ঢাকা

বাংলাদেশের রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর

ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। প্রশাসনিকভাবে এটি ঢাকা জেলার প্রধান শহর। ভৌগোলিকভাবে এটি বাংলাদেশের মধ্যভাগে বুড়িগঙ্গা নদীর উত্তর তীরে একটি সমতল এলাকাতে অবস্থিত। ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ায় মুম্বাইয়ের পরে দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির শহর। ঢাকার জিডিপি ১৬২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২০ সালের হিসেবে। এছাড়া ঢাকার পিপিপি ২৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২০ সালের হিসেবে। ভৌগোলিকভাবে ঢাকা একটি অতিমহানগরী বা মেগাসিটি; ঢাকা মহানগরী এলাকার জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি ১০ লক্ষ, যা দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১১ ভাগ। জনসংখ্যার বিচারে ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম শহর। জনঘনত্বের বিচারে ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহর; ৩০৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই শহরে প্রতি বর্গকিলোমিটার এলাকায় ২৩ হাজার লোক বাস করে।

ঢাকা, বাংলাদেশের রাজধানী
  • ঢাকা একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয়, দরিদ্র, দূষিত, ও সবুজাভ নদীর শহর, বাংলাদেশের মাঝখানে যা বিশাল অংশ-নিমজ্জিত জলাভূমি। রাজধানী শহরটি গাড়ি, বেতার, কথোপকথন, মুয়াজ্জিন ও যান্ত্রিক বিপর্যয়ের ফলে কোলাহলপূর্ণভাবে সরব। লোকজন বাষ্পীয় তাপে, তীব্র কুয়াশা ও ধুলোয়, নির্মাণস্থলে পাথর তুলে বা একটি ছোট দোকানে একসাথে ধরে পরিশ্রম করে। রাস্তাগুলো রঙবেরঙে সাজানো রিকশায় ছেয়ে যায়, এবং রিকশার সাথে বাসের আকস্মিক লেন পরিবর্তনে খারাপ হয়ে যাওয়ার দাগ বহন করে, যাদের পার্শ্বদেশ ছিন্নভিন্ন ও রিকশার চেয়ে একটু কম সুন্দরভাবে আঁকা। লোকজন বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালায়। তারা আরও খারাপভাবে হাঁটে। খেঁজুর গাছগুলো একটি অদম্য সূর্য থেকে আশ্রয় দেয়। রাতের বেলা, খুব দরিদ্র শহরগুলোর দিকে যাওয়ার পথে এটি সত্যই অন্ধকার হয়ে যায়; এখানে শুধু গরিশ নিয়ন ও ফ্লুরোসেন্ট আলোর একটি ভগ্নাংশ দেখতে পাওয়া যায় যা দক্ষিণ এশিয়ার ধনী অতিমহানগরীগুলোকে আলোকিত করে।
    • বেস, জি.জে (২০১৪), দ্য ব্লাড টেলিগ্রাম: নিক্সন, কিসিঞ্জার, অ্যান্ড অ্যা ফরগোটেন জেনোসাইড
  • শহরটি বাংলার মধ্যে বৃহত্তম, এবং এটি সেরা ও সস্তা তুলা ও রেশম উৎপাদন করে। রসদের প্রাচুর্য ও সস্তাতা অবিশ্বাস্য, এবং দেশটি বাসিন্দাতে পূর্ণ, কিন্তু এটি সহ্য করার মতো সাহসের জন্ম দেয় না, কারণ পাঁচ বা ছয়জন সশস্ত্র লোক এক হাজারকে তাড়া করবে।
    • ক্যাপ্টেন হ্যামিল্টন, ইন ফোরস্টার, খণ্ড. ১, পৃ., ২০১৮-২০১৯। ফোরস্টার, জর্জ, অ্যা জার্নি ফ্রম বেঙ্গল টু ইংল্যান্ড, ২ খণ্ড., ভাষা বিভাগ, পাঞ্জাব, ১৯৭০, প্রথম প্রকাশ ১৮০৮। উদ্ধৃতি: জৈন, এস., অ্যান্ড জৈন, এম. (২০১১)। দ্য ইন্ডিয়া দ্য সো: ফরেন একাউন্টস। নতুন দিল্লি: ওশেন বুকস। খণ্ড ৪।
    • হ্যামিল্টন, ১৬৮৮ থেকে ১৭২৩ পর্যন্ত ক্যাপ্টেন আলেকজান্ডার, কেপ অফ গুড-হোপ থেকে নিপ্পন পর্যন্ত ভূমি ও সমুদ্র ভ্রমণ করেন।
  • ঢাকায় পুলিশের মিত্রতায় মুসলমানরা দাঙ্গা শুরু করেছে। তারা হিন্দুদের বাড়িতে হামলা চালায়, নারীদের ধর্ষণ করে ও যারা বাঁধাদান করেছিল তাদের সবাইকে হত্যা করে। পুলিশের চোখের আড়ালে তারা পুরো পাড়া জ্বালিয়ে দেয়। এগুলো তখনই হস্তক্ষেপ করেছিল যখন একজন হিন্দু আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্র ধরেছিল। সেক্ষেত্রে তারা বাড়িতে ঢুকে অস্ত্র জব্দ ও লোকদের আটক করে। মুসলমানরা সশস্ত্র ছিল; তাদের পক্ষ থেকে তাদের সেই অধিকার ছিল। তাদের শান্ত করার জন্য কংগ্রেসের সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
    • মির্সিয়া ইলিয়াড, অন দ্য রিয়টস ইন ঢাকা, ১৯২৮-৩১ সালে লেখা তার ভ্রমণের দিনলিপি। জার্নাল দেস ইন্ডেস, ১৯৯২। পৃ. ১২৮। উদ্ধৃত: এলস্ট, কে. (২০১০)। দ্য জাফরান স্বস্তিকা: দ্য নোশন অফ "হিন্দু ফ্যাসিজম"। পৃ. ৮০৩।
  • ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট তারিখে ঢাকার সরকার নিজ দেশের মধ্যে যেন পরবাসী ছিল। ভারত থেকে চলে আসা হাজার হাজার সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের এখানে মাথা গোঁজার মতাে, কোনাে স্থানেরই ব্যবস্থা ছিল না। গত বছরের ১৫ আগস্টের আগে ঢাকা ছিল একটি মফস্বল নগর মাত্র।
    • ২১ মার্চ ১৯৪৮-এ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ, উদ্ধৃত: ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ও দলিলপত্র, সাহিদা বেগম।
  • ঢাকা শহর আইসা আমার আশা ফুরাইছে
    আরে লাল লাল নীল নীল বাতি দেইখ্যা
    নয়ন জুড়াইছে
    ঢাকা শহর আইসা আমার আশা ফুরাইছে
    মনের আশা ফুরাইছে
  • ইসলাম খানের সময় ঢাকা শহর পশ্চিমে চকবাজার থেকে পূর্বে সদরঘাট পর্যন্ত বিস্তার লাভ করেছিল এবং পরবর্তীকালে মোগলদের আগমনের ফলে পশ্চিমার্ধে বসতি স্থাপিত হয়। আরেকটি লক্ষণীয় ব্যাপার এই, শহরটির বিস্তার নদীতীরেই হয় এবং দেশের অভ্যন্তরে উত্তর দিকে শহরের বিস্তার ঘটেছিল কিনা জানা যায় না। সম্ভবত চকবাজার থেকে উত্তর দিকে এবং পশ্চিম দিকে শহরের তখন সবেমাত্র পত্তন হয়েছিল।
  • বর্তমান প্রবণতা অব্যাহত থাকলে একসময় মসজিদের শহর বা প্রাচ্যের ভেনিস হিসেবে পরিচিত ঢাকা শীঘ্রই বিপণীবিতানের শহরে তথা আকারহীন কংক্রিটের জঙ্গলে পরিণত হবে।

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা