মাতৃভাষা

একজন ব্যক্তি জন্ম থেকে যে ভাষায় কথা বলে বড় হয়েছে

মাতৃভাষা হলো সেই ভাষা যে ভাষায় একজন ব্যক্তি জন্ম থেকে কথা বলে বড় হয়েছেন। মাতৃভাষাকে প্রাথমিক ভাষা বা নিজস্ব ভাষাও বলা হয়। তবে পরিভাষাটির সংজ্ঞা পুরোপুরি পরিষ্কার নয়। মাতৃভাষা মানে মায়ের ভাষা অর্থাৎ এমন কোন ভাষা যা শিশুর বিকাশের জন্য মায়ের মতই গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ যে ভাষায় কথা বলতে সবচেয়ে বেশি পারদর্শী, যে ভাষাটি সে তার পিতামাতা বা অভিভাবকের কাছ থেকে ছোটবেলায় শেখে। একটি শিশুর মাতৃভাষা তার ব্যক্তিগত, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের অংশ। মাতৃভাষা সফলভাবে কাজ ও কথা বলার সামাজিক ধরনকে প্রতিফলন ঘটাতে সাহায্য করে।

২০০৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্তম্ভের উদ্বোধন।
  • মাতৃভাষা নামটা আজকাল আমরা ব্যবহার করে থাকি, এ নামও পেয়েছি আমাদের নতুন শিক্ষা থাকে। ইংরেজিতে আপন ভাষাকে বলে মাদার টাঙ্গ্‌, মাতৃভাষা তারই তর্জমা। এমন দিন ছিল যখন বাঙালি বিদেশে গিয়ে আপন ভাষাকে অনায়াসেই পুরোনো কাপড়ের মতো ছেড়ে ফেলতে পারত; বিলেতে গিয়ে ভাষাকে সে দিয়ে আসত সমুদ্রে জলাঞ্জলি, ইংরেজভাষিণী অনুচরীদের সঙ্গে রেখে ছেলেমেয়েদের মুখে বাংলা চাপা দিয়ে তার উপরে ইংরেজির জয়পতাকা দিত সগর্বে উড়িয়ে। আজ আমাদের ভাষা এই অপমান থেকে উদ্ধার পেয়েছে, তার গৌরব আজ সমস্ত বাংলাভাষীকে মাহাত্ম্য দিয়েছে।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাংলাভাষা পরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫৬ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৬-৩৭
  • বাংলা আমার মাতৃভাষা
    বাংলা জন্মভূমি।
    গঙ্গা পদ্মা যাচ্ছে ব'য়ে,
    যাহার চরণ চুমি।
  • কবির মাতৃভাষা যদি বাঙ্গলা হয় তবে বাঙ্গলা খুব ভাল ক’রে না শিখলে ইংরেজ সেটি বোঝে না; তেমনি ছবির ভাষা অভিনয়ের ভাষা এসবেও দ্রষ্টার চোখ দোরস্ত না হলে মুস্কিল।
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশনা সংস্থা, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দ (১৩৪৮ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৫৪
  • মাতৃভাষা ছাড়া কোনো জাতির উন্নতি করা সম্ভব নয়।

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা