হরিচাঁদ ঠাকুর

হিন্দুধর্মীয় সাধক ও মতুয়া সম্প্রদায়ের গুরু ও সমাজ সংস্কারক

হরিচাঁদ ঠাকুর [মধুকৃষ্ণাতিথি, মহাবারুনী, বুধবার , ১২১৮ বঙ্গাব্দ] (৩০ মার্চ ১৮১২ – ৫ মার্চ ১৮৭৮) মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রবর্তক। তিনি সমাজের পিছিয়ে পড়া হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেদের জন্য এবং সমাজের দলিত মানুষের উন্নয়নে নানান কাজ করেছিলেন। এই লক্ষ্যে হরিতনয় গুরুচাঁদ ঠাকুর ০৯ অক্টোবর, ১৯৩২ সালে মতুয়া হিন্দুদের জন্য একমাত্র সংগঠন শ্রীশ্রী হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন যা পরর্বতীতে শ্রীশ্রী হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ মতুয়া মিশন নামে পরিচালিত হয়।

   

যে যাহারে ভক্তি করে সে তার ঈশ্বর।

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত পৃঃ নং ১
   

জীবে দয়া নামে রুচি, মানুষেতে নিষ্ঠা।
ইহা ছাড়া আর যত সব ক্রিয়া ভ্রষ্টা॥

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত পৃঃ নং ১১
   

সর্ব্ব ধর্ম্ম লঙ্ঘি এবে করিলেন স্থূল।
শুদ্ধ মানুষেতে আর্তি এই হয় মূল॥

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত পৃঃ নং ১১
   

করিবে গৃহস্থ ধর্ম লয়ে নিজ নারী।
গৃহে থেকে সন্ন্যাসী বানপ্রস্থ ব্রহ্মচারী॥

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত পৃঃ নং ৮
   

পরনারী মাতৃতুল্য মিথ্যা নাহি কবে।
পর দুঃখে দুঃখী সচ্চরিত্র সদা রবে॥

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত পৃঃ নং ৮
   

গৃহধর্ম গৃহকর্ম করিবে সকল ।
হাতে কাম মুখে নাম ভক্তিই প্রবল॥

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত পৃঃ নং ৮
   

“সব ধর্মের উর্ধে হচ্ছে মানব ধর্ম।
সেটাই সবার সেরা ধর্ম।
নীচ হয়ে করিব যে নীচের উদ্ধার।
অতি নিম্নে না নামিলে কিসের অবতার॥

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত পৃঃ ১৫
   

“বিশ্বভরে এই নীতি দেখি পরস্পর।
যে যাহারে উদ্ধার করে সে তার ঈশ্বর॥

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত
   

“ঠাকুর কহেন বাছা ধর্ম কর্ম সার।
সর্ব ধর্ম হ’তে শ্রেষ্ঠ পর উপকার॥

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত
   

“খাও বা না খাও তা’তে কোন দুঃখ নাই।
ছেলে পিলে শিক্ষা দেও এই আমি চাই”॥

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত
   

ছেলে মেয়েকে দিতে শিক্ষা
প্রয়োজনে করিবে ভিক্ষা।
শিক্ষা-হারা দীক্ষা-হারা ঘরে নাহি ধন।
এই সবে জানি আমি আপনার জন॥

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত
   

” সমাজে পুরুষ পাবে যেই অধিকার।
নারীও পাইবে তাহা করিলে বিচার॥

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত
   

“শুন কন্যা, গুণে ধন্যা, আমার বচন।
জাতি-ভাগ মোর ঠাঁই পাবে না কখন॥

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত
   

নরাকারে ভূমন্ডলে যত জন আছে।
‘এক জাতি’ বলে মান্য পাবে মোর কাছে॥

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত
   

কুকুরের উচ্ছিষ্ট প্রসাদ পেলেও খাই।
বেদ বিধি শৌচাচার নাহি মানি তাই॥

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত
   

কোথায় ব্রাহ্মণ দেখ, কোথায় বৈষ্ণব।
স্বার্থ বসে অর্থ লোভী যত ভন্ড সব॥
স্বার্থশূন্য নামে মত্ত মতুয়ার গণ।

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত
   

“ব্রাহ্মণ রচিত যত অভিনব গ্রন্থ।
‘ব্রাহ্মণ প্রধান’ মার্কা বিজ্ঞাপন যন্ত্র॥

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত
   

“আর এক জন্ম বাকী রহিল প্রভুর।
এই সেই অবতার শ্রীহরি ঠাকুর॥

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত
   

”গুরুকে না চিনে বেটা করে গুরুগিরি।
অহংকারী গুরুকার্যে নহে অধিকারী॥

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত
   

কিবা শূদ্র কিবা ন্যাসী কিবা যোগী কয়।
যেই জানে আথতত্ত্ব সেই শ্রেষ্ঠ হয়॥

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত
   

নারী দিয়ে অঙ্গসেবা হবে ধর্মক্ষয়।
তেল ঘসা অঙ্গসেবা মহা ব্যাভিচার॥

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত
   

গৃহেতে থাকিয়া যার ভাবোদয় হয়।
সেই সে পরম সাধু জানিবে নিশ্চয়॥

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত
   

দেহের ইন্দ্রিয় বশ করেছে যে জন।
তার দরশনে সব তীর্থ দরশন॥

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত পৃঃ নং ৩২
   

যে যাহারে ভক্তি করে সে তার ঈশ্বর।

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত পৃঃ নং ১
   

যত যত তীর্থ আছে অবনী ভিতরে।
সত্যবাক্য সম কক্ষ হইতে না পারে॥

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত পৃঃ নং ৩২
   

দীক্ষা নাই, করিবে না তীর্থ পর্যটন।
মুক্তিস্পৃহা শূন্য, নাহি সাধন ভজন॥॥

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত
   

কুকুরের উচ্ছিষ্ট প্রসাদ পেলেও খাই।
বেদ বিধি শৌচাচার নাহি মানি তাই।।

হরিলীলামৃত পৃঃ ১০৪
   

অঙ্গ ধৌত বস্ত্র ধৌত ছাপা জপমালা।
বহিরঙ্গে বাহ্য ক্রিয়া সব ধুলা খেলা॥
যত দিন নাহি ঘুচে চিত্ত অন্ধকার।
তত দিন শৌচাচার ডুবাডুবি

শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত পৃঃ নং ১০৬
   

কোথায় ব্রাহ্মণ দেখ, কোথায় বৈষ্ণব।
স্বার্থ বসে অর্থ লোভী যত ভণ্ড সব।।

লীলামৃত ঠাকুরবাড়ি, ঠাকুর নগর প্রকাশ, পৃঃ ৯৪

দ্বাদশ আজ্ঞা

সম্পাদনা
  1. সদা সত্য কথা বলিবে।
  2. পিতা-মাতাকে দেবজ্ঞানে ভক্তি করিবে।
  3. নারীকে মাতৃজ্ঞান করিবে।
  4. জগৎকে ভালোবাসিবে।
  5. সকল ধর্মের প্রতি উদার থাকিবে।
  6. জাতিভেদ করিবে না।
  7. হরিমন্দির প্রতিষ্ঠা করিবে।
  8. প্রত্যহ প্রার্থনা করিবে।
  9. ঈশ্বরে আত্মদান করিবে।
  10. বহিরঙ্গে সাধু সাজবে না।
  11. ষড়রিপু বশে রাখিবে।
  12. হাতে কাম ও মুখে নাম করিবে।

তার সম্পর্কে উক্তি

সম্পাদনা
   

রাম হরি কৃষ্ণ হরি হরি গোরাচাঁদ
সর্ব হরি মিলে এই পূর্ণ হরিচাঁদ।

ভক্তদের ভজন

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা