত্রে অভিনয় করেছেন। সমাজের সকল স্তরের মানুষ এমনকি রামকৃষ্ণ পরমহংস, বিবেকানন্দ, বঙ্কিমচন্দ্র, ফাদার লাঁফো, এডুইন আরনল্ড, কর্ণেল অলকট প্রমুখ তার অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়েছিলেন। কবিতা ও গদ্য লেখায় পারদর্শী ছিলেন। বিনোদিনী লিখেছেন তার আত্মজীবনী আমার কথা। তিনি কাব্যগ্রন্থ বাসনা এবং কাব্যোপন্যাস কনক ও নলিনী রচনা করেন। তার নাট্য জীবনের স্মৃতিমূলক গদ্য রচনা ধারাবাহিকভাবে রূপ ও রঙ্গ মাসিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

জ্ঞানী, বিজ্ঞ ব্যক্তিরা লিখেন লোক শিক্ষার জন্য, পরোপকারের জন্য, আমি লিখিলাম, আমার নিজের সান্ত্বনার জন্য, হয় তো প্রতারণা বিমুগ্ধ নরক পথে পদ বিক্ষেপোদ্যতা কোন অভাগিনীর জন্য।
—বিনোদিনী দাসী

উক্তি সম্পাদনা

  • জ্ঞানী, বিজ্ঞ ব্যক্তিরা লিখেন লোক শিক্ষার জন্য, পরোপকারের জন্য, আমি লিখিলাম, আমার নিজের সান্ত্বনার জন্য, হয় তো প্রতারণা বিমুগ্ধ নরক পথে পদ বিক্ষেপোদ্যতা কোন অভাগিনীর জন্য। কেননা আমার আত্মীয় নাই, আমি ঘৃণিতা, সমাজ বর্জ্জিতা, বারবনিতা; আমার মনের কথা বলিবার বা শুনিবার কেহ নাই!
    • আমার কথা (প্রথম খণ্ড) - বিনোদিনী দাসী, পৃষ্ঠা ১০৯-১১০
  • একদিন বঙ্কিম বাবু তাঁহার ‘মৃণালিনী’ অভিনয় দেখিতে আসিয়াছিলেন, সেই সময় আমি ‘মৃণালিনী’তে ‘মনোরমা’র অংশ অভিনয় করিতেছিলাম। মনোরমার অংশ অভিনয় দর্শন করিয়া বঙ্কিম বাবু বলিয়া ছিলেন যে “আমি মনোরমার চরিত্র পুস্তকেই লিখিয়াছিলাম, কখন যে ইহা প্রত্যক্ষ দেখিব তাহা মনে ছিল না, আজ মনোরমাকে দেখিয়া আমার মনে হইল যে আমার মনোরমাকে সামনে দেখিতেছি।”
    • আমার কথা (প্রথম খণ্ড) - বিনোদিনী দাসী, পৃষ্ঠা ৫৫

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

 
উইকিসংকলন
উইকিসংকলনে এই লেখক রচিত অথবা লেখক সম্পর্কিত রচনা রয়েছে: