মশা
কীটপতঙ্গের পরিবার
মশা হলো আর্থোপোডা পর্বের এক প্রকারের ছোট পতঙ্গ। অধিকাংশ প্রজাতির স্ত্রী মশা স্তন্যপায়ী প্রাণীর রক্ত পান করে থাকে। মশা এক যন্ত্রণাদায়ক পতঙ্গ। বিরক্তিকর উপদ্রবের পাশাপাশি তারা রোগজীবাণু সংক্রামণ করে। মশার কামড় থেকে মানব শরীরে বাসা বাঁধতে পারে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়ার মতো রোগ। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন পৃথিবীতে মশার জনসংখ্যা এত বেশি যে কোনোদিনই মশা সম্পূর্ণ নির্মূল করা সম্ভব নয়।
উক্তি
সম্পাদনা- আদাড়ের মশা পাঁদাড়ের মশা
জুটেছে মানস-সরে,
রক্ত-পদ্মে রক্ত না পেয়ে
ছেঁকে ধরে মধুকরে!- সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, বর্ষার মশা, বিদায়-আরতি- সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, চতুর্থ সংস্করণ, প্রকাশক- আর, এইচ, শ্রীমানী এণ্ড সন্স, পৃষ্ঠা ৪০
- যে-সকল মশা আমাদের রক্ত খাইতে আইসে তাহারা সকলেই স্ত্রী-মশা। পুরুষ-মশা নিরীহ লোক; সে ফুলের মধু খাইয়া জীবন ধারণ করে। উহাদের স্ত্রী পুরুষের মুখের গঠনেরও কতকটা তফাত আছে।
- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, মশা, বিবিধ প্রবন্ধ, উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, প্রকাশক- বসাক বুক স্টোর প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রকাশসাল-১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮৪১
- মশাদের মধ্যেও নানা জাতি আছে। নানা জাতি মশার মধ্যে কেবল এক জাতিই ম্যালেরিয়ার বীজ ছড়ায়। অপর মশারা ম্যালেরিয়া রোগীর রক্ত খাইলে, তাহা পেটের ভিতরে নষ্ট হইয়া যায়। কাজেই ইহারা সুস্থ লোককে কামড়াইলে, শরীরে ম্যালেরিয়া বীজ প্রবেশ করিতে পারে না।
- জগদানন্দ রায়, ম্যালেরিয়ার মশা, পোকা-মাকড়- জগদানন্দ রায়, প্রকাশক- ইণ্ডিয়ান প্রেস লিমিটেড, এলাহাবাদ, প্রকাশসাল- ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩০৬
- যেখানে রুপালি জ্যোৎস্না ভিজিতেছে শরের ভিতর,
যেখানে অনেক মশা বানায়েছে তাহাদের ঘর;
যেখানে সোনালি মাছ খুঁটে-খুঁটে খায়
সেই সব নীল মশা মৌন আকাঙ্ক্ষায়;- জীবনানন্দ দাশ, শব, জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা, প্রকাশক- নাভানা, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৬২
- মশা বললে, ‘সে আবার একটা কথা! এখুনি যাচ্ছি! দেখব হাতি বেটার কত শক্ত চামড়া!’ বলে, সে সকল দেশের সকল মশাকে ডেকে বলল, ‘তোরা আয় তো রে ভাই, দেখি হাতি বেটার কত শক্ত চামড়া।’ অমনি পীন্-পীন্-পীন্-পীন্ করে যত রাজ্যের মশা, বাপ বেটা ভাই বন্ধু মিলে হাতিকে কামড়াতে চলল। মশায় আকাশ ছেয়ে গেল, সূর্য ঢেকে গেল।
- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, টুনটুনি আর নাপিতের কথা, টুনটুনির বই- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, প্রকাশক- দেব সাহিত্য কুটীর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৭১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১১
- মশার বাচ্চা কখনই মাথা উপরে রাখিয়া মাছের মত সাঁতার দেয় না। লেজ উঁচু এবং মাথা নীচু করিয়া সাঁতার দেওয়াই ইহাদের স্বভাব। মাছের মত ইহাদের কান্কো নাই। আমরা যেমন নাকের ছিদ্র দিয়া বাতাস টানিয়া বাঁচিয়া থাকি, মশার বাচ্চারাও সেই রকম লেজে-লাগানো সরু নলের মত ছিদ্র দিয়া বাতাস টানিয়া বাঁচিয়া থাকে।
- জগদানন্দ রায়, মশার ডিম ও বাচ্চা, পোকা-মাকড়- জগদানন্দ রায়, দ্বিতীয় সংস্করণ, প্রকাশক- ইণ্ডিয়ান প্রেস লিমিটেড, এলাহাবাদ, প্রকাশসাল- ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩০৩
- কোনদিন হারু মাঝি নৌকায় ঘুমায়, কোনদিন নাগা ঘুমায়। বাড়ির চেয়ে নৌকায় মশা কম লাগে। গ্রামের মাঝামাঝি হারু মাঝির বাড়ি, নদী থেকে বেশী দূর নয়।
- মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, মাঝির ছেলে - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ, প্রকাশক- ইণ্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েটেড পাবলিশিং কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩৬ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৫
- টের পাই যূথচারী আঁধারের গাঢ় নিরুদ্দেশে
চারিদিকে মশারির ক্ষমাহীন বিরুদ্ধতা;
মশা তার অন্ধকার সঙ্ঘারামে জেগে থেকে জীবনের স্রোত ভালোবাসে।- জীবনানন্দ দাশ, আট বছর আগের একদিন, জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা, প্রকাশক- নাভানা, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭৫
- আমরা মশা মারি···যৎসামান্য রক্ত সে খায়, তা জেনেও।
- মাক্সিম গোর্কি, মা - ম্যাক্সিম গোর্কি, অনুবাদক- বিমল সেন, প্রকাশক- বর্মণ পাবলিশিং হাউস, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৫৭ বঙ্গাব্দ),পৃষ্ঠা ৯৬
- সহরটি বড় স্যাঁতস্যাঁতে; মশার উৎপাত ও জ্বরের প্রদুর্ভাবও এইজন্য এখানে বেশী। প্রতিভাশালী ডাক্তার রসের আবিষ্কারানুসারে আজকাল স্থির হইয়াছে যে, এক জাতীয় দূষিত মশক দংশনই ম্যালেরিয়া জ্বরের উৎপত্তির কারণ; সেই কারণে বর্ষার ঠিক শেষে ও শীতের প্রারম্ভে অর্থাৎ পূজার সময় ও পরে যখন মাটি অত্যন্ত ভিজা থাকে,সেই সময় মশাও বিস্তর জন্মে।
- ইন্দুমাধব মল্লিক, সিঙ্গাপুর, চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক, প্রকাশসাল- ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৩ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৪৭
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাউইকিপিডিয়ায় মশা সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।
উইকিঅভিধানে মশা শব্দটি খুঁজুন।
উইকিমিডিয়া কমন্সে মশা সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে।