শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনা ওয়াজেদ (জন্ম: ২৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৭) বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তিনি বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদের সরকারদলীয় প্রধান ছিলেন এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে দায়িত্ব পালন করা প্রধানমন্ত্রী।

অসুস্থ হলে আমাকে বিদেশে নিবেন না, আমি দেশের মাটিতেই চিকিৎসা নিব।
  • এখন থেকে লেথাল উইপন (প্রাণঘাতী মারণাস্ত্র) ব্যবহার করবে, যেটারে পাবে সেটারে গুলি করবে। যেখানে গেদারিং দেখবে সেখানে ওপর থেকে.. হেলিকপ্টার থেকে গুলি করবে, এখন ওপর থেকে করাচ্ছি (গুলি), অলরেডি শুরু হয়ে গেছে, র্যাবকে আমার নির্দেশনা দেওয়া আছে।
    • কোটা আন্দোলনের সময় এক প্রতিরক্ষা বা পুলিশ অফিসারের সঙ্গে ফোনালাপে, ১৮ জুলাই ২০২৪, ভাইরাল অডিও, "ফেস দ্য পিপল" এর উইটিউব পাতায় ৮ ই মার্চ ২০২৫ এ প্রকাশিত [১][২][৩]
  • আমি কোনো প্রতিদান চাই না। প্রতিদানের কী আছে? আর কারও কাছে চাওয়ার অভ্যাস আমার একটু কম। দেয়ার অভ্যাস বেশি।’ আমরা ভারতকে যা দিয়েছি, সেটা ভারত সারা জীবন মনে রাখবে ‘প্রতিদিনের বোমাবাজি, গুলি, আমরা শান্তি ফিরিয়ে দিয়েছি। এটা তাদের মনে রাখতে হবে। কাজেই আমরা কোনো প্রতিদান চাই না।’ আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য সরকারের আমলের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ভারতে বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকাণ্ড চলছিল। তখনকার সরকারগুলো এদেরকে মদদ দিয়েছে। আমরা সেটাও বন্ধ করেছি। আমার দেশের মাটি কোনো মতেই অন্য কোনো দেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যবহার হতে পারবে না।’ ‘কারণ, তার প্রভাব আমার দেশেও পড়ে। আপনারা ভুলে যান ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান? এটা তো একটা কনসাইনমেন্ট ধরা পড়েছে। আরো কত যে এভাবে চোরাচালান হতো তার ঠিক আছে? এ জন্য আমার দেশের মানুষকে খেসারত দিতে হয়নি? কতবার ধরা পড়েছে?’ বিএনপি সরকারের আমলে নওগাঁর কাছাকাছি ট্রাক ভরা বিস্ফোরক ধরা পড়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা হরতাল দিলাম ট্রাক নিতে পারে নাই। ট্রাকের নিচে হলো অস্ত্রশস্ত্র, গুলি, ওপরে ছিল আনারস। গরু আনারস টেনে খেতে গিয়ে আসল জিনিস বের হয়ে গেছে।’ ‘এই অস্ত্রের মালিক কে ছিল, কারা পাঠাচ্ছিল চিন্তা করে দেখেন একবার।’ ‘চরোকিয়াতেও ১৩ জন ধরা পড়ল। তারপর কীভাবে কীভাবে ছাড়া পেয়ে গেল।’ মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য অবশ্য ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে তারা যে সমর্থন দিয়েছে, আমাদের এক কোটি শরণার্থীকে তারা সাহায্য করেছে, লক্ষ লক্ষ মুক্তিযোদ্ধাকে ট্রেইনিং দিয়েছে, একসথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধের ময়দানে একসাথে রক্ত দিয়েছে, আমরা কৃতজ্ঞতার সাথে সেটা স্বীকার করি।
  • ৩০ মে ২০১৮, গণভবনে সাম্প্রতিক ভারত সফর নিয়ে করা সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের উত্তরে [৪]
  • “এতো লাশ গেলো কোথায়? ওই হিসাব বিরোধীদলকে দিতে হবে।” বিএনপির পক্ষ থেকে আড়াই হাজার লোককে সেদিন হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করার হয়। আড়াই হাজার লোককে হত্যা করতে কতো গোলা-বারুদ দরকার হয়? কত হাজার গুলির প্রয়োজন হয়? আর কত মানুষ আহত হতো?” এত মানুষ নিহত হলে তাদের আত্মীয়-স্বজনরা কোথায়। হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিরোধীদলের পক্ষ থেকে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। তাদেরকে বলতে হবে একটা ট্রাকে কত লাশ ধরে। উনি (খালেদা জিয়া) তো আর্মি অফিসারের বউ। ওনার তো গোলা-বারুদ সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকা দরকার। আছরের নামাজের পর দোয়া পড়ে হেফাজতে ইসলাম শাপলা চত্বর ছেড়ে চলে যাবে বলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আশ্বাস দেওয়ায় তাদের সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়।
    • ৯ মে ২০১৩, গণভবনে বৃহস্পতিবার ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে [৫]
  • দেশকে যখন আমরা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করছি, তখন দফায় দফায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। আন্দোলনের মধ্যে গুজব ছড়ানো হয়েছে, শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু বলে দিতে চাই, শেখ হাসিনা পালায়নি, পালায় না
    • ২২ জুলাই ২০২৪, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে
  • ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তোমাদের বাড়িঘরে যারা আগুন লাগিয়ে দিয়েছে, তাদের বাড়ি ঘর নেই? সব কথা কি বলে দিতে হয়? যারা এখন বেশি বেশি বাড়াবাড়ি করছে। বেশি ভালো থাকবেন না আপনি। দেখো ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই শত্রুরা টেকে কি না? কাউকে পালাতেও দেওয়া হবে না। যে কয়টা নাফরমানি করছে তাদের একটারও অস্ত্র থাকবে না। ঠিক আছে, আমি সবাইকে বলছি, তোমরা শুধু দুই মাস অপেক্ষা করো। কিছু বলো না। ‘ওরা ফেল করবে, আর আমরা যদি কিছু করি, তখন বলবে আমাদের জন্য করতে পারে নাই। সেটা আর বলার মুখ নেই। জাতীয় আন্তর্জাতিকভাবেও ওই যে সুদখোর ইউনুসের গুটি গুটি চেহারার দ্বার আটকে গেছে মানুষের কাছে। এখন ভয় পাওয়ার কিছু নেই, এখন ওদের ভয় দিতে হবে। আমি একটা কথা বলি, তোমাদের বাড়ি পোড়াই দিছে কে?’‘তাদের ঘর-বাড়ি নেই? ‘তাহলে, সবকিছু কি প্রকাশ্যে করতে হয়? ‘তোমাদের নাই, তাহলে কারো ঘর-বাড়ি থাকবে না।’, ‘মামলা, আমারতো শুধু গোবিন্দগঞ্জ না, আমারতো সারা বাংলাদেশে ২২৭টি মার্ডার কেস। আমি বলছি সবাই তালিকা কর। তোমরাও তালিকা কর। ২২৭ মার্ডারের লাইন্সেস পেয়ে গেছি। এক মামলায় যে শাস্তি, শোয়া দুইশো মামলায় একই শাস্তি। তাই না। ঠিক আছে সেই শাস্তি নেব। তার আগে শোয়া দুইশো হিসাব করে নেব। এটা যেন মাথায় থাকে। এবার একবার আসতে পারলে কেউ ফেলাইতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।
    • গোবিন্দগঞ্জের সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাকিল আলম বুলবুলের সাথে প্রকাশিত ফোনালাপে, ২৮ অক্টোবর ২০২৪ [৬]
  • একটি বিল্ডিং ভেঙ্গে দিলেই ইতিহাস মুছা যায় না
    • ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙ্গার প্রতিক্রিয়ায়
  • মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরা না পেলে, তাহলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবে? আমার প্রশ্ন দেশবাসীর কাছে। রাজাকারের নাতি-পুতিরা চাকরি পাবে, মুক্তিযোদ্ধারা পাবে না? অপরাধটা কী?
  • আপনজন হারানোর বেদনা যে কত কষ্ট, আমার চেয়ে আর কেউ বেশি জানে না।
  • আর আমার পাওয়ার চাই, আমি দেশের উন্নতি করতে চাই, সাফ কথা আমার। পাওয়ার চাই; আমি খালি ইলেকশন যেনো তেনো না, অ্যাবসুল্যুট পাওয়ার (নিরঙ্কুশ ক্ষমতা) নিয়ে আমি দেশের উন্নতি করব। এটাই আমার লক্ষ্য।
  • আমাকে বেশি কথা বললে সব বন্ধ করে দিয়ে বসে থাকব। ইলেকশনের পরে, যদি আসতে পারি, আবার করব। তারপর দেখি কে সাহস পায় নিতে...ক্ষমতা। সব গুছাইয়া-গাছাইয়া দেওয়ার পরে এখন ইলেকশনের কথা, ভোটের কথা, অর্থনীতির কথা, পাকা পাকা কথা শুনতে হয়। আমরা তো শুনতে রজি না।
  • এই দেশ আমার দেশ, আমার নিজের দেশ, আমার বাবা এই দেশ স্বাধীন করেছেন।
  • আমি কিন্তু দেশের খুব কাছেই আছি। যেকোনো সময় চট করে ঢুকে পড়তে পারি।
    • ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ [১২]
  • বেগুনের দাম ১১০ টাকার ওপরে চলে গেল। সেটা এখন কমে ৮০ টাকায় এসেছে। বেগুন দিয়ে বেগুনি না খেয়ে আরও যেসব সবজি সহজলভ্য আছে, সেটা দিয়ে খেলেই হয়। আমরা তো তাই খাই। বেগুনি না বানিয়ে মিষ্টিকুমড়া দিয়ে খুব ভালো বেগুনি বানানো যায়। আমরা এভাবে করি। সেভাবে করা যায়।
    • ৬ এপ্রিল ২০২২ [১৩]
  • পেঁয়াজ ছাড়াও রান্না করা যায়, আমাদের বাসায় পেঁয়াজ ছাড়া রান্না করা হয়। পেঁয়াজ নিয়ে এত অস্থির হওয়ার কি আছে আমি জানি না।
    • ২৯ অক্টোবর, ২০১৯[১৪]
  • ডিম যখন বেশি পাবেন সিদ্ধ করে ফ্রিজে রেখে দেবেন, বহুদিন থাকবে। নষ্ট হবে না। সবকিছুর বিকল্প আছে। ডিম সিদ্ধ করে ডিপে রেখে দেন, ডিম ভালো থাকবে। রান্না করে, ভর্তা করে খাওয়া যাবে। আমরা রাখি খাই। এগুলো নিজে থেকে শেখা
    • ২৯ আগস্ট ২০২৩[১৫]
  • বর্ষাকালে কাঁচা মরিচের ক্ষেতে কেউ মরিচ তুলতে যেতে পারে না। কাঁচা মরিচের দাম বাড়লে সবাই চিৎকার করে। সবাইকে আহ্বান করবো, এখন থেকে কাঁচা মরিচ কিনে রোদে শুকিয়ে রেখে দেন, বর্ষাকালে যখন দাম বাড়বে তখন সেখান থেকে খাওয়া যাবে। একটু পানি লাগলেই তাজা হয়ে যায়, আবার রান্না করে খাওয়া যায়, সহজ বুদ্ধি।
    • ২১ জুন ২০২৩। [১৬]
  • একটি এমডি পদের জন্য পদ্মা সেতুর মতো সেতুর টাকা বন্ধ করেছে, তাকে পদ্মা নদীতে দুইটা চুবানি দিয়ে তোলা উচিত। মরে যাতে না যায়, পদ্মা নদীতে একটু চুবানি দিয়ে সেতুতে তুলে দেওয়া উচিত। তাহলে যদি শিক্ষা হয়। পদ্মা সেতুর অর্থ বন্ধ করাল ড. ইউনূস। কেন? গ্রামীণ ব্যাংকের একটি এমডি পদে তাকে থাকতে হবে।
  • খালেদা জিয়া বলেছিল, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানাচ্ছে। সেতুতে যে স্প্যানগুলো বসাচ্ছে, এগুলো তার কাছে ছিল জোড়াতালি দেওয়া। বলেছিল, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানাচ্ছে, ওখানে চড়া যাবে না। চড়লে ভেঙে পড়বে। আবার তার সঙ্গে কিছু দোসরেরাও…তাদেরকে এখন কী করা উচিত? পদ্মা সেতুতে নিয়ে গিয়ে ওখান থেকে টুস করে নদীতে ফেলে দেওয়া উচিত।’
  • অতিরিক্ত টমেটো হয়েছে, বলল কী করব? আমি বলেছি শুকিয়ে রেখে দেন। সানড্রাই টমেটো তো বিদেশে ভীষণভাবে চলে। আমরাও সবকিছু করব। পেঁয়াজেও তাই। যখন উৎপাদন বেড়েছে, তখন পেঁয়াজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করব।
    • ২১ জুন ২০২৩। [১৯]
  • যদি বলেন যে রিজার্ভ রক্ষা করতে হবে, তাহলে আমি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেই, পানি দেওয়া বন্ধ করে দেই, সার বন্ধ করে দেই? সব বন্ধ করে বসায় রাখলে রিজার্ভ ভালো থাকবে। ... (রিজার্ভ নিয়ে) যদি এত বেশি কথা হয়, যখন সরকার গঠন করেছিলাম তখন যত ছিল ওইখানে এনে রেখে তারপর আবার ইলেকশন করব। করে আবার বাড়াব।
    • ০৬ অক্টোবর ২০২৩।[২০]
  • বিদ্যুৎ শতভাগ থেকে কমিয়ে ওই ২৮ ভাগে নিয়ে আসব। সবাই একটু টের পাক যে কী ছিল। আমাদের বিদ্যুৎ মন্ত্রীকে বলেছিলাম যেন প্রতিদিন একটু লোডশেডিং দেয়। তখন ঐ যে পয়সা দিয়ে তেল কিনে জেনারেটর চালাতে হবে, তখন আবার আক্কেলটা ঠিক হবে!
    • ০৬ অক্টোবর ২০২৩।[২১]
  • জনগণ আমাদের ভোট দিয়েছে। সংবিধান সংশোধন করেছি। যা হবে সংবিধান মোতাবেক হবে। তা থেকে একচুলও নড়া হবে না, ব্যাস।
  • “আমার ৭২ বছর বয়সের ৬০ বছরই কেটেছে রাজনীতিতে। স্কুল থেকে রাজনীতি শুরু করেছি এখনো অব্যাহত আছে। রাজনীতিতে কে কী করেছে অনেক ঘটনা চোখে দেখেছি"।
  • “আমি নিজে নিয়মিত নামাজ পড়ি, কোরান থেকে তিলওয়াত করে দিনের কাজ শুরু করি। আমি জানি, নবী করিম বলেছেন, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা যাবে না”।
  • ডাক্তাররা রোগীকে মেরে ফেলতে চান না। রোগীর জন্য অনেক ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন[উৎস প্রয়োজন]
  • বিরোধী দলে গেলে কখনও হরতাল করব না[উৎস প্রয়োজন]
  • আমি চাই বাংলার মানুষের মুক্তি। শোষণের মুক্তি। বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য বঙ্গবন্ধু সংগ্রাম করেছিলেন। আজ যদি বাংলার মানুষের মুক্তি না আসে, তবে আমার কাছে মৃত্যুই শ্রেয়।
    • ১৭ মে ১৯৮১। স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর মানিক মিয়া এভিনিউতে আয়োজিত গণ-সংবর্ধনায়।
  • সর্বস্তরের মানুষের দুর্ভোগের একটাই কারণ। সেটা হলো হত্যা ও ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা বদলের পালা। ষড়যন্ত্র ও হত্যার মাধ্যমে রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে যেভাবে ক্ষমতা বদল হচ্ছে তারই জন্য আজকে মানুষের এই দুর্ভোগ।
    • ১৪ অক্টোবর ১৯৮৪। শেরে বাংলা নগরে ১৫ দলের জাতীয় সমাবেশ।
  • মাটি আর মানুষের সাথে রাজনীতিকে একাত্ম করতে হবে। সমাজের গভীর থেকে গভীরতর স্তরে পৌঁছুতে হবে। জনগণের বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে সততা ও যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে।
    • ১ জানুয়ারি ১৯৮৭। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিলের উদ্বোধনী অধিবেশন।
  • আমি একটা কথাই বলব, এই মাটিতে হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান সকল ধর্মের মানুষের বসবাস থাকবে অর্থাৎ আমরা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে অন্য ধর্মকে অবহেলার চোখে দেখবো না।
    • ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা এটি বলেছিলেন।[২২]
  • যারা অস্ত্রের ভাষা বুঝে, তারা মুক্তির ভাষা মানে না। অস্ত্রকে সম্বল করে যারা ক্ষমতায় আসে, তারা যুক্তি বুঝে না, যু্ক্তি তাদের কাছে বোধগম্য নয়।
    • ৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭। জাতীয় সংসদ।
  • স্বাধীন, নিরপেক্ষ, গণমুখী ও বিশ্বাসযোগ্য গণমাধ্যম গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত। আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছি।
    • ২৫ এপ্রিল ১৯৯১। জাতীয় সংসদ।
  • আওয়ামী লীগের আদর্শ জনকল্যাণমুখী এক শোষণমুক্ত উন্নত সমাজব্যবস্থা কায়েম করা। আমাদের মূল লক্ষ্য জনগণের কল্যাণ ও অর্থনৈতিক মুক্তি এবং স্বনির্ভর অর্থনীতি।
    • ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৯৫। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিশেষ কাউন্সল অধিবেশন।
  • আজ সেই সোনার বাংলা গড়ার দায়িত্ব এসেছে। এ দায়িত্ব শুধু আওয়ামী লীগের একার হতে পারে না। এ দেশ স্বাধীন করেছিলাম আমরা সবাই মিলে যেমন এক ভয়ঙ্কর দুঃসময়ে, ঠিক তেমনি আজ সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও দুঃসময়ে, ঠিক তেমনি আজ সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও দুঃশাসনের শৃঙ্খল থেকে দেশকে মুক্ত করার আরেক সংগ্রামে আবার আমরা একসাথে নিঃশ্বাস নেব, এক প্রত্যয়কে অবলম্বন করব, এক লক্ষ্যে হব পথের সাথী।
    • ২৪ জুন ১৯৯৬। জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ।
  • গণতন্ত্রের জন্য স্বাধীনতার চেয়ে বড় কোনো ভিত্তি নেই এবং সভ্যসমাজের আইন ও বিধান ছাড়া গণতন্ত্রের কোনো নিশ্চয়তা নেই।
    • ১৯৯৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি, বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়।
  • ন্যায় ও সত্যের পথ কঠিন পথ, এই কঠিন পথ আমি বেছে নিয়েছি
    • ২৮ জানুয়ারি ১৯৯৯। শান্তিনিকেতন।
  • শান্তি একটি মৌলিক মানবাধিকার যাকে অর্জন, লালন, উন্নয়ন করতে হবে এবং সর্বদা ভবিষ্যতের জন্য এগিয়ে নিতে হবে।
    • ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৫৪তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
  • শান্তি ও উন্নয়নের লক্ষ্যে জনগণের ক্ষমতায়ন অপরিহার্য। ন্যায়বিচার হচ্ছে এর ভিত্তি।
    • ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১২। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৭তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
  • এই অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ শ্রমিক। এখানে সাধারণ মানুষের সংখ্যাই বেশি। তাদের চিকিৎসার কষ্ট লাঘব করা এবং চিকিৎসাসেবা দেওয়া আমাদের কর্তব্য। তা ছাড়া এই এলাকায় উন্নতমানের হাসপাতালের সংখ্যা কম। সেই চিন্তা থেকেই এখানে এ হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিই। আমি অসুস্থ হলে আমাকে বিদেশে নিবেন না, আমি দেশের মাটিতেই চিকিৎসা নিব।
  • দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।[উৎস প্রয়োজন]
  • সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য যোগ্যতা অর্জন কর।[উৎস প্রয়োজন]
  • ‘নিঃস্ব আমি রিক্ত আমি দেবার কিছু নেই, আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই’
    • ২৫ জুন, ২০২২। জাজিরা প্রান্তে পদ্মা ফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে।

শেখ হাসিনাকে নিয়ে উক্তি

সম্পাদনা
  • প্রিয়-অপ্রিয়, পছন্দ-অপছন্দের:- প্রিয় খাদ্য: গরুর ভুড়ী; প্রিয় গান: জিন্দেগি জিন্দেগি [২৩] ; প্রিয় ব্যক্তিত্ব: মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু; সবচাইতে বেশি লোভ: টাকার প্রতি; সবচাইতে অপছন্দের: নামাজী মানুষ; সবচাইতে স্বস্তি এবং আনন্দের: মানুষের লাশ; সবচেয়ে বেশি পটু: মিথ্যে বলায়।
  • পিএস শাকিলের (মাহবুবুর রহমান শাকিল) এবং আরও অনেকের সঙ্গে হাসিনার অবৈধ যৌন সম্পর্ক ছিল। স্বয়ং আওয়ামী লীগের নিজের লোকেরাই গোপনে আমাকে এসব তথ্য ও প্রমাণ সরবরাহ করেছিল। আমি এই গোপন কথা ফাঁস করেছিলাম, এজন্যই আওয়ামী লীগ আমাকে জোরপূর্বক অপহরণ করে গুম করেছেিল। আমাকে বলা হয়েছিল, তুমি যদি এসব বন্ধ না করো, তাহলে তোমার সাথে কী করা হবে তা তুমি কল্পনাও করতে পারবে না। শুধু শেখ হাসিনা নয়; রাষ্ট্রপতি, বেনজির সহ আরও অনেকের অবৈধ যৌনাচারের প্রমাণ আমার কাছে ছিল। আর গনভবন ছিল অবৈধ যৌনাচারের কেন্দ্রবিন্দু। তারা পাথরের গলায় মালা দিয়ে একে অপরের সাথে কানেক্ট করতো, যাকে আমার ধর্মে বলা হয় শিরক।
    • শফিকুল ইসলাম কাজল, ১৫ আগস্ট ২০২৪ [২৪] [২৫]
    • মতিউর রহমান রেন্টু, আমার ফাঁসি চাই, পৃষ্ঠা ২০৮
  • খেলা: জননেত্রী শেখ হাসিনা নিজেকে একজন বড় খেলোয়াড় মনে করেন। তিনি মনে করেন, তিনি দুনিয়ার সবচাইতে দক্ষ খেলোয়াড় এবং তার মতো খেলোয়াড়ের সারা বিশ্বে জুড়ি নেই। তিনি খেলতে ভালবাসেন। বলতে গেলে খেলাই তার একমাত্র কাজ। তিনি সকলের সাথেই খেলেন। জনতার সাথে খেলেন। রাজনৈতিক নেতাদের সাথে খেলেন। নিজেদের দলের কর্মীদের সাথে খেলেন। স্বামীর সাথে খেলেন। আত্মীয়স্বজনের সাথেও খেলেন, তবে কম খেলেন। নিজের বোনের সাথে খেলেন, তবে পেরে ওঠেন না, ধরা পরে হেরে যান। ছেলে-মেয়ের সাথে খেলতে গিয়ে প্রচণ্ড মার খেয়ে যান। জননেত্রী শেখ হাসিনা মনে করেন তার মতো এতো বড় খেলোয়াড় আর নেই এবং তিনি যে খেলা খেলেন, এ খেলা ধরা বা বোঝার শক্তি কারো নেই। পৃথিবীর কেউই তার খেলা ধরতে পারবে না। বুঝতে পারবে না। এ খেলায় তিনি অনন্যা, অদ্বিতীয়। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যে খেলা খেলেন, সে খেলার নাম হচ্ছে, প্রতারণার খেলা। তিনি সকলের সাথেই প্রতারণার খেলা খেলেন।
    • মতিউর রহমান রেন্টু, আমার ফাঁসি চাই, পৃষ্ঠা ১২৮
  • ক্ষমতায় থাকাকালে ফ্যাসিবাদের সব বৈশিষ্ট্যই দেখিয়েছে আওয়ামী লীগ। তাই নিকট ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করলে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট পার্টি আওয়ামী লীগের কোনো জায়গা নেই।
    • মুহাম্মদ ইউনূস, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে [২৬]
  • আওয়ামী লীগের জুনিয়র সারির নেতারা একদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার পুত্র জয়কে বলছে, "আমরা আছি, আপনি যখন প্রধানমন্ত্রী হবেন তখন আপনার সাথে আমরা আছি।" জয় বলছে, “প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতি মানুষের কাছে ভোট ভিক্ষা করে। ভোট ভিক্ষা করে আমি কোনোদিন রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী হব না। যদি রাজা বানান তাহলে আছি, নইলে নাই।" বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সঙ্গে সঙ্গে বললেন, "বাবা আমরা তো রাজাই, আগামীতে তো তুমিই রাজা হবা। তোমার নানা তো এদেশের রাজাই ছিলেন, তোমার নানাই তো এই দেশ সৃষ্টি করেছে, এই দেশের মালিক ছিল। চাকর- বাকররা ষড়যন্ত্র করে তোমার নানাকে মেরে সিংহাসন দখল করেছে। আলীবর্দী খাঁ যেমন বাংলার নবাব ছিলেন, তারপরে তাঁর নাতি সিরাজদ্দৌলা নবাব হয়েছিল। তোমার নানা শেখ মুজিবর রহমানও বাংলাদেশের রাজা ছিল, আগামীতে তুমিই বাংলাদেশের রাজা হবে। রাজা বাদশাদের আধুনিক নামই রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী।
    • মতিউর রহমান রেন্টু, আমার ফাঁসি চাই, পৃষ্ঠা ২১০
  • বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রথম নির্দেশ মেরে ফেলো। মেরে লাশ ফেলে দাও। আওয়ামী লীগের কোনো নেতা, কর্মী কিংবা সমর্থক কথা প্রসঙ্গেও যদি বলে প্রশাসনের অথবা অন্য রাজনৈতিক দলের অমুক আমাদের বিপক্ষের, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রথমেই যে নির্দেশ বা আদেশ দেন তাহলো মেরে ফেলো, মেরে ফেলে দাও। আমি হুকুম দিলাম খুন করে ফেলো। যদি কোন কারণে উক্ত ব্যক্তিকে হত্যা করা না যায় তাহলে বলবেন, ঘুষ দাও, টাকা দাও। টাকা দিয়ে ওকে আমাদের পক্ষে নিয়ে আসো। ১৯৯৫ সালে মাওয়া রোড দিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় যাওয়ার সময় ফেরিতে ৩০/৪০ বছর আগে দেশ থেকে যুক্তরাজ্যে চলে যাওয়া, যুক্তরাজ্যের নাগরিক শেখ হাসিনা সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত শিল্প ঋণ সংস্থার পরিচালক প্রফেসর আবুল আসেম তার নিজ থানা নবাবগঞ্জ সম্পর্কে বললেন, নবাবগঞ্জে (ঢাকা জেলার) আওয়ামী লীগের প্রার্থী দেয়া না দেয়া সমান কথা। নবাবগঞ্জের মানুষ আওয়ামী লীগকে পছন্দ করে না, ভোটও দেয় না। এ কথা শুনে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বললেন, রাতের অন্ধকারে ঘরে ঘরে আগুন লাগিয়ে দেন। আগুন লাগিয়ে ওদের পুরিয়ে মেরে ফেলেন।
    • মতিউর রহমান রেন্টু, আমার ফাঁসি চাই, পৃষ্ঠা ২০৮-২০৯
  • ১৯৮১ সালের ২৩শে এবং ২৪শে মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসটি'র তিন তলায় সেমিনার কক্ষে '৭১ ও '৭৫ যোদ্ধাদের এবং সেনাবাহিনীর প্রাক্তন সদস্যদের গোপন ও জরুরী বৈঠক বসে। এই বৈঠকে কর্নেল শওকত আলী (বর্তমানে আওয়ামী লীগের এমপি, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামী) মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রপতি জেনারেল জিয়াউর রহমান বীর উত্তমকে হত্যার পরিকল্পনা এবং হত্যাকালীন ও হত্যা পরবর্তী সময়ে করণীয় সম্পর্কে অবহিত করেন। কর্নেল শওকত আলী বলেন, জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামে গেলে চট্টগ্রামের জিওসি মেজর জেনারেল মঞ্জুর বীর উত্তম-এর নেতৃত্বে জিয়াকে হত্যা করা হবে এবং এই হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে সভানেত্রী শেখ হাসিনা অবহিত আছেন। সভানেত্রী আমাদেরকে এই হত্যাকাণ্ডে সহায়তা ও ভূমিকা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা মাত্র কয়েক দিন হলো দেশে এসেছেন, এর মধ্যেই তিনি এমন একটি নির্দেশ কীভাবে দিতে পারেন? প্রশ্ন করা হলে কর্নেল শওকত আলী বলেন, শেখ হাসিনা দেশের বাইরে (ভারত) থাকতেই এ বিষয়ে অবহিত আছেন।
    • মতিউর রহমান রেন্টু, আমার ফাঁসি চাই, পৃষ্ঠা ৭৭
  • তারপর মেয়র হানিফকে বঙ্গবন্ধু ভবনের অফিস কক্ষে এনে শেখ হাসিনা বললেন, এই মিষ্টি আনো, মিষ্টি আনো, হানিফ ভাইকে মিষ্টি খাওয়াও। মিষ্টি খেতে খেতে বঙ্গবন্ধু কন্যা বললেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন মহানায়ক, আর আপনি হলেন নায়ক। নায়ক না হলে কি চলে? সারা দেশ, জাতি এখন তাকিয়ে আছে নায়কের দিকে। মানে আপনার দিকে। নগরবাসী তাকিয়ে আছে আপনার দিকে। আমি এই পর্যন্ত এনে দিয়েছি, এখন আপনি ফিনিশিং দেন। এখন আপনার পালা। আপনি নায়ক, আপনার হাতেই সব। আমার হাতে আর কিছু নেই। আমার যা ছিল সব আমি করেছি। আপনি মেয়র, আপনিই নায়ক, এখন আপনি ফিনিশিং গোল করেন। আপনি ছাড়া ফিনিশিং হবে না। আপনার হাতেই ফিনিশিং হবে বলেই খেলা এখনও বাকি আছে। আপনারাই তো বঙ্গবন্ধুকে শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু বানিয়েছেন। আপনারা যদি সেদিন আমার পিতাকে আশ্রয় না দিতেন, সাহায্য-সহযোগিতা না করতেন তাহলে কি আমার পিতা শেখ মুজিব থেকে জাতির পিতা হতে পারতেন? এই আপনারা ঢাকার মানুষেরা বানিয়েছেন। আজ আমি তার মেয়ে, আমাকে যদি আপনি সাহায্য না করেন আমি কি করে বড় হবো? আমার ভাইয়েরা কেউ বেঁচে নেই। আপনিই আমার ভাই। আমি আপনার বোন। আমাকে আপনি সহযোগিতা করেন। আমি কখনোই আপনার কথা ভুলব না। আপনাকে ছাড়া চলব না। ঢাকার মেয়র মোহাম্মদ হানিফ বলল, হ্যাঁ নেত্রী, আমাকে এক মাস সময় দেন, আমি খালেদা জিয়াকে ফেলে দেব। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বললেন, না, না, একমাস সময় দেওয়া যাবে না। আপনি পনের দিনের মধ্যেই ফেলে দেন।এই বৈঠকেই ঠিক হল প্রেসক্লাবের সামনে স্থায়ী মঞ্চ তৈরী করে এখান থেকেই যতক্ষণ বেগম খালেদা জিয়ার পতন না হয়, দিন-রাত ২৪ ঘন্টা স্থায়ী ভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার। পরবর্তী সময়ে নাট্যশিল্পী ও টিভির খবর পাঠক রামেন্দু মজুমদার ও নাট্যশিল্পী পিযুষ বন্দোপাধ্যায় এই মঞ্চের নাম দেন জনতার মঞ্চ। প্রেসক্লাবের সামনের এবং সচিবালয়ের উত্তরের তোপখানা রোডের পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত অর্থাৎ পল্টনের মোড় থেকে হাইকোর্ট পর্যন্ত রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ করে রাস্তার মাঝখানে বিশাল মঞ্চ তৈরী করে প্রতিদিন চলতে থাকলো গান-বাজনা, বক্তৃতা, আবৃত্তি ইত্যাদি। এক পর্যায়ে এই মঞ্চে এসে যোগ দিল সচিবালয়ের কিছুসংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী। এ সবই চলতে লাগল ঢাকার মেয়র শেখ হাসিনার ভাষায় নায়ক ও আগামী দিনের এল জি আর ডি মন্ত্রী মোহাম্মদ হানিফের নেতৃত্বে।
  • এটা খুবই আনন্দের বিষয় যে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী হওয়া সত্ত্বেও তিনি প্রকাশ্যে বলছেন যে সন্ত্রাসের প্রতি তার জিরো টলারেন্স আছে। হুমকি মোকাবেলায় দৃঢ়তার জন্য আমি শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাতে চাই।
  • শেখ হাসিনা ও তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা গণভবন থেকে নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন। শেখ হাসিনা যাওয়ার আগে একটি ভাষণ রেকর্ড করে যেতে চেয়েছিলেন। তিনি সে সুযোগ পাননি।
    • বার্তা সংস্থা এএফপি, ৫ আগস্ট ২০২৪, [২৭]
  • শেখ হাসিনা তো তখন খুবই ছোটো,তার সাথে তেমন একটা ইন্টারেকশন ছিল না। বিয়া হইয়া গেসে ওয়াজেদের সাথে। কিন্তু আমি দেখতাম যে প্রত্যেকদিন রাত্রেই মাইর খাইতে খাইতে আইতো...বেগম মুজিব খাওয়াইয়া টাওয়াইয়া আবার ফেরত পাঠায় দিত।
  • আপনজন হারানোর বেদনা যে কত কষ্টের তা আমার চেয়ে আর কে ভালো জানে, বলোনা মোদি, তুমি বলোনা, বলোনা কাদের, তুমি বলোনা। মেট্রোরেলের মনিটর ভাঙার ক্ষতি, ক্ষমতা হারানোর গভীর ব্যথা, আরো মানুষ মেরে তুলব ভয়, কিন্তু আর পারছি না এ পথ ধরতে। শাড়ি বঙ্গভবন সব গেছে হাতছাড়া, আমার বুকে জমেছে কত আর্তনাদ, ক্ষমতা হারানোর কষ্ট বুকে চেপে আমি কি আর হাসতে পারি? ক্ষমতার মসনদ আজ অধরা, আমার ব্যথা কে করবে সান্তনা, শান্তির খোঁজে ক্ষমতার আশায় আমার মনে জমে কত ব্যথা।
    • ১৭ আগস্ট ২০২৪, শেখ হাসিনার শোকবার্তা "আপনজন হারানোর বেদনা যে কত কষ্টের তা আমার চেয়ে আর কে ভালো জানে" কে উপহাস করে একটি অপেশাদার এআই প্রযুক্তিতে কাল্পনিক গান তৈরি করা হয় যা ফেসবুকে রাজিব জাহান ফেরদৌস নামে একটি পাতায় প্রকাশিত হওয়ার পর বাংলাদেশে ভাইরাল হয় [২৮]
  • ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার জন্য কাতান শাড়ি পরে সেজেগুজে বসেছিলেন। তিনি অপেক্ষা করছিলেন, বলছিলেন, আয় সন্ত্রাসী, আয় বাকশালি খুন করিতে যাই, লাশের মালা গলায় দিয়ে শপথ নিতে যাই।’
    • "রেহানা আক্তার রানু" ২৩ জুন ২০১৩ জাতীয় সংসদ ভবণে রক্তপিপাসু এই সরকারের পতন চাই’ বলে তাঁর বক্তব্য শুরু করে প্রথমআলো বলেন
  • ১৯৮৭ সালে মুন্সিগঞ্জ হরগঙ্গা কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি তরুণ যুবক মৃণাল কান্তি দাসের সাথে শেখ হাসিনার পরিচয় হয়। এবং পরিচয়ের পর থেকে মৃণাল কান্তি দাস বত্রিশ নাম্বারে বঙ্গবন্ধু ভবনে থাকতে শুরু করেন। শেখ হাসিনা তখন ঐ বাড়িতেই থাকতেন। গভীর রাত পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু ভবনের লাইব্রেরি কক্ষে ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে মৃণাল কান্তি দাস আর শেখ হাসিনার কুটকুট করে কথা বলতেন এবং খিলখিল করে হাসতেন। শেখ হাসিনার কাছে মৃনালের গ্রহণযোগ্যতা এতটাই বেড়ে গেল যে তা সকলের ঈর্ষার কারণ হয়ে দাড়ালো। মৃণাল হয়ে উঠলো শেখ হাসিনার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি! তার ক্ষমতা এতটাই বেড়ে গেল যে, ১৯৯০ সালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির জেনারেল সেক্রেটারী সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে অপমান-অপদস্ত করে বঙ্গবন্ধু ভবন থেকে বের করে দিলেন। একদিন বঙ্গবন্ধু ভবনে মৃণাল সহ চারজন তাস খেলছে। বেলা তখন তিনটা-সাড়ে তিনটা। এমন সময় শেখ হাসিনার একমাত্র আপন মামা আকরাম মামু এসে কুভঙ্গিতে কুইঙ্গিত করে বললেন, “এই মৃণাল যাওনা, তোমার জন্য না খেয়ে বসে আছে!” মৃণাল তার বন্ধুদের সামনে তার ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য জবাব দিল “ আরে থাক, থাকতে দেন কিছুক্ষণ না খেয়ে!” একদিন মৃণাল শেখ হাসিনার উপর রাগ করে চলে গেল। শেখ হাসিনা নিজে গিয়ে রাগ ভাঙ্গিয়ে মৃনাল কান্তি দাসকে বংগবন্ধু ভবনে নিয়ে এলেন। ১৯৯১ সালে শেখ হাসিনা নির্বাচনে হারার পর মৃণাল বিভিন্ন অসন্তুস্টির কারণে শেখ হাসিনাকে ছেড়ে চলে যায়। শেখ হাসিনা নিজে তিনবার মৃণালকে ফিরিয়ে আনতে যান কিন্তু সে ফিরে আসেনা। বরং শেখ হাসিনার সাথে তার দৈহিক সম্পর্কের কথা প্রচার করতে থাকে। কথায় কথায় মৃণাল হাসতে হাসতে বলতে থাকে, শেখ হাসিনা সাথে তার সম্পর্ক অনেক গভীর!
  • মাননীয় স্পিকার, যিনি আমাদের নেত্রীর (খালেদা জিয়া) পরিবার নিয়ে এখানে কুৎসা রটনা করেছেন... (সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া: (পাশে বসা অবস্থায় সরকার দলীয় (আওয়ামী লীগের) দাড়িয়ে যাওয়া উত্তেজিত সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে উচু গলায়) বসেন বসেন... অনেক বাড়াবাড়ি করেছেন..) তিনি পলিটিক্যাল প্রস্টিটিউট মাননীয় স্পিকার। কলিকাতা সিভিল কোর্টের উকিল মি: চন্ডিদাস। তার এক মেয়ে ছিল যারনাম গৌরিবালা দাস। (সরকার দলীয় সংসদ সদস্যদের মধ্যে উত্তেজিত শোরগোল) চন্ডিদাসের সহকারী উকিল মি: অরণ্য কুমার চক্রবর্তী চন্ডিদাসের কলিকাতাস্থ বাসায় (সৈয়দা পাপিয়া: (পাশ থেকে) পড়তে থাক.. হ্যা) নিয়মিত যাতায়াত করত। এই সুযোগে গৌরিবালার সাথে অরণ্য কুমার চক্রবর্তীর অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠে। (সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া: পড়তে থাক..) গৌরিবালা গর্ভবর্তী হয়ে পড়েন। (পানি খেয়ে নেন) (সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া: পড়তে থাক পড়তে থাক..পড়তে থা-ক) (সরকারদলীয় সদস্যরা আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠেন) গৌরিবালা যখন বুঝতে পারলেন যে তিনি গর্ভবতী হয়েছেন তখন গৌরিবালা অরণ্য কুমারকে তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ দেয়। অরণ্য কুমার এতে রাজী না হয়ে অবৈধ সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেন। এদিকে চন্ডিদাস বিষয়টি জানার জন্য চিন্তিত হয়ে পড়েন। এরই মধ্যে গৌরিবালা ১২/১২/১৯২০ ইং তারিখে একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন। তার নাম রাখা হয় দেবদাস চক্রবর্তী। (সৈয়দা পাপিয়া: (পাশ থেকে চিৎকার দিয়ে সমর্থন দিয়ে) ইয়োওওওও...(টেবিল চাপড়াতে থাকেন।)) চন্ডিদাস অরণ্য কুমার চক্রবর্তীকে গৌরিবালাকে উঠিয়ে নেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে, (সৈয়দা পাপিয়া: (টেবিল চাপড়িয়ে সমর্থন দিয়ে) পড়তে থাক, পড়তে থাক...পড়তে থাকুন, ধরতে থাকুন...বাদ যাইসই না...হ্যা) কিন্তু অরণ্য কুমার রাজি হন না। এরই মধ্যে দেবদাসের বয়স ২ বছরে উন্নীত হয়। চন্ডিদাস হতাশাগ্রস্থ হয়ে পরেন এবং ভীষণ ভাবে অসুস্থতা বোধ করেন। দেবদাসের (শিরীন শারমিন চৌধুরী:(সরকারদলীয় উত্তেজিত সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে) মাননীয় সদস্যবৃন্দ আপনারা একটু শান্ত হন..(রেহানা আক্তার রানুকে উদ্দেশ্য করে) মাননীয় সদস্য) বয়স যখন ৩ বছর তখন দেবদাসের মহুরী শেখ লুৎফুর রহমান (শেখ হাসিনার পিতামহ) গৌরিবালাকে বিয়ে করেন... (মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়) (শিরীন শারমিন চৌধুরী: মাননীয় সদস্য আমি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, মাননীয় সদস্যবৃন্দ আপনারা বসুন সবাই বসুন বসুন। মাননীয় সদস্য আমি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। মাননীয় সদস্য, আপনি ২৭০ বিধি অনুসরণে বাজেটের উপর বক্তব্য দিন। মাননীয় সদস্য। উনাকে মাইক দিন) ধন্যবাদ মাননীয় স্পিকার, আপনি আমাকে বাজেটের উপর বক্তব্য দিতে বলেছেন। কিন্তু গত বিশ তারিখে যে বক্তৃতা দেওয়া হয়েছে আমি আপনার কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই এটা কি বাজেট বক্তৃতা ছিল?
  • পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ঘটনায় সহযোগিতা করেছেন নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতা।
    • আবদুল মতিন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল (অব.), ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ [৩১]
  • কুত্তার জাত: মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদিকা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান এলজিআরডি মন্ত্রী জিল্লুর রহমান-এর স্ত্রী, আই ভি রহমান ১৯৯২ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে জনৈক মহিলার নাম উল্লেখ করে বললেন, নেত্রী ওর নামে অনেক স্ক্যান্ডেল আছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা সঙ্গে সঙ্গে বললেন, কি, বেশ্যা এই তো? কুত্তার (কুকুরের) জাতকে তো বেশ্যা দিয়েই নেতৃত্ব দেয়াবো। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার মুখে এই কথা শোনার পর আইভি রহমান 'থ' হয়ে যান। আর একটি কথাও না বাড়িয়ে বিদায় নেন।
    • মতিউর রহমান রেন্টু, আমার ফাঁসি চাই, পৃঃ ১২৩
  • দশ টাকায় শেখ মুজিবের ছবি: এক শুক্রবার সকালে অর্থমন্ত্রী কিবরিয়ার পি এস ডঃ পারভেজ, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে এসে দশ টাকায় শেখ মুজিবের ছবির লেআউট ডিজাইনের খসড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেখান। নতুন এই দশ টাকার লেআউট ডিজাইনের খসড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৌখিকভাবে অনুমোদন করে দিলে তবেই তা ছেপে নতুন দশ টাকার নোট হিসেবে বাজারে ছাড়া হবে। এই দশ টাকার খসড়া লেআউট ডিজাইনের উপরে ছিল আল্লাহর ঘর মসজিদের ছবি এবং পিছনে ছিল শেখ হাসিনার পিতা শেখ মুজিবের ছবি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লেআউট ডিজাইনে খসড়াটি দেখে অর্থ মন্ত্রীর পিএস ডঃ পারভেজকে ক্ষিপ্ত হয়ে বলে উঠলেন, একি! জাতির পিতার ছবি পিছনে কেন? অর্থমন্ত্রীর পি এস ডঃ পারভেজ কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে বললেন, বাজারে চালু বর্তমান দশ টাকার নোটের উপরে মসজিদের ছবি আছে। ধর্মীয় অনুভূতির কথা বিবেচনা করে উপরের মসজিদ এর ছবিটা ঠিক রেখে, পিছনে জাতির পিতার ছবি দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাগান্বিত কণ্ঠে বললেন, ওসব মসজিদ-টসজিদ বুঝি না, জাতির পিতার ছবি উপরে দিয়ে নতুন দশ টাকার নোট ছেপে বাজারে ছাড়বেন। আমার বাবা যে জাতির পিতা এটা শয়তানের জাতকে গিলাতে হবে। এরপর অন্য আর একদিন ডঃ পারভেজ শেখ মুজিবের ছবি উপরে এবং মসজিদের ছবি পিছনে দিয়ে করা লেআউট ডিজাইন নিয়ে এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা দেখেন ও খুশি হন এবং মৌখিক অনুমোদন করে দেন। বর্তমানে বাজারে শেখ মুজিবের ছবি সম্বলিত যে নতুন দশ টাকার নোট রয়েছে এটা সেটা।
    • মতিউর রহমান রেন্টু, আমার ফাঁসি চাই, পৃঃ ১১৯
  • মসজিদ সরিয়ে ফেলুন: ১৯৮৬ সালের শুরু থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আবার ছাত্র আন্দোলনের জন্য নতুন করে তাগিদ দিতে থাকলেন। বহু চাপাচাপি, ধমকাধমকি এবং তাগিদ দেয়া সত্ত্বেও যখন আন্দোলনের বিন্দুবিসর্গও হলো না তখন তিনি রেগে মে মাসের মাঝামাঝি তার জন্মভূমি এবং পিতার বাড়ি টুঙ্গিপাড়ায় চলে গেলেন এবং বেশ কিছুদিন টুঙ্গিপাড়ায় থাকলেন। এরই মধ্যে একদিন শেখ বাড়ির (শেখ হাসিনার নিজের বাড়ির) কিছু মুরব্বীসহ টুঙ্গিপাড়া গ্রামের ২০/৩০ জন মুরব্বী এসে শেখ হাসিনার অংশের একটি নারিকেল গাছ দ্বারা শেখ বাড়ির অন্য শরীকের জায়গায় নির্মিত মসজিদটি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে জানিয়ে সেই নারিকেল গাছটি কেটে ফেলার প্রস্তাব করলে, শেখ হাসিনা সরাসরি বলে দেন আমার নারিকেল গাছ কাটা হবে না। দরকার হলে মসজিদ সরিয়ে ফেলেন। তখন সকল মুরব্বী পবিত্র কুরআন পাকে মসজিদ সরানো নিষেধ আছে বলে মসজিদের দেয়াল ও স্থান ঘেঁষে থাকা শেখ হাসিনার জায়গায় অবস্থিত নারিকেল গাছটি কেটে ফেলার জন্য বারবার অনুনয়-বিনয় করতে থাকে। তখন শেখ হাসিনা বলেন, এই মসজিদ বন্ধ করে দেন। আমি আরো বড় মসজিদ বানিয়ে দেবো। মুরব্বীরা বলেন, একটু বাতাস হলেই নারিকেল গাছটি মসজিদের গায়ে এবং ছাদে লাগতে থাকে। এইভাবে চললে মসজিদের ছাদ এবং দেয়াল অচিরেই ভেঙ্গে যাবে। শেখ হাসিনা বলেন, ভেঙ্গে যায় যাক্, তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আপনারা লক্ষ বছর কান্নাকাটি করলেও নারিকেল গাছ কাটব না।
    • মতিউর রহমান রেন্টু, আমার ফাঁসি চাই, পৃঃ ৯৪ (এই অংশটি বইটির কিছু সংস্করণে উহ্য রাখা হয়েছে)
  • আন্দোলন আন্দোলন খেলা: স্বৈরাচারী জেনারেল এরশাদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে রেখে, বেগম খালেদা জিয়া একক আন্দোলন করলে কাঙ্খিত ফল আসবে না ভেবে, মটর সাইকেল আরোহী আন্দোলনের আন্তরিকতার বিষয়ে প্রশ্ন করলে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা জবাব দেন, "আমি (শেখ হাসিনা) আছি ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) পিছনে পিছনে। ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) যে কর্মসূচী দেবে, আমিও (শেখ হাসিনা) সেই কর্মসূচী দেব। যাতে মনে হয় আমি (শেখ হাসিনা) ও আন্দোলনে আছি। আন্দোলন সফল করে তোলার প্রশ্নে আওয়ামী লীগ কর্মীদের বলিষ্ঠ ভূমিকা বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ কর্মীদের বলে দেবে তারা যেন আন্দোলন আন্দোলন খেলা করে, কিন্তু আন্দোলন যেন না করে। অর্থাৎ আন্দোলনের সাথে থেকে আন্দোলনের পিঠে ছুরি মারতে হবে। ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া) ব্যর্থ করে করে ঘরে বসিয়ে দিতে হবে, আর যাতে রাজনীতির নাম না নেয়। জনগণ এবং আওয়ামী লীগের মাঠকর্মীরা এরশাদ পতনের আন্দোলনের জন্য এতই উদগ্রীব যে, আন্দোলন প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার স্পষ্ট নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও তারা (আওয়ামী লীগ কর্মীরা) আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে থাকে। যখন আওয়ামী লীগের কর্মীদের কাছে জননেত্রী শেখ হাসিনার আন্দোলন না করার গোপন নির্দেশ পৌঁছানো হলো, তখন আওয়ামী লীগ কর্মীরা সভানেত্রী শেখ হাসিনার মুখ থেকে সরাসরি এই নির্দেশ শুনতে চাইলো। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার পক্ষে সরাসরি এই নির্দেশ দেওয়া সম্ভব হলো না। ফলে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে থাকলেন বেগম খালেদা জিয়া আর জীবন দিতে থাকলো নূর হোসেনসহ আওয়ামী লীগ কর্মীরা।
    • মতিউর রহমান রেন্টু, আমার ফাঁসি চাই, পৃঃ ৫৭-৫৮
  • দেশদ্রোহী অসভ্য বাহিনী: ৩রা মে ১৯৮৪ এর এক পড়ন্ত বিকেলে ধানমণ্ডি বঙ্গবন্ধু ভবনে বসে গল্প করছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ কয়েক জন। গল্পে গল্পে ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ ও পাকিস্তানী সেনাবাহিনী প্রসঙ্গ উঠলো। প্রসঙ্গ উঠলো '৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কথা। জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে বললেন, এটা একটা সেনাবাহিনী হলো? এটা একটা বর্বর, নরপিশাচ, উচ্ছৃঙ্খল, লোভী, বেয়াদব বাহিনী। এই বাহিনীর আনুগত্য নেই, শৃঙ্খলা নেই, মানবিকতা নেই, মান্যগণ্য নেই, নেই দেশপ্রেম। এটা একটা দেশদ্রোহী অসভ্য হায়েনার বাহিনী। তোমরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কথা বল। সারা বিশ্বে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মতো এত ভদ্র, নম্র, সভ্য, বিনয়ী এবং আনুগত্যশীল বাহিনী খুঁজে পাওয়া যাবে না। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মানবিকতা বোধের কোন তুলনাই চলে না। কি অসম্ভব সভ্য আর নম্র তারা! পঁচিশে মার্চ রাতে তারা (পাকিস্তান আর্মি) এলো, এসে আব্বাকে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব) সেলুট করলো, মাকে সেলুট করলো, আমাকেও সেলুট করলো। সেলুট করে তারা বলল, স্যার আমরা এসেছি শুধু আপনাদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। অন্য কোন কিছুর জন্য নয়। আপনারা যখন খুশি, যেখানে খুশি যেতে পারবেন। যে কেউ আপনার এখানে আসতে পারবে। আমরা শুধু আপনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো। আপনারা বাইরে গেলে আপনাদের নিরাপত্তার জন্য আমরা আপনাদের সঙ্গে যাবো। কেউ আপনাদের এখানে এলে আমরা তাকে ভালভাবে তল্লাশি করে তারপর ঢুকতে দিব। এসবই করা হবে আপনাদের নিরাপত্তার জন্য। সত্যিই পাকিস্তানী সেনাবাহিনী যা করেছে তা সম্পূর্ণ আমাদের নিরাপত্তার জন্যই করেছে। ২৬শে মার্চ দুপুরে আব্বাকে (শেখ মুজিব) যখন পাকিস্তানী আর্মিরা নিয়ে যায়, তখন জেনারেল টিক্কা খান নিজে এসে আব্বাকে ও মাকে সেলুট দিয়ে, আদবের সাথে দাঁড়িয়ে বিনয়ের সাথে (শেখ মুজিবকে) বলে, স্যার আপনাকে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান আলোচনার জন্য নিয়ে যেতে বলেছেন। আমি আপনাকে নিয়ে যেতে এসেছি। আপনাকে নেওয়ার জন্য বিশেষ বিমান তৈরি (স্পেশাল ফ্লাইট রেডি) আপনি তৈরি হয়ে নেন এবং আপনি ইচ্ছে করলে ম্যাডাম (বেগম মুজিব) সহ যে কাউকে সঙ্গে নিতে পারেন। আব্বা-মা'র সঙ্গে আলোচনা করে একাই গেলেন। পাকিস্তান আর্মি যতদিন ডিউটি করেছে এসেই প্রথমে সেলুট দিয়েছে। শুধু তাই নয়, আমার দাদীর সামান্য জ্বর হলে পাকিস্তানীরা হেলিকপ্টার করে টুঙ্গিপাড়া থেকে দাদীকে ঢাকা এনে পি জি হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছে। জয় (শেখ হাসিনার ছেলে) তখন পেটে, আমাকে প্রতি সপ্তাহে সি এম এইচ (সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে) নিয়ে চেকআপ করাতো। জয় হওয়ার একমাস আগে আমাকে সি এম এইচ-এ ভর্তি করিয়েছে। '৭১ সালে জয়' জন্ম হওয়ার পর পাকিস্তান আর্মিরা খুশিতে মিষ্টি বাঁটোয়ারা করেছে এবং জয় হওয়ার সমস্ত খরচ পাকিস্তানীরাই বহন করেছে। আমরা যেখানে খুশি যেতাম। পাকিস্তানীরা দু'টি জীপ করে আমাদের সাথে যেতো। নিরাপত্তার জন্য পাহারা দিত। আর বাংলাদেশের আর্মিরা! জানোয়ারের দল, অমানুষের দল এই অমানুষ জানোয়ারেরা আমার বাবা-মা, ভাই সবাইকে মেরেছ-এদের যেন ধ্বংস হয়।
    • মতিউর রহমান রেন্টু, আমার ফাঁসি চাই, পৃঃ ৫৩-৫৪
  • কার কত টাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানার এখন একই একাউন্ট, একই হিসাব। দুই বোনের মধ্যে অনেক ঝগড়া-ঝাটির পর দু'জনে মিলে একটি একাউন্ট হওয়ার বিনিময়ে আপোষ করা হয়েছে। এই দুই বোনের বর্তমানে আমেরিকায় (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) তিনটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর হয়েছে। এর একটি চালায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে পুতুল ও তার স্বামী। অপরটি চালায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে জয় এবং তৃতীয়টি চালায় প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানার ছেলে ববি। এছাড়া এই দুই বোনের বিভিন্ন দেশে প্রায় তিন থেকে চার হাজার কোটি টাকা নগদ আছে। প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই শেখ হেলাল এমপি প্রায় হাজার কোটি কোটি টাকার উপরে মালিক। প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো বোন লুনা এবং মিনা শত শত কোটি টাকার মালিক। প্রধানমন্ত্রীর অপর চাচাতো ভাই রুবেল ও তার অন্যান্য ভাইয়েরা শত কোটি টাকার মালিক হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী চাচাতো চাচা শেখ হাফিজুর রহমান টোকন প্রায় পাঁচশ কোটি টাকার মালিক। প্রধানমন্ত্রীর বাবার ফুফাতো ভাইয়ের ছেলে প্রধানমন্ত্রীর এ পি এস বাহাউদ্দিন নাসিম এবং তার চাচাতো ভাই প্রধানমন্ত্রীর চীফ সিকিউরিটি নজিব আহাম্মেদ নজিব ও তার ভাইয়েরা মিলে বর্তমানে কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট এবং দূর সম্পর্কের আত্মীয়-স্বজনেরা এমন কেউ নেই, যিনি বর্তমানে শত কোটি টাকার মালিক হননি।
    • মতিউর রহমান রেন্টু, আমার ফাঁসি চাই, পৃঃ ১৩৪-১৩৫
  • দুই বোনের ভাগাভাগি: বর্তমানে বাংলাদেশের যিনি সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী, যার অঙ্গুলী হেলনে এদেশের বড় বড় ব্যবসা-বাণিজ্য, উচ্চ পর্যায়ের চাকরী-বাকরী নিয়ন্ত্রিত হয়, সরকারের সামরিক-বেসামরিক আমলা, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয়স্বজন যে যেখানেই আছেন তাদের মধ্যে সবচাইতে শক্তিশালী ক্ষমতাধর, সামরিক সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে যে কোন পর্যায় পর্যন্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদোন্নতি পদাবনতি এবং বদলী যার মনোবাসনা বা ইচ্ছানুযায়ী হয়, সরকারী পর্যায়ে ব্যবসা-বাণিজ্য না পাওয়া যার উপর নির্ভর করে, এদেশের বৈধ-অবৈধ সমস্ত টাকা-পয়সা যার হাতে জমা হয়, বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবারের ক্যাশিয়ার যিনি, একমাত্র রাজনীতি ছাড়া গোটা দেশের অর্থনীতি একক হস্তে পরিচালনা করেন যিনি, এদেশের মানুষের জন্য বিন্দুমাত্র ভালবাসা মায়া-মমতার লেশমাত্র নেই যার, এদেশের মানুষকে শিয়াল (শৃগাল) কুত্তার (কুকুরের) জাতি, নিমকহারামের জাত ছাড়া অন্য কিছু ভাবেন না, অন্য কিছু বলেন না যিনি, মাঝ রাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলে অথবা রাত পোহালে যদি শুনতে পেতেন, এদেশের বারো কোটি মানুষ সকলেই মহাপ্রলয়ে নিহত হয়ে গেছে তাহলে খুশিতে আত্মহারা হয়ে যাবেন যিনি, সদাসর্বদত্র, এদেশের মানুষের অনিষ্ট-অমঙ্গল ছাড়া অন্য কিছু চিন্তা এবং কামনা করেন না যিনি, তিনি আর কেউ নন, তিনি হলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান-এর ২য় কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদরের ছোট বোন শেখ রেহানা। ৭ই জুলাই ১৯৯৬-এর অপরাহ্নে তিনি এলেন গণভবনে। তারই বড় বোন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। এসেই সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিৎকার করে বললেন, এই, শেখ মুজিব কি একা তোমার বাপ? শেখ মুজিব কি আমার বাপ না? আমার ভাগ কই? আমি কি ভাগ পাই না? আমার ৫টা মন্ত্রী নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মন্ত্রী পাবি না। চালাইতেছি, চালাইতে দে। যত টাকা দরকার পাবি। সব তুই নে। দুই বোনের চিৎকারের চোটে প্রধানমন্ত্রীর ২৪ ঘন্টা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী ও নৌ-বাহিনীর ৬৪ (চৌষট্টি) জন অফিসার সমন্বয়ে ১৬শ (ষোলশ) সদস্যের একটি বিশেষ দল পিজি আর (প্রাইম মিনিস্টার গার্ড রেজিমেন্ট)-এর ঐ দিন ডিউটিরত সদস্যরা তাদের দায়িত্ব পালনে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চোখের ইশারায় তাদেরকে সরিয়ে এনে, এটা প্রধানমন্ত্রীর একান্তই নিজস্ব এবং পারিবারিক ব্যাপার বলে ওভারলুক (দৃষ্টি এড়িয়ে যাওয়া) করার পরামর্শ দেওয়া হয়। আজই যদি আমার পাঁচজনকে মন্ত্রী না করো, তবে আমি আমেরিকায় চলে যাব। যখন আসবো তখন সমান ভাগ নিয়ে আসবো। মনে রেখ। এ কথা বলে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানা চলে গেলেন। পরবর্তী পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমেরিকায় যেয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ে ভাগাভাগি এবং আপোষ রফা করে তার ছোট বোন শেখ রেহানাকে দেশে নিয়ে আসেন এই শর্তে যে, শেখ রেহানাই হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্যাশিয়ার। সমস্ত টাকা-পয়সা শেখ রেহানার হাত দিয়ে আসতে হবে এবং শেখ হাসিনার পর শেখ রেহানাই হবেন শেখ মুজিবের উত্তরসূরী।
    • মতিউর রহমান রেন্টু, আমার ফাঁসি চাই, পৃঃ ১০২-১০৩
  • হিন্দুরাই আমার বল-ভরসা: বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যেদিন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ঘোষণা করলেন, সেদিন তিনি নিজে মোট ৪টি আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দেন। গোপালগঞ্জের ১টি, বাগেরহাটের ২টি এবং ঢাকার ডেমরা থেকে ১টি। এই মোট ৪টি আসন থেকে শেখ হাসিনা নিজে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দেওয়ার পরের দিনই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ঢাকার ডেমরা আসন থেকে তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিলে, ঢাকার মেয়র মোহাম্মদ হানিফের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করে বলেন, আপনি গোপালগঞ্জ আর বাগেরহাটের (টুঙ্গিপাড়া মধুমতি নদীর অপরপার) ৩টি আসন থেকে দাঁড়ালেন অথচ ঢাকার একটি আসন থেকেও নির্বাচনে দাঁড়ালেন না। ৫টি আসন থেকে তো আপনি দাঁড়ালে পারেনই। খালেদা জিয়া ৫টি আসন থেকে দাঁড়িয়েছে; আপনিও ৫টি আসন থেকে দাঁড়ান। আপনি আমাদের নেত্রী, আপনি অন্তত ঢাকার দু'টি আসন থেকে নির্বাচনে দাঁড়ান। জবাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বললেন, গোপালগঞ্জে আর বাগেরহাটে তো ৭০% (সত্তর শতাংশ) হিন্দু আছে; ঢাকায় কত পার্সেন্ট হিন্দু আছে? হিন্দুরা ছাড়া মুসলমানরা আমাকে ভোট দেয় না। মুসলমানরা বেঈমান ও অকৃতজ্ঞ। হিন্দুরা ঈমানদার এবং কৃতজ্ঞ। আমি হিন্দুদের উপর ভরসা করতে পারি, বিশ্বাস রাখতে পারি। কিন্তু মুসলমানদের বিশ্বাস করা যায় না। ভরসা করা যায় না। এই জন্যই তো আমি সত্তর শতাংশ হিন্দুদের অঞ্চল গোপালগঞ্জ আর বাগেরহাট থেকে ৩টি (তিন) আসনে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু ঢাকা থেকে ১টি (এক) আসনেও দাঁড়াইনি। যাও ডেমরা থেকে দাঁড়িয়েছিলাম খোঁজ খবর নিয়ে দেখলাম, ডেমরায় তেমন হিন্দু নে, তাই প্রত্যাহার করে নিয়েছি। ঢাকার মেয়র হানিফ বললেন, এটা আপনার ভুল ধারণা। মুসলমানরা ভোট না দিলে আপনার অন্যান্য প্রার্থীরা জিতে কিভাবে? বঙ্গবন্ধু কন্যা বললেন, মূলতঃ হিন্দুদের ব্যাংক ভোটটা পুরাটা পায়, বাকী আত্মীয়-স্বজন, নিজস্ব লোকলস্কর দিয়ে গুতিয়ে গাতিয়ে কোন রকমে বেরিয়ে আসে। হিন্দুরা না থাকলে আমি, আমার দল ১টি (এক) আসনেও জিততে পারতাম না। হিন্দুরা যাতে নিরাপদে-নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে এই জন্যই তো আমি এত আন্দোলন-সংগ্রাম করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আদায় করেছি। হিন্দুরাই আমার বল। হিন্দুরাই আমার ভরসা। নির্বাচনী প্রচারের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। সারা দেশ পোস্টার, প্লে-কার্ড ফেস্টুন, ব্যানার এবং দেয়াল লিখনে ছেয়ে গেছে। কোথাও এতটুকু খালি জায়গা নেই। প্রতিদিন রাতে চলছে মিটিং আর মিছিল।
    • মতিউর রহমান রেন্টু, আমার ফাঁসি চাই, পৃঃ ৯১
  • নৌকা: দুর্গা দেবীর বাহন: ১৯৯৬-এর ১২ই জুন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রার্থী মনোনয়ন দিল। আওয়ামী লীগও মনোনয়ন দিল। গোপালগঞ্জের তিনটি আসন এবং বাগেরহাটে দু'টি আসনের মোট ভোটারের প্রায় পঁয়ষট্টি শতাংশ ভোটার হিন্দু সম্প্রদায় হওয়ায় স্বাভাবিক কারণেই এই পাঁচটি আসনে আওয়ামী লীগ-এর নৌকামার্কা প্রার্থী ছাড়া অন্য কোন দলের অন্য কোন মার্কার প্রার্থী নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার কোনই সম্ভাবনা নেই এবং কোনকালেই বিজয়ী হয়নি এবং হবেও না। (১) মোকসেদপুর ও কাশিয়ানী, (২) গোপালগঞ্জ ও কাশিয়ানী (৩) টুঙ্গিপাড়া ও কোটালিপাড়া (৪) মোল্লার হাট ও ফকিরের হাট (৫) বইঠাঘাটা ও দাকোপ এই ৫টি (পাঁচ) আসনে যতদিন পর্যন্ত পঁয়ষট্টি শতাংশ হিন্দু সম্প্রদায় থাকবে ততদিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ প্রার্থী নৌকা মার্কায় একচেটিয়াভাবে বিজয়ী হতে থাকবে। এই পাঁচটি আসনের প্রার্থীদের এলাকায় কোন কাজ করতে হয় না। যে কোন প্রকারেই হোক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কা টিকিট নিলেই সে যে কেউই হোক ৭৫% ভোটে বিজয়ী হবে। এই ৫টি আসনকে বলা হয় ভিক্ষার আসন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দয়া করে যাকে এই অঞ্চলের আসন ভিক্ষা দেবেন, তিনিই এই অঞ্চলের জনপ্রতিনিধি বা জাতীয় সংসদ সদস্য অর্থাৎ এমপি। এই অঞ্চলের লেখাপড়া প্রায় অজানা একজন প্রবীণ বৃদ্ধ হিন্দু লোককে কেন আওয়ামী লীগকে ভোট দেন জানতে চাইলে, ঐ প্রবীণ বৃদ্ধ হিন্দু লোকটি বলেন, আমরা আওয়ামী লীগ টিগ বুঝি না। আওয়ামী লীগকে ভোটও দেই না। আমরা ভোট দেই নৌকায়। অর্থাৎ নৌকা মার্কায় ভোট দেই। নৌকা মার্কায় কেন ভোট দেন জানতে চাইলে তিনি বলেন বারে, নৌকায় ভোট দেব না? নৌকা যে দেবীর বাহন। মা দুর্গা দেবী এই বাহনে (নৌকা) চড়েই স্বর্গ থেকে ধরায় এসেছিলেন, অসুর (পাপিষ্ঠ) কে দমন করার জন্য। আর আমরা যদি মা দুর্গার বাহন নৌকায় ভোট না দেই, তাইলে দেবীর বাহনের অমর্যাদা হবে। মা দুর্গা অভিসম্পাত দেবে। এ জন্য দেখেন না, ভোটের সময় আমরা সকলেই গিয়ে, মা দুর্গা দেবীকে খুশি করার জন্য মা দুর্গা, মা দুর্গা বলে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আসি। একজনও বাদ যাই না। সকলে গিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট না দিলে মা দুর্গা অসন্তুষ্ট হবে। আমাদের অমঙ্গল হবে। তাই যত কাম থাকুক, যত ঝামেলাই থাকুক, কোন রকমে শুধু ভোটকেন্দ্রে যেতে পারলেই হলো। আমরা সকলেই গিয়া নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আসবো।
    • মতিউর রহমান রেন্টু, আমার ফাঁসি চাই, পৃঃ ৮৯-৯০
  • মির্জা ফখরুল ক্ষমতা দখল করার জন্য নেতাকর্মীদের অতিরিক্ত কাপড় নিয়ে ঢাকা আসতে বলেছেন। তো আমরা কি দাঁড়িয়ে ললিপপ খাবো? আমরাও প্রস্তুত আছি। অবরোধ করলে বিএনপি অবরোধ হয়ে যাবে। খেলা হবে। বিএনপির পরিণতি শাপলা চত্বরের থেকেও করুণ হবে। শেখ হাসিনা মাথা নত করবে না।”
  • রুমালে গ্লিসারিন: পরদিন সকালে লালবাগে নিহত সাত জনের লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে দেখতে যাওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু কন্যা হাসিনা বলতে থাকেন, আমার (শেখ হাসিনা) রুমালে একটু গ্লিসারিন মেখে দাও, ঐ যে, নায়িকারা অভিনয়ের সময় গ্লিসারিন দিয়ে চোখের পানি বের করে কান্নার অভিনয় করে। আমার রুমালে ঐ রকমের গ্লিসারিন লাগিয়ে দাও, যাতে আমি লাশ দেখে রুমাল ধরতেই চোখে পানি এসে যায়। একজন বলল, গ্লিসারিনের দরকার নেই, শুধু চোখে রুমাল ধরে রাখবেন তাতেই মনে হবে আপনি কাঁদছেন। আর আমরা ফটো সাংবাদিক (ফটো সাংবাদিক) ভাইদের বলে দেব ছবির নীচে আপনি কাঁদছেন ক্যাপশন লাগিয়ে দিতে। হাসপাতালের মর্গে নিহত সাত জনের লাশ দেখে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা চোখে রুমাল ধরলে সঙ্গে সঙ্গে সাংবাদিকগণ অসংখ্য ছবি তুলতো। ছবি তোলা শেষে বঙ্গবন্ধু কন্যা গাড়িতে। উঠলেন। গাড়ি চলতে শুরু করলো। তখনও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার চোখে রুমাল। গাড়ির চালক ড্রাইভার জালাল বলল, আপা (শেখ হাসিনা) এখন রুমাল নামান ফটো সাংবাদিক নেই। গাড়ির সকল আরোহী হেসে উঠলো। জননেত্রী শেখ হাসিনা বললেন, ঠিক মতো দেখেছ তো, কোন ফটো সাংবাদিক নেই তো? না, নেই। তাহলে আমি (শেখ হাসিনা) এবার রুমাল নামাই।
    • মতিউর রহমান রেন্টু, আমার ফাঁসি চাই, পৃঃ ৭১-৭২
  • আজ আমি বেশি খাব: ২৯ নং মিন্টু রোডের বাসায় এসে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বললেন, ময়না (মিসেস মতিযুর রহমান রেন্টু) খাওয়া-দাওয়া বেশি করে এনেছ তো? লাশ দেখে এসেছি, লাশ। আজ আমি বেশি করে খাব। তারপর তিনি জিন্দেগী জিন্দেগী গাইতে গাইতে, নাচতে লাগলেন। সত্যি সত্যিই তিনি (শেখ হাসিনা) অস্বাভাবিক রকমের বেশি খেলেন। এমনিতেই তিনি (শেখ হাসিনা), বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে নিহতদের লাশ দেখে এসে স্বাভাবিকের চাইতে অনেক বেশি খেতেন। কিন্তু আজ খেলেনত অস্বাভাবিকের চাইতেও অনেক বেশি।
    • মতিউর রহমান রেন্টু, আমার ফাঁসি চাই, পৃঃ ৭২
  • ১৯৯৪ সালের ২৬শে অথবা ২৭শে জুন সন্ধ্যাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি টেলিফোন করে ২৬শে জুন '৯৪ শহীদ জননী জাহানারা ইমামের মৃত্যু হয়েছে বলে সংবাদ দিলে, জননেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আনন্দে নাচতে থাকেন আর বলতে থাকেন মিষ্টি খাও, মিষ্টি। আমার একটা প্রতিদ্বন্দ্বী দুনিয়া থেকে বিদায় হয়েছে। আল্লাহ বাঁচাইছে। নেত্রী হতে চেয়েছিল। আমার জায়গা দখল করতে চেয়েছিল। জাহানারা ইমাম মরেছে আপদ গেছে। বাঁচা গেছে। আমার জায়গা দখল করতে চেয়েছিল। তোমরা জান না, ইন্ডিয়ান গোয়েন্দা এজেন্সি 'র' (ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার নাম 'র') আমার পরিবর্তে জাহানারা ইমামকে নেতৃত্বে বসাতে চেয়েছিল। বেটি মরছে, মিষ্টি খাও। ফকিরকে পয়সা দেও। এর কয়েকদিন পরে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের লাশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর এলে, জননেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, চল, এয়ারপোর্টে যাই, আপদের লাশটা এনে কবরে ফেলি। এরপর জননেত্রী শেখ হাসিনা তার লাল রঙের নিশান পেট্রোল জীপে করে বিমান বন্দর-এর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন। যেতে যেতে বলতে লাগলেন, বেটি (জাহানারা ইমাম) আমারে অসম্ভব জ্বালাইছে (জ্বালিয়েছে)। ওর মরা মুখও দেখতে ইচ্ছে করে না। কিন্তু না যেয়ে তো উপায় নেই। পলিটিক্স-এর (রাজনীতির) ব্যবসায় ইচ্ছে না থাকলেও করতে হয়। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বিমান বন্দরের রানওয়ে পর্যন্ত গেলেন ঠিকই, কিন্তু শহীদ জননী জাহানারা ইমামের লাশের ধারে-কাছেও গেলেন না।
    • মতিউর রহমান রেন্টু, আমার ফাঁসি চাই, পৃঃ ৭৩
  • শেখ হাসিনা ও গোলাম আযমের ২য় বৈঠক: ৩০শে জানুয়ারী ১৯৯৪ ঢাকা সিটি করপোরেশন-এর মেয়র ও কমিশনার নির্বাচন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফকে ঢাকার মেয়র পদে মনোনয়ন দিয়েছে। তোড়জোড়ে নির্বাচনী প্রচার-প্রপাগান্ডা এগিয়ে চলছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে দলের সকল নেতা-কর্মীই বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের কাছে মেয়র পদে মাছ মার্কায় হানিফের জন্য ভোট চাইছে। অধিক রাত পর্যন্ত চলছে মিছিল এবং নির্বাচনী জনসভা। প্রতিটি পাড়া-মহল্লা, অলি-গলিতে চলছে মেয়র কমিশনার নির্বাচনের কাজ। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামাত, কমিউনিস্ট পার্টিসহ সকল রাজনৈতিক দল নির্বাচনী কাজে ভীষণ ব্যস্ত। ঢাকায় টানটান নির্বাচনী উত্তেজনা। নির্বাচনের আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। ২৫শে জানুয়ারী সন্ধ্যা বেলায় ধানমন্ডি ৮/এ রোডে বঙ্গবন্ধুর চাচাতো ভাই শেখ হাফিজুর রহমান টোকনের বাসায় (শেখ হাফিজুর রহমান টোকন বর্তমানে বঙ্গবন্ধু যাদুঘরের মহাসচিব) '৭১-এর যুদ্ধাপরাধী জামাত নেতা ঘাতক গোলাম আযমের সাথে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দ্বিতীয় বৈঠক হয়। এই বৈঠকে ঘাতক গোলাম আযম মেয়র নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীকে সমর্থন না দেওয়ার আশ্বাস দিলে শেখ হাসিনাও রাজনীতিতে জামাতকে আক্রমণ না করার আশ্বাস দেন।
    • মতিউর রহমান রেন্টু, আমার ফাঁসি চাই, পৃঃ ৬৮

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা