ভগবান

ভারতীয় দার্শনিক ধারণা

ভগবান ( সংস্কৃত: भगवान् ) হল ভারতীয় ধর্মের মধ্যে একটি উপাধি। ঐশ্বর্য, বীর্য, যশ, শ্রী, জ্ঞান ও বৈরাগ্য এ ছয়টি গুণকে ভগ বলে। ঈশ্বরকে যখন এই ছয়টি গুনের অধীশ্বর রূপে আরাধনা করা হয় তখনই তাকে ভগবান বলা হয়। হিন্দুধর্মে এটি দেবতা বা অবতারকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়, বিশেষ করে বৈষ্ণবধর্মে কৃষ্ণের (বিষ্ণুর অবতার) জন্য এবং শৈবধর্মে শিবের জন্য। জৈনধর্মে শব্দটি তীর্থঙ্কর, বিশেষ করে মহাবীর ও বৌদ্ধধর্মে বুদ্ধকে বোঝায়। ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার অনেক অংশে, ভগবান হিন্দুদের কাছে সার্বজনীন ঈশ্বরের বিমূর্ত ধারণার প্রতিনিধিত্ব করে, যারা আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় কিন্তু কোনো নির্দিষ্ট দেবতার উপাসনা করে না।

   

এতে চাংশকলাঃ পুংসঃ কৃষ্ণস্তু ভগবান্ স্বয়ম্।
ইন্দ্রারিব্যাকুলং লোকং মৃড়য়ন্তি যুগে যুগে ৷ ২৮॥

  • অনুবাদ: পূর্বোল্লিখিত এই সমস্ত অবতারেরা হচ্ছেন ভগবানের অংশ অথবা কলা অবতার, কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবান স্বয়ং। যখন নাস্তিকদের অত্যাচার বেড়ে যায়, তখন আস্তিকদের রক্ষা করার জন্য ভগবান এই ধরাধামে অবতীর্ণ হন।
    • শ্রীমদ্ভাগবত, স্কন্ধ ১, অধ্যায় ৩, শ্লোক ২৮; যেমনটা ভক্তিবেদান্ত বুক ট্রাস্ট প্রকাশিত বাংলায় অনুদিত শ্রীমদ্ভাগবতের ১৫৪ পৃষ্ঠায় উদ্ধৃত হয়েছে।


  • পুকুরের জলের ওপরে যখন থাকা যায়, তখন নানা জনের নানা কথা, মানের জন্য জলের শব্দ কানে আসে, জলের ওপর নড়ানড়ির জন্য নানা প্রকার ঢেউ চোখে পড়ে, কিন্তু সেই জলে ডুব দিয়ে যত গভীরে যাওয়া যায়, ততই শব্দ বা কলকলানি আর শোনা যায় না। আর যখন একদম গভীর জলের নিম্নতম প্রদেশে পৌঁছান যায়, তখন আর কোনও শব্দ থাকে না, কোনও ঢেউ থাকে না, শান্ত সমরস ভাসে, তেমনি যখন মনকে সকল দিক থেকে গুটিয়ে নিয়ে অসীম ভাববৈচিত্র্যের আকর ভগবানে ডুবাতে পারবে, তখনই সব বৈচিত্র্যের, সব ভেদের শেষ হবে, সকল ক্ষোভের অবসান হবে।
    • ভাদুড়ী মহাশয় - মহর্ষি নগেন্দ্রনাথশ্রীশ্রী নগেন্দ্র উপদেশামৃত, দ্বিতীয় খণ্ড, শ্রীমদ্ ভক্তিপ্রকাশ ব্রহ্মচারী, আগস্ট ২০১৪, প্রকাশক - অধ্যাপক মনোরঞ্জন ঘোষ, শ্রী সবিতাদেব বন্দ্যোপাধ্যায়, ২ বি রামমোহন রায় রোড, কলকাতা - ৯, পৃষ্ঠা ২০৫

আরও দেখুন

সম্পাদনা


বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা