বাঙালি জাতি
বাঙালি জনগোষ্ঠী
বাঙালি জাতি বা বাঙ্গালি জাতি একটি সংকর জাতি ও দক্ষিণ এশিয়ায় বসবাসকারী আদিতম মানবগোষ্ঠীসমূহের মধ্যে একটি। প্রায় ১৫০০ বছর আগে আর্য-অনার্য মিশ্রিত প্রাকৃত ভাষা থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে আধুনিক বাংলা ভাষা এবং ব্রাহ্মী লিপি থেকে সিদ্ধম লিপির মাধ্যমে আধুনিক বাংলা লিপির সৃষ্টি হয়েছে। পরবর্তীকালে অষ্ট্রিক ও নিগ্রিটো জাতির মানুষ এসে মিশেছে। বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়খন্ড, আসাম, ত্রিপুরা, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের বাইরেও, মধ্যপ্রাচ্য, জাপান, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইত্যাদি সহ সারাবিশ্বে অনেক প্রবাসী বাঙালি আছেন।
উক্তি
সম্পাদনা- আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি।
- মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। ১৯৪৮ সালে পূর্ব পাকিস্তান সাহিত্য সম্মেলনে সভাপতির অভিভাষণে মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বলেছিলেন। [১]
- তবে তুমি বুঝি বাঙালি জাতির ইতিহাস শোনো নাই-
‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।’
একসাথে আছি, একসাথে বাঁচি, আজো একসাথে থাকবোই
সব বিভেদের রেখা মুছে দিয়ে সাম্যের ছবি আঁকবোই।- সৈয়দ শামসুল হক। "আমার পরিচয়" কবিতার অংশ।
- বাঙালি যেদিন ঐক্যবদ্ধ হয়ে বলতে পারবে ‘বাঙালির বাংলা’ সেদিন তারা অসাধ্য সাধন করবে।
- কাজী নজরুল ইসলাম। ‘বাঙালির বাংলা’ প্রবন্ধ, নজরুল-রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ, সপ্তম খণ্ড, প্রকাশক- বাংলা একাডেমী, ঢাকা, পৃষ্ঠা ৫৬
- "বাঙালির ঐক্যের প্রতীক নজরুল"। ভোরের কাগজ। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-১০।
- কাজী নজরুল ইসলাম। ‘বাঙালির বাংলা’ প্রবন্ধ, নজরুল-রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ, সপ্তম খণ্ড, প্রকাশক- বাংলা একাডেমী, ঢাকা, পৃষ্ঠা ৫৬
- বাংলার হিন্দু, বাংলার বৌদ্ধ,
বাংলার খ্রিষ্টান, বাংলার মুসলমান,
আমরা সবাই বাঙালি।
- বাঙালি আজ যা ভাবে, ভারত তা ভাবে আগামীকাল।
- বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে গোপালকৃষ্ণ গোখলে বাঙালি জাতি সম্পর্কে এই উক্তিটি করেন। [৩]
- বাঙালিকে, বাঙালির ছেলেমেয়েকে ছেলেবেলা থেকে শুধু এই এক মন্ত্র শেখাও :
এই পবিত্র বাংলাদেশ
বাঙালির-আমাদের।
দিয়া প্রহারেণ ধনঞ্জয়
তাড়াব আমরা, করি না ভয়
যত পরদেশি দস্যু ডাকাত
রামাদের গামাদের।
বাংলা বাঙালির হোক! বাংলার জয় হোক। বাঙালির জয় হোক।- কাজী নজরুল ইসলাম। 'বাঙালির বাংলা’ প্রবন্ধ।[৪]
- হিন্দু-মুসলমান মিলিত বাঙালি জাতি গড়িয়া তুলিতে বহু অন্তরায় আছে, কিন্তু তাহা যে করিতেই হইবে।
- বাংলা ভাষার উৎপত্তির সঙ্গে সঙ্গে বাঙালী জাতির ইতিহাস শুরু।
- দেশ তো রাজনৈতিকভাবে ভাগ হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের সংস্কৃতি অখণ্ড ও অবিভাজ্য। গঙ্গার পানির অধিকার যেমন দুই বাংলার মানুষ চায়, তেমনি বাংলা সংস্কৃতির অধিকারও দুই বাংলার মানুষের। এই ঐতিহ্য-চেতনা যদি সারা পৃথিবীর বাংলাভাষী মানুষের মধ্যে জাগানো যায় ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত হতে পারে, হাজার বছরের অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতির ভিত্তিতে একটি কালচারাল নেশন বা সাংস্কৃতিক জাতি গড়ে তুলতে পারে, তাহলে তারা হয়তো বাঙালির মুক্তি আনতে পারে। এই অসাম্প্রদায়িক বাঙালি সাংস্কৃতিক জাতি পরবর্তীকালে অবিভক্ত স্বাধীন বাংলাদেশের সীমানা চিহ্নিত করবে।
- আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর সাথে সত্যজিৎ রায় বলেছিলেন। [৭]
- এটা ১৯৪৭ সালের কথা। তখন আমি মিস্টার সোহরাওয়ার্দীর দলে ছিলাম। তিনি এবং শরৎচন্দ্র বসু একটি অখন্ড বাংলা চান। আমিও চাই সকল বাঙালির জন্য একটি দেশ। বাঙালিরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কী না করতে পারত! তারা বিশ্ব জয় করতে পারত।
- অন্নদাশঙ্কর রায়ের এক প্রশ্নের উত্তরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এটি বলেছিলেন।[৮]
- অবশ্যই বাঙালিদেরকে শাসন করা পুরো ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন কাজ ছিল।
- হেনরি কিসিঞ্জার। গ্যারি জে. বাস (২০১৪) : দ্য ব্লাড টেলিগ্রাম: নিক্সন, কিসিঞ্জার এন্ড অ্যা ফরগেটেন জেনোসাইড।
- পরিচয়ে আমি বাঙালি, আমার আছে ইতিহাস গর্বের-
কখনোই ভয় করিনাকো আমি উদ্যত কোনো খড়গের।
শত্রুর সাথে লড়াই করেছি, স্বপ্নের সাথে বাস;
অস্ত্রেও শান দিয়েছি যেমন শস্য করেছি চাষ;
একই হাসিমুখে বাজায়েছি বাঁশি, গলায় পরেছি ফাঁস;
আপোষ করিনি কখনোই আমি- এই হ’লো ইতিহাস।- সৈয়দ শামসুল হক। "আমার পরিচয়" কবিতার অংশ।
- আমি বিশ্বাস করি বাঙ্গালীরা কোন কালেই জমির কণার উপর কর্তৃত্ব করেনি। যে পদ্ধতির মাধ্যমে একটি বিদেশী জাতি অন্য জাতির উপর তার শাসন বজায় রাখতে পারে সে সম্পর্কে তারা সম্পূর্ণরূপে অজ্ঞ।
- সাইয়েদ আহমেদ খান। আওয়াতানস কুমারের জানু. ২৭, ২০১৮ সালের After a Century it is time to revisit Sir Syed Ahmad Khan’s legacy নিবন্ধ থেকে উদ্ধৃত। এছাড়াও রুদ্রংশু মুখার্জির দ্য গ্রেট স্পিচেস অফ মডার্ন ইন্ডিয়াতে উদ্ধৃত করা হয়েছে।
- আমি মনে করি, বাঙালিরা খুব ভালো যোদ্ধা নয়।
- হেনরি কিসিঞ্জার। গ্যারি জে. বাস (২০১৪) : দ্য ব্লাড টেলিগ্রাম: নিক্সন, কিসিঞ্জার এন্ড অ্যা ফরগেটেন জেনোসাইড।
- ভাঙিল না ঘুম ঘোর, পোহালো না রাতি
অজ্ঞান তিমিরে পড়ি আজও বঙ্গজাতি
জননীর খুন ধারা অশু হয়ে ঝরে
দুঃখীর আজান কেহ শুনে না অন্তরে- সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। "পূর্ব-পশ্চিম" উপন্যাস থেকে [৯]
আরও দেখুন
সম্পাদনাউইকিপিডিয়ায় বাঙালি জাতি সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।