উইকিউক্তিতে স্বাগত সম্পাদনা

সুপ্রিয় Naima Jannat Tahsin,
উইকিউক্তিতে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি।  
উইকিউক্তি হলো আপনার মত ব্যবহারকারীদের দ্বারা যৌথভাবে তৈরি বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য উক্তিসমূহের মুক্ত অনলাইন সংকলন!

কোনও পরামর্শ বা সহায়তার জন্য নির্দ্বিধায় আলোচনাসভায় যান অথবা আমার আলাপ পাতায় জিজ্ঞাসা করুন। আপনার সম্পাদনা শুভ হোক ও আবারও স্বাগতম!

উইকিউক্তি অভ্যর্থনা কমিটি

১৬:১৩, ৬ এপ্রিল ২০২৪ (ইউটিসি)

সুকুমার রায় সম্পাদনা

(৩০ অক্টোবর ১৮৮৭-১০ সেপ্টেম্বর ১৯২৩) সুকুমার রায়ের একটি মজার গল্পNaima Jannat Tahsin (আলাপ)বোকা বুড়িNaima Jannat Tahsin (আলাপ)


এক ছিল বুড়ো আর এক ছিল বুড়ি। তারা ভারি গরিব। আর বুড়ি বেজায় বোকা আর ভয়ানক বেশি কথা বলে-যেখানে সেখানে যার তার সঙ্গে গল্প জুড়ে দেয়- তার পেটে কোন কথা থাকেনা। বুড়ো একদিন তার জমির চষতে চষতে মাটির নিচে এক কলসি পেল, সেই কলসি ভরা টাকা আর মোহর! তখন তার ভারী ভাবনা হল- এ টাকা যদি ফেলে রাখি, কোনদিন কে চুরি করে নেবে।আর যদি টাকা বাড়ি নিয়ে যাই,বুড়ি টের পেয়ে যাবে-সে সকলের কাছে তার গল্প করবে;ক্রমে কথা রাষ্ট্র হয়ে পড়লে রাজার কোঠাল এসে সব কেড়েকুড়ে নিয়ে যাবে। ভেবে ভেবে সে এক ফন্দি আঁটলো। সে ঠিক করল যে বুড়িকে সব কথা বলব কিন্তু এরকম উপায় করব যাতে বুড়ির কথা কেউ না বিশ্বাস করে। তখন সে একটা মাছ কিনে এনে তার ক্ষেতের ধারে একটা গাছের উপর বেঁধে রাখল, আর একটা খরগোশ এনে নদীর ধারে একটা গর্তের মধ্যে জাল দিয়ে জড়িয়ে রাখল। তারপর তার স্ত্রীকে গিয়ে বললো, "একটা ভারী আশ্চর্য খবর শুনলাম-গাছের ডালে নাকি মাছ ওরে বসে আর খরগোশ নাকি জলে খেলা করে। আমাদের গণক ঠাকুর বলেন-

"মৎস্য বসেন গাছে

জলে খরগোশ নাচে
গুপ্ত রতন খুঁজলে পাবে খুঁড়লে তারি কাছে।"

বুড়ি বলল, "তোমার যেমন কথা!" বুড়ো বলল, "হ্যাঁ! এরকম নাকি সত্যি সত্যি দেখা গেছে।" এই বলে বড় অবাক আবার কাজে বেরোলো। আধঘন্টা না যেতে যেতেই বুড়ো আবার ফিরে এসে ভারি ব্যস্ত হয়ে বুড়িকে সেই টাকা পাওয়ার কথা বলল। তখন বুড়ো-বুড়ি মিলে টাকা আনতে চলল। পথে যেতে যেতে বুড়ো সেই গাছতলায় এসে বলল, "গাছের উপর চকচক করছে কি?"এই বলে সে একটা ঢিল ছুড়তেই মাছটা পড়ে গেল। বুড়ি তো অবাক! তখন বুড়ো বললো, "নদীতে জাল ফেলেছিলাম, মাছ-টাচ পড়লো কিনা দেখে আসি।"জাল টানতেই-ওমা! খরগোশ মে!তখন বুড়ো বললো, "কেমন! গনক ঠাকুরের কথা আর অবিশ্বাস করবে?"তারপর টাকা নিয়ে বাড়ি এলো।

টাকা পেয়েই বুড়ি বলল, "ঘর করব, বাড়ি করব, গহনা বানাবো, পোশাক কিনব।"বুড়ো বলল, "ব্যস্ত হয়ো না- কিছুদিন রয়ে সয়ে দেখো-ক্রমে সবই হবে। হঠাৎ অত কান্ড করলে লোকে সন্দেহ করবে যে।"কিন্তু বুড়ির তাতে মন ওঠে না-সে একে বলে, ওকে বলে; শেষে একবারে কোঠালের কাছে নালিশ করে দিল। কোঠালের হুকুমে বুড়োকে হাতকড়া দিয়ে হাজির করা হলো। 

বুড়ো সব কথা শুনে বলল, "সে কি হুজুর! আমার স্ত্রীর কি মাথার কিছু ঠিক আছে? সে তো ওরকম আবোল তাবোল কত কি বলে।"কোঠাল তখন তেড়ে উঠলেন- "বটে! তুমি টাকা পেয়ে লুকিয়ে রেখেছ-আবার বুড়ির নামে দোষ দিচ্ছ?" বুড়ো বললো,"কিসের টাকা? কবে পেলাম?কোথায় পেলাম? আমি তো কিছুই জানি না।"

বুড়ি বলল,"না তুমি কিছুই জানো না? সেই যেদিন গাছের ডালে মাছ বসেছিল, নদীতে জাল ফেলে খরগোশ ধরলে- সেদিনের কথা তোমার মনে নেই? কচি খোকা আর কি?"

তাই শুনে সবাই হাসতে লাগল; কোটাল এক ধমক দিয়ে বুড়িকে বলল-"যা পাগলি, বাড়ি যা! ফের যদি এসব যা-তা বলবি,তোকে আমি কয়েক করে রাখবো।" বুড়ি তখন বাড়ি ফিরে গেল। কোঠালের ভয়ে সে আর কারু কাছে টাকার কথা বলত না। Naima Jannat Tahsin (আলাপ) ০৭:৫৯, ৭ এপ্রিল ২০২৪ (ইউটিসি)উত্তর দিন