রক্ত
রক্ত হলো প্রাণীদেহের সংবহনে অংশগ্রহণকারী এক বিশেষধরনের তরল যোগকলা। প্রধানত মেরুদণ্ডী প্রাণীর রক্তকণিকায় হিমোগ্লোবিন থাকে বলে রক্ত লালবর্ণের হয়। এই বিশেষ শারীরিক তরলটি শরীরের কলাকোষে অক্সিজেন ও খাদ্যসরবরাহ করে এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড ও নাইট্রোজন ঘটিত বর্জ্য পদার্থ কলা থেকে অপসারিত করতে সাহায্য করে।
উক্তি
সম্পাদনা- যেখানে কাটে সেখান দিয়ে তো রক্ত বেরোবেই কিন্তু ক্রমাগতই যদি রক্ত বের হতে থাকে, তা হলে সে তো বড়ো মারাত্মক কথা—তাই শরীর প্রথমেই চেষ্টা করে রক্ত থামাতে। রক্ত থামাবার উপায়টিও বড়ো চমৎকার; রক্তটা বাইরে এসে আপনা থেকেই কাটা ঘায়ের মুখে ছিপির মতো জমাট বেঁধে যায়।
- সুকুমার রায়, আশ্চর্য প্রহরী, সুকুমার রায় সমগ্র রচনাবলী, দ্বিতীয় খণ্ড, সম্পাদনা- পুণ্যলতা চক্রবর্তী ও কল্যাণী কার্লেকর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৮৫
- এমন একপ্রকার কাতর স্বরে মেয়েটি জিজ্ঞাসা করিল ‘এত রক্ত কেন’, যে, রাজারও হৃদয়ের মধ্যে ক্রমাগত এই প্রশ্ন উঠিতে লাগিল ‘এত রক্ত কেন!’ তিনি সহসা শিহরিয়া উঠিলেন।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রাজর্ষি, দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ, রাজর্ষি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৮ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮-৯
- স্বাধীন হবে ভারতবর্ষ থাকবে না বন্ধন,
আমরা সবাই স্বরাজ-যজ্ঞে হব রে ইন্ধন?
বুকের রক্ত দিব ঢালি স্বাধীনতারে,
রক্ত পণে মুক্তি দেব ভারত-মাতারে।- সুকান্ত ভট্টাচার্য, সুকান্ত সমগ্র- সুকান্ত ভট্টাচার্য, প্রকাশক- সারস্বত লাইব্রেরী, প্রকাশসাল- ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৮৮
- গোরু পাখী মাছ প্রভৃতি মেরুদণ্ডযুক্ত প্রাণীদের রক্ত লাল। ইহা ছাড়া অপর প্রাণীদের রক্তের বিশেষ রঙ্ নাই। চিংড়ি মাছের শরীরে রক্ত আছে, কিন্তু সে রক্ত রাঙা নয়—প্রায় জলের মত বর্ণহীন। এই রক্ত চিংড়ির কান্কোর সেই পালকের মত অংশের ভিতর দিয়া চলা-ফেরা করে এবং তাহাই জলে-মিশানো বাতাসের অক্সিজেন শুষিয়া লয়।
- জগদানন্দ রায়, চিংড়ির শ্বাস-প্রশ্বাস, পোকা-মাকড়- জগদানন্দ রায়, দ্বিতীয় সংস্করণ, প্রকাশক- ইণ্ডিয়ান প্রেস লিমিটেড, এলাহাবাদ, প্রকাশসাল- ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১২৮-১২৯
- ছিঁচ্কাঁদুনে নাকে ঘা,
রক্ত পড়ে চেটে খা।- যোগীন্দ্রনাথ সরকার, ছিঁচ্কাঁদুনে, খুকুমণির ছড়া - যোগীন্দ্রনাথ সরকার, প্রকাশক- সিটি বুক সোসাইটি, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দ (১৩০৬ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১২৯
- তোমার শিরায় আর আমার শিরায় একই রক্ত বহিতেছে, একই পিতা একই পিতামহের রক্ত—তুমি সেই রক্তপাত করিতে চাও করো, কিন্তু মনুষ্যের আবাসস্থলে করিয়ো না। কারণ, যেখানে এই রক্তের বিন্দু পড়িবে, সেইখানেই অলক্ষ্যে ভ্রাতৃত্বের পবিত্র বন্ধন শিথিল হইয়া যাইবে।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রাজর্ষি, দশম পরিচ্ছেদ, রাজর্ষি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৮ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৪১
- জাতির রক্তস্রোত যেন ক্ষীণ হইয়া আসিতেছে; এখন চাই নৃতন রক্ত। ভারতে বহুবার রক্ত সংমিশ্রণ ঘটিয়াছে। এই রক্ত সংমিশ্রণের ফলে ভারতীয় জাতি বার বার মৃত্যুর মুখে পতিত হইয়া পুনর্জ্জীবন লাভ করিয়াছে।
- সুভাষচন্দ্র বসু, নেতাজীর জীবনী ও বাণী - নৃপেন্দ্রনাথ সিংহ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১১৫-১১৬
- আদাড়ের মশা পাঁদাড়ের মশা
জুটেছে মানস-সরে,
রক্ত-পদ্মে রক্ত না পেয়ে
ছেঁকে ধরে মধুকরে!- সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, বর্ষার মশা, বিদায়-আরতি- সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, চতুর্থ সংস্করণ, প্রকাশক- আর, এইচ, শ্রীমানী এণ্ড সন্স, পৃষ্ঠা ৪০
- নাগ-কেশরের ঝরা কেশর ধূলার সাথে মিতা।
গোধূলি সে রক্ত আলোয় জ্বালে আপন চিতা।- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কেন আমায় পাগল করে, প্রবাহিণী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮৪
- বিপদ আসিলে কাছে, হও আগুয়ান,
নাই কি শরীরে তবে রক্ত মাংস প্রাণ?
হাত পা সবারি আছে, মিছে কেন ভয়,
চেতনা রয়েছে যায়, সে কি পড়ে রয়?- কুসুমকুমারী দাশ, কুসুমকুমারী দাসের কবিতা - সুমিতা চক্রবর্তী সম্পাদিত, প্রকাশক- ভারবি, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ : আশ্বিন ১৪০৮, সেপ্টেম্বর ২০০১, পৃষ্ঠা ৩৩
- কারার ঐ লৌহ-কবাট
ভেঙে ফেল, কর রে লোপাট
রক্ত-জমাট
শিকল পূজোর পাষাণ-বেদী!- কাজী নজরুল ইসলাম, ভাঙ্গার গান কাব্যগ্রন্থ, নজরুল-রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ, প্রথম খণ্ড, প্রকাশক- বাংলা একাডেমী, ঢাকা, পৃষ্ঠা ১৫৯
- যে-সকল মশা আমাদের রক্ত খাইতে আইসে তাহারা সকলেই স্ত্রী-মশা। পুরুষ-মশা নিরীহ লোক; সে ফুলের মধু খাইয়া জীবন ধারণ করে। উহাদের স্ত্রী পুরুষের মুখের গঠনেরও কতকটা তফাত আছে।
- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, মশা, বিবিধ প্রবন্ধ, উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, প্রকাশক- বসাক বুক স্টোর প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রকাশসাল-১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮৪১
- গান্ধারী বললেন, বৃকোদর, তুমি দুঃশাসনের রুধির পান ক’রে অতি গর্হিত অনার্যোচিত নিষ্ঠুর কর্ম করেছ। ভীম বললেন, রক্ত পান করা অনুচিত, নিজের রক্ত তো নয়ই। দ্রাতার রক্ত নিজের রক্তেরই সমান। দুঃশাসনের রক্ত আমার দন্ত ও ওষ্ঠের নীচে নামে নি, শুধু আমার দুই হস্তই রক্তাক্ত হয়েছিল। যখন দুঃশাসন দ্রৌপদীর কেশাকর্ষণ করেছিল তখন আমি যে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম তাই আমি ক্ষত্রধর্মানুসারে পালন করেছি।
- কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস, জলপ্রাদানিকপর্বাধ্যায়, অনুবাদক- রাজশেখর বসু, মহাভারত - রাজশেখর বসু, প্রকাশক- এম. সি. সরকার এন্ড সন্স লিমিটেড, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৫৪৯
- আমরা মশা মারি···যৎসামান্য রক্ত সে খায়, তা জেনেও।
- মাক্সিম গোর্কি, মা - ম্যাক্সিম গোর্কি, অনুবাদক- বিমল সেন, প্রকাশক- বর্মণ পাবলিশিং হাউস, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫৭ বঙ্গাব্দ),পৃষ্ঠা ৯৬
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাউইকিপিডিয়ায় রক্ত সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।
উইকিঅভিধানে রক্ত শব্দটি খুঁজুন।
উইকিমিডিয়া কমন্সে রক্ত সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে।