সুকান্ত ভট্টাচার্য
সুকান্ত ভট্টাচার্য (১৫আগস্ট, ১৯২৬ - ১৩ মে, ১৯৪৭) বাংলা সাহিত্যে প্রগতিশীল ভাবধারার তরুণ কবি। তিনি এক নিম্নবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মার্কসবাদী চেতনায় আস্থাশীল কবি হিসেবে সুকান্ত কবিতা লিখে বাংলা সাহিত্যে স্বতন্ত্র স্থান করে নেন। তিনি ছিলেন গণমানুষের কবি। অসহায়-নিপীড়িত সর্বহারা মানুষের সুখ, দুঃখ তার কবিতার প্রধান বিষয়। যাবতীয় শোষণ-বঞ্চনার বিপক্ষে তিনি বার বার দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন। মানবিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলা কাব্যধারার প্রচলিত প্রেক্ষাপটকে আমূল বদলে দিতে পেরেছিলেন। তার কবিতায় অনাচার ও বৈষ্যমের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিবাদ পাঠকদের সচেতন করে তোলে। মাত্র একুশ বছর সুকান্ত পৃথিবীতে বেঁচে ছিল। আবির্ভাবের প্রায় সঙ্গে সঙ্গে বাংলা সাহিত্য সুকান্তকে আশ্চর্য প্রতিভা ব’লে স্বীকৃতি দিয়েছিল। কিন্তু ঠিক বিকশিত হওয়ার মুখেই সেই আশ্চর্য প্রতিভার জীবনপ্রদীপ নিভে যায়।
উক্তি
সম্পাদনা- প্রয়ােজন নেই কবিতার স্নিগ্ধতা—
কবিতা তােমায় দিলাম আজকে ছুটি,
ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়ঃ
পূর্ণিমা-চাঁদ যেন ঝল্সানাে রুটি।।- হে মহাজীবন, ছাড়পত্র- সুকান্ত ভট্টাচার্য, প্রকাশক- সারস্বত লাইব্রেরী, কলিকাতা, পুনর্মুদ্রণ- জ্যৈষ্ঠ ১৩৬২, পৃষ্ঠা ৭৪
- রানার! রানার!
এ বােঝা টানার দিন কবে শেষ হবে?
রাত শেষ হ’য়ে সূর্য উঠবে কবে?
ঘরেতে অভাব; পৃথিবীটা তাই মনে হয় কালাে ধোঁয়া,
পিঠেতে টাকার বােঝা, তবু এই টাকাকে যাবে না ছোঁয়া,- রানার, ছাড়পত্র- সুকান্ত ভট্টাচার্য, প্রকাশক- সারস্বত লাইব্রেরী, কলিকাতা, পুনর্মুদ্রণ- জ্যৈষ্ঠ ১৩৬২, পৃষ্ঠা ৬৪
- আর মনে ক'রো আকাশে আছে এক ধ্রুব নক্ষত্র
নদীর ধারায় আছে গতির নির্দেশ,
অরণ্যের মর্মরধ্বনিতে আছে আন্দোলনের ভাষা,
আর আছে পৃথিবীর চিরকালের আবর্তন।- ঐতিহাসিক, ছাড়পত্র- সুকান্ত ভট্টাচার্য, প্রকাশক- সারস্বত লাইব্রেরী, কলিকাতা, পুনর্মুদ্রণ- জ্যৈষ্ঠ ১৩৬২, পৃষ্ঠা ৫৪
সুকান্ত ভট্টাচার্যকে নিয়ে উক্তি
সম্পাদনা- সুকান্ত কাগজের মানুষ নয়, রক্তমাংসের মানুষ। তার আত্মবিশ্বাস কখনও কখনও অহমিকাকে স্পর্শ করে, তার যুক্তি কখনও কখনও আবেগে ভেঙে পড়ে।