মাছ

কর্ডাটা পর্বের অন্তর্গত

মাছ একটি শীতল রক্তবিশিষ্ট জলচর মেরুদণ্ডী প্রাণী যার শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য ফুলকা রয়েছে, চলাচলের জন্য যুগ্ম অথবা অযুগ্ম পাখনা বর্তমান। সাধারণত এদের দেহের উপরিভাগে আঁশ দ্বারা আবৃত। তবে আঁশ নেই এমন মাছের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। এরা সমুদ্রের লোনা জল এবং স্বাদু জলে বাস করে। পৃথিবীতে প্রায় ৩০-৪০ হাজার মাছের প্রজাতি পাওয়া যায়।

খোকা গেছে মাছ ধ’র্‌‌তে
ক্ষীর নদীর কূলে,
ছিপ্ নিয়ে গেল কোলা বেঙ,
মাছ নিয়ে গেল চিলে।
যোগীন্দ্রনাথ সরকার
  • চিংড়িকে আমরা মাছ বলি, কিন্তু সত্য কথা বলিতে গেলে ইহাকে জালের পোকা বলিতে হয়। ইহা প্রজাপতি মাকড়সা কেন্নো বা বিছেরই জাত-ভাই। আমরা যখন বেশ মজা করিয়া চিংড়ি মাছ খাই, তখন জলের পোকা খাইতেছি ইহা মনেই হয় না। কিন্তু চিংড়ি-মাছ খাঁটি পোকা।
    • জগদানন্দ রায়, চিংড়িমাছ, পোকা-মাকড়- জগদানন্দ রায়, প্রকাশক- ইণ্ডিয়ান প্রেস লিমিটেড, এলাহাবাদ, প্রকাশসাল- ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১১৮
  • খোকা গেছে মাছ ধ’র্‌‌তে
    ক্ষীর নদীর কূলে,
    ছিপ্ নিয়ে গেল কোলা বেঙ,
    মাছ নিয়ে গেল চিলে।
    • যোগীন্দ্রনাথ সরকার, খোকার মাছধরা, খুকুমণির ছড়া - যোগীন্দ্রনাথ সরকার, প্রকাশক- সিটি বুক সোসাইটি, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দ (১৩০৬ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১০১
  • ভাবের সরোবরে আমরা জাল ফেলিয়া মাছ ধরিতে পারি না; ছিপ ফেলিয়া ধরিতে হয়। মাছ ধরিবার জাল আবিষ্কার হয় নাই, জানি না, কোন কালে হইবে কি না। ছিপ্ ফেলিয়া বসিয়া আছি, কখন্‌ মাছ আসিয়া ঠোক‍রায়। কিন্তু ঠোক‍্রাইলেই হইল না, মাছকে ডাঙ্গায় তোলাই আসল কাজ।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মাছ ধরা, বিবিধ প্রসঙ্গ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- আদি ব্রাহ্মসমাজ যন্ত্র, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দ (১২৯০ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮৫-৮৬
  • এক ঠোকরে মাছ বেঁধেনা
    সেই বা কেমন বড়শী?
    এক ডাকেতে সাড়া দেয়না
    সেই বা কেমন পড়শী?
    • শরৎচন্দ্র পণ্ডিত, পুরাতন চলিত কথা, ১৩২৬ সাল, ৬ষ্ঠ বর্য, ২৯শ সংখ্যা। দাদাঠাকুর রচনা সমগ্র, সম্পাদনা- জঙ্গীপুর-সংবাদগোষ্ঠী, প্রকাশক- বিশ্ববাণী প্রকাশনী, কলকাতা, প্রকাশসাল- জুন ১৯৮৩, পৃষ্ঠা ১৫১
  • ৫টার গাড়ী আসিলে কয়েক ঝুড়ি মাছ ও অন্যান্য দ্রব্যাদি নামিল। উকীল বাবুর মাছ আসিল না। তিনি বিব্রত হইয়া পড়িলেন। ষ্টেশন-মাষ্টারকে বলিলেন “মাষ্টার, এ ট্রেণে আমার মাছ না আসার কারণ ত আমি কিছুই বুঝ্‌তে পারছি না। নগেন বাবু চিঠি দিয়েছিলেন—এ ট্রেণে মাছ নিশ্চয়ই আস্‌বে। সেই ভরসাতেই আমি আপনাদি’কে নিমন্ত্রণ করেছি। এখন মাছ না এলে আমি যে কি কর্ব্ব, তা বুঝে উঠ্‌তে পারছি না।”
    • অনাথবন্ধু সেন, রুইমাছের মাথা, সচিত্র রেল অবতার - অনাথবন্ধু সেন, প্রকাশসাল- ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দ (১৩২০ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২১-২২
  • শেষে দেখি ইলিশ মাছের
    জলপানে আর রুচি নাই,
    চিতল মাছের মুখটা দেখেই
    প্রশ্ন তারে পুছি নাই।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কদমাগঞ্জ উজাড় করে, ছড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দ (১৩৯৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৩
  • রান্না যা কিছু হইয়াছে সবই বড়মাছের। কিশোরেরা ছোট মাছের জেলে। বড়মাছ বড় একটা মুখে পড়ে না, কেন না এ সব মাছ তারা ধরিতে পারে না। কোনোদিন কোনো বড় মাছ পথ ভুলিয়া তাদের জালে আসিয়া পড়িলেও পয়সার জন্য বেচিয়া ফেলিতে হয়।
    • অদ্বৈত মল্লবর্মণ, প্রবাস খণ্ড, তিতাস একটি নদীর নাম- অদ্বৈত মল্লবর্মণ, দ্বিতীয় সংস্করণ, প্রকাশক- পুথিঘর, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৫৩
  • অনেক কষ্টে জাল ডাঙ্গায় তুলে দেখ্‌ল তাতে এই বড় এক বােয়াল মাছ পড়েছে। সেই মাছটা জেলেকে মিনতি করে বল্‌ল, “আমাকে ছেড়ে দাও। আমি মাছ নই, এক রাজার ছেলে, ডাইনীতে যাদু করে আমাকে মাছ করে দিয়েছে। তুমি আমাকে মেরে কি করবে? আমাকে খেতে একটুও ভাল লাগবেনা।”
    • সুখলতা রাও, লােভের শাস্তি, গল্পের বই - সুখলতা রাও, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশক-ইউ, রায় এণ্ড সন্স্, প্রকাশসাল- ১৯১২ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৯ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৪৫
  • ঘুড়ির হাতে বাঁশের লাটাই,
    উড়তে থাকে ছেলে;
    বঁড়শি দিয়ে মানুষ গাঁথে,
    মাছেরা ছিপ ফেলে!
    • যোগীন্দ্রনাথ সরকার, মজার মুল্লুক, হাসি রাশি - যোগীন্দ্রনাথ সরকার, প্রকাশক- সিটি বুক সোসাইটি, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দ (১৩০৬ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৪৪
  • মেছনীরা ডাকিতেছে, “মাছ নেবে গো! কুল পুকুরের সস্তা মাছ, অমনি ছাড়ব—বোঝা বিক্রী হলেই বাঁচি।” কেহ ডাকিতেছে, “মাছ নেবে গো—ধন সাগরের মিঠা মাছ—যে কেনে তার পুনর্জন্ম হয় না—ধর্ম্ম অর্থ কাম মোক্ষ বিবির মুণ্ডে পরিণত হইয়া তার ঘর দ্বারে ছড়াছড়ি যায়, যার সাধ্য থাকে কিনিবে।
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বড় বাজার, কমলাকান্তের দপ্তর, কমলাকান্ত - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দ (১২৯২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১২৪
  • মশার বাচ্চা কখনই মাথা উপরে রাখিয়া মাছের মত সাঁতার দেয় না। লেজ উঁচু এবং মাথা নীচু করিয়া সাঁতার দেওয়াই ইহাদের স্বভাব। মাছের মত ইহাদের কান্‌কো নাই।
    • জগদানন্দ রায়, মশার ডিম ও বাচ্চা, পোকা-মাকড়- জগদানন্দ রায়, দ্বিতীয় সংস্করণ, প্রকাশক- ইণ্ডিয়ান প্রেস লিমিটেড, এলাহাবাদ, প্রকাশসাল- ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৩১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩০৩
  • যেখানে সোনালি মাছ খুঁটে-খুঁটে খায়
    সেই সব নীল মশা মৌন আকাঙ্ক্ষায়;
    • জীবনানন্দ দাশ, শব, জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা, প্রকাশক- নাভানা, প্রকাশস্থান- কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৬২
  • নদীতে খুব স্রোত, সেখানে মাছ ধরা শক্ত, আর যেখানে কম জল, সেখানে মাছও কম। সেইজন্য মাছরাঙ্গা বুদ্ধি করিয়া এই জলটুকু বাহির করিয়াছে, আর নিজে মাছ আনিয়া তাহাতে ছাড়িয়াছে। প্রথম শিখিবার সময়ে মরা মাছ ছিল, কিন্তু এবারের মাছ জীয়ন্ত। তাহাদের নদীতে পলাইবার পথ নাই, চারিদিক বন্ধ। কাজেই বাচ্চাদের মাছ ধরিবার সুবিধা, কারণ যত ইচ্ছা সময় লইতে পারে।
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, মাছরাঙ্গার স্কুল, উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র, প্রকাশক- বসাক বুক স্টোর প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৮৫৬

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা