মা হচ্ছেন একজন নারী, যিনি গর্ভধারণ, সন্তান জন্মদান তথা সন্তানকে বড় করে তোলেন - তিনি অভিভাবকের ভূমিকা পালনে সক্ষম ও মা হিসেবে সর্বত্র পরিচিত। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া[] [] প্রকৃতিগতভাবে একজন নারী বা মহিলারই সন্তান জন্ম দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে। গর্ভধারণের ন্যায় জটিল প্রক্রিয়া এবং মায়ের সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় অবস্থান থেকে এ সংজ্ঞাটি বিশ্বজনীনভাবে গৃহীত হয়েছে। আর বিপরীত লিঙ্গ; পুরুষের রয়েছে বাবা হওয়ার ক্ষমতা।

মায়ের কোলে সন্তান
  • সন্তান ভালােবাসবার আগে মাকে জিগ্যেস করে না, মা তুমি কি রূপসী, বা তুমি কি বিদুষী, বা তােমার ক্যাশবাক্সে কতাে টাকা আছে, বা তােমার স্বামী কি চাকরি করে? তার মা আছে এই তার ঐশ্বর্য। তার ভুবনজোড়া শান্তি।
  • খোকা মাকে শুধায় ডেকে,___'এলেম আমি কোথা থেকে
    কোনখানে তুই কুড়িয়ে পেলি আমারে?'
    মা শুনে কয় হেসে কেঁদে ___ খোকারে তার বুকে বিঁধে -
    'ইচ্ছা হয়ে ছিলি মনের মাঝারে।।[২]
    • জন্মকথা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
  • যেখানেতে দেখি যাহা
    মা-এর মতন আহা
    একটি কথায় এত সুধা মেশা নাই,
    মায়ের মতন এত
    আদর সোহাগ সে তো
    আর কোনোখানে কেহ পাইবে না ভাই।
    • মা। ঝিঙে ফুল। নজরুল-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড)। জন্মশতবর্ষ সংস্করণ। বাংলা একাডেমি। পৃষ্ঠা ৯। আইএসবিএন ৯৮৪০৭৫৩৬৭৩
  • মার বড়ো কেউ নাই –
    • মা। ঝিঙে ফুল। নজরুল-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড)। জন্মশতবর্ষ সংস্করণ। বাংলা একাডেমি। পৃষ্ঠা ৯। আইএসবিএন ৯৮৪০৭৫৩৬৭৩
  • দিবানিশি ভাবনা
    কীসে ক্লেশ পাব না,
    কীসে সে মানুষ হব, বড়ো হব কীসে;
    বুক ভরে ওঠে মার
    ছেলেরই গরবে তাঁর,
    সব দুখ সুখ হয় মায়ের আশিসে।
    • মা। ঝিঙে ফুল। নজরুল-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড)। জন্মশতবর্ষ সংস্করণ। বাংলা একাডেমি। পৃষ্ঠা ৯। আইএসবিএন ৯৮৪০৭৫৩৬৭৩
  • গা-টি গরম হলে
    মা সে চোখের জলে
    ভেসে বলে, ‘ওরে জাদু কী হয়েচে বল!’
    কত দেবতার ‘থানে’
    পিরে মা মানত মানে –
    মাতা ছাড়া নাই কারও চোকে এত জল।
    • মা। ঝিঙে ফুল। নজরুল-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড)। জন্মশতবর্ষ সংস্করণ। বাংলা একাডেমি। পৃষ্ঠা ৯। আইএসবিএন ৯৮৪০৭৫৩৬৭৩
  • তখন সে মা আমার
    চুমু খেয়ে বারবার
    চাপিতেন বুকে, শুধু একটি চাওয়ায়
    বুঝিয়া নিতেন যত
    আমার কী ব্যথা হত,
    বলো কে এমন স্নেহে বুকটি ছাওয়ায়!
    • মা। ঝিঙে ফুল। নজরুল-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড)। জন্মশতবর্ষ সংস্করণ। বাংলা একাডেমি। পৃষ্ঠা ৯। আইএসবিএন ৯৮৪০৭৫৩৬৭৩
  • কত করি উৎপাত
    আবদার দিন রাত,
    সব সন হাসি মুখে, ওরে সে যে মা!
    আমাদের মুখ চেয়ে
    নিজে রন নাহি খেয়ে,
    শত দোষে দোষী তবু মা তো ত্যজে না।
    • মা। ঝিঙে ফুল। নজরুল-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড)। জন্মশতবর্ষ সংস্করণ। বাংলা একাডেমি। পৃষ্ঠা ৯। আইএসবিএন ৯৮৪০৭৫৩৬৭৩
  • হেরিলে মায়ের মুখ
    দূরে যায় সব দুখ,
    মায়ের কোলেতে শুয়ে জুড়ায় পরান,
    মায়ের শীতল কোলে
    সকল যাতনা ভোলে
    কত না সোহাগে মাতা বুকটি ভরান।
    • মা। ঝিঙে ফুল। নজরুল-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড)। জন্মশতবর্ষ সংস্করণ। বাংলা একাডেমি। পৃষ্ঠা ৯। আইএসবিএন ৯৮৪০৭৫৩৬৭৩
  • আমাদের মাকে আমরা বলতাম তুমি, বাবাকে আপনি।...
    মাকে আপনি বলার কথা আমাদের কোনোদিন মনেই হয়নি।
    আমাদের মা আমাদের থেকে বড় ছিলো, কিন্তু ছিলো আমাদের সমান,
    আমাদের মা ছিলো আমাদের শ্রেনীর, আমাদের বর্ণের, আমাদের গোত্রের।
    • আমাদের মা। কাফনে মোড়া অশ্রুবিন্দু। কাব্যসংগ্রহ। হুমায়ূন আজাদ। আগামী প্রকাশনী। পৃষ্ঠা ২১৩। আইএসবিএন ৯৮৪৪০১৪৭০০
  • আমাদের মা ছিলো অশ্রুবিন্দু — দিনরাত টলমল করতো
    আমাদের মা ছিলো বনফুলের পাপড়ি — সারাদিন ঝ'রে ঝ'রে পড়তো
    আমাদের মা ছিলো ধানখেত — সোনা হয়ে দিকে দিকে বিছিয়ে থাকতো।
    আমাদের মা ছিলো দুধভাত — তিন বেলা আমাদের পাতে ঘন হয়ে থাকতো।
    আমাদের মা ছিলো ছোট্ট পুকুর — আমরা তাতে দিনরাত সাঁতার কাটতাম।
    • আমাদের মা। কাফনে মোড়া অশ্রুবিন্দু। কাব্যসংগ্রহ। হুমায়ূন আজাদ। আগামী প্রকাশনী। পৃষ্ঠা ২১৩। আইএসবিএন ৯৮৪৪০১৪৭০০
  • মাটির দাওয়ায় খুদে মাস্টার ক্লাস সিক্সের গুটুলি
    হাতে বেত নেই, তর্জনি তোলা, নাকের ডগায় চশমা...
    ছাত্রী মাত্র একটিই, তার মন নেই পড়াশুনোয়
    ছটফটে ভাব, পালাবার তাল, বড় চঞ্চল চাহনি...
    কাতর গলায় জানাল, ‘গুটুলি, এবার আমায় ছেড়ে দে?’...
    কড়া মাস্টার গুটুলি কিছুতে ছাত্রীকে ছুটি দেবে না
    মাতৃভাষাটা মাকে শেখাবেই ক্লাস সিক্সের ছেলেটা!
    • একটি গ্রাম্য দৃশ্য। ভোরবেলার উপহার। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। আনন্দ পাবলিশার্স। দ্বিতীয় মুদ্রণ: জুন ২০১৪। পৃষ্ঠা ৬৪। আইএসবিএন ৮১৭২১৫৯৬১৭
  • আমার মায়ের চোখে আমি ছাড়া য্যানো পৃথিবীর কোন সুন্দর-ই
    সহজে লাগে না আর তার কাছে
  • আপনি যদি আপনার মায়ের গর্ভে ফিরে যেতে না পারেন তবে আপনাকে ভাল যোদ্ধা হতে শিখতে হবে।
    • রেড আজালিয়া, আচি মিন
  • যার মা আছে সে কখনই গরীব নয়।
  • আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দরী মহিলা হলেন আমার মা। মায়ের কাছে আমি চিরঋণী। আমার জীবনের সমস্ত অর্জন তারই কাছ থেকে পাওয়া নৈতিকতা, বুদ্ধিমত্তা আর শারীরিক শিক্ষার ফল।
  • সন্তানেরা ধারালো চাকুর মত। তারা না চাইলেও মায়েদের কষ্ট দেয়। আর মায়েরা তাদের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত সন্তানদের সাথে লেগে থাকে।
    • জোয়ান হেরিস
  • আমার বসার ঘরের দেয়ালে আমার মায়ের ছবি টাঙানো আছে, কারণ তিনিই আমার কাছে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ।
  • কোন একটা বিষয় মায়েদেরকে দুইবার ভাবতে হয়-একবার তার সন্তানের জন্য আরেকবার নিজের জন্য।
    • সোফিয়া লরেন
  • আমাদের পরিবারে মায়ের ভালোবাসা সবসময় সবচেয়ে টেকসই শক্তি। আর তার একাগ্রতা, মমতা আর বুদ্ধিমত্তা আমাদের মধ্যে দেখে আনন্দিত হই।
    • মিশেল ওবামা
  • মা আমাদের সবসময় এটা বুঝাতে চাইতেন যে জীবনের চরম কষ্টের মূহুর্তগুলো তোমাদের হাসির কোন গল্পের অংশ হয়ে যাবে এক সময়।
    • নোরা এফ্রন
  • সম্ভবত আমার দেখা সবচেয়ে আবেদনময়ী আমার মা।
    • শিয়া লাবেউফ
  • আমার মা মনে করেন আমিই সেরা আর মা মনে করেন বলেই আমি সেরা হয়ে গড়ে উঠেছি।
    • দিয়াগো ম্যারাডোনা
  • তুমি আমাকে শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাকে শিক্ষিত জাতি দিবো।
    • নেপোলিয়ন বোনাপার্ট
  • মা হল পৃথিবীর একমাত্র ব্যাংক, যেখানে আমরা আমাদের সব দুঃখ, কষ্ট জমা রাখি এবং বিনিময়ে নেই বিনাসূদে অকৃত্রিম ভালোবাসা।
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • মা যেমন তাঁর নিজ পুত্রকে নিজের জীবন দিয়ে রক্ষা করে তেমনি সকল প্রাণীর প্রতি অপরিমেয় মৈত্রীভাব পোষণ করবে।
    • গৌতম বুদ্ধ
  • মায়ের অভিশাপ কখনো সন্তানের গায়ে লাগেনা। দোয়া গায়ে লাগে, অভিশাপ গায়ে লাগেনা। হাঁসের গায়ের পানির মত অভিশাপ ঝরে পড়ে যায়।
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • অসংখ্য কষ্ট, যন্ত্রণা পেয়েও মেয়েরা মায়ারটানে একটা ভালোবাসা, একটা সম্পর্ক, একটা সংসার টিকিয়ে রাখতে চায়। এই জন্য মেয়েরা মায়াবতী আর মায়াবতীর কোনো পুরুষবাচক শব্দ নেই।
    • হুমায়ূন আহমেদ

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "seahorse"Britannica Kids (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-০৭ 
  2. US Department of Commerce, National Oceanic and Atmospheric Administration। "Seahorses and their first cousins, sea dragons, are the only species in which the male gets pregnant and gives birth."oceanservice.noaa.gov (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-০৭