সুখলতা রাও (২৩ অক্টোবর,১৮৮৬- ৯ জুলাই,১৯৬৯) একজন বাঙালি শিশুসাহিত্যিক ও সমাজসেবক। পিতা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ও ভ্রাতা সুকুমার রায় ছিলেন প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক এবং ভ্রাতুষ্পুত্র সত্যজিৎ রায় ছিলেন অস্কারবিজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা। সুখলতা রাও কলকাতার ব্রাহ্ম বালিকা বিদ্যালয় এবং বেথুন কলেজে পড়াশোনা করেন। ১৯০৭ সালে তিনি উড়িষ্যার জয়ন্ত রাওকে বিবাহ করেন ও স্বামীর সাথে কটক চলে যান। কটক যাওয়ার পর তিনি সেখানে ‘শিশু ও মাতৃমঙ্গল কেন্দ্র’, ‘উড়িষ্যা নারী সেবা সংঘ’ প্রভৃতি সামাজিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থ হলো: লালিভুলির দেশে, নিজে পড়, নিজে শেখ, গল্প আর গল্প (১৯১২), খোকা এলো বেড়িয়ে (১৯১৬), নতুন পড়া (১৯২২), সোনার ময়ূর, নতুন ছড়া (১৯৫২), বিদেশী ছড়া (১৯৬২), নানান দেশের রূপকথা, পথের আলো, ঈশপের গল্প, হিতোপদেশের গল্প প্রভৃতি।

  • রাজার মেয়ে আস্তে আস্তে দরজা ঠেল্‌তেই অমনি দরজা খুলে গেল। সেই ঘরের ভিতর এক বুড়ী ব’সে চরকায় সুত কাট্‌ছিল। রাজার মেয়ে কখন চরকা দেখেনি, সে আশ্চর্য্য হয়ে বুড়ীকে জিজ্ঞাসা কর্‌ল, “তুমি কি কর্‌ছ? ওটা কি অম্‌নি বন্ বন করে ঘুর্‌ছে?” বুড়ী বলল, “ওটা চরকা। আমি সুত কাটছি।” মেয়েটি বল্‌ল, “আমি দেখ্‌ব চরকা কি রকম?” বুড়ী তার হতে চরকা দিল। কিন্তু যেই সে চরকা ঘুরাতে গিয়েছে, অমনি কেমন করে সেই চরকার টেকো তার হাতে বিঁধে গেল, আর তখনি সে সেইখানে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়্‌ল।
    • গল্পের বই - সুখলতা রাও, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশক-ইউ, রায় এণ্ড সন্স্, কলকাতা, মুদ্রক- ব্রাহ্মমিশন প্রেস, প্রকাশসাল- ১৯১২ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৯ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৩৪
  • অনেক কষ্টে জাল ডাঙ্গায় তুলে দেখ্‌ল তাতে এই বড় এক বােয়াল মাছ পড়েছে। সেই মাছটা জেলেকে মিনতি করে বল্‌ল, “আমাকে ছেড়ে দাও। আমি মাছ নই, এক রাজার ছেলে, ডাইনীতে যাদু করে আমাকে মাছ করে দিয়েছে। তুমি আমাকে মেরে কি করবে? আমাকে খেতে একটুও ভাল লাগবেনা।”
    • লােভের শাস্তি, গল্পের বই - সুখলতা রাও, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশক-ইউ, রায় এণ্ড সন্স্, প্রকাশসাল- ১৯১২ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৯ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৪৫
  • ওটা কি কাদার উপর দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে নদীতে নাম্‌ছে। তারা ভাব্‌ল ফড়িং। কিন্তু এত বড় ফড়িং ত তারা কখনো দেখেনি, তাই ছুট্টে সেটা ভাল করে দেখ্‌তে গেল। কাছে গিয়ে দেখে, ওমা! এত ফড়িং নয়! এ যে সেই বুড়ো বামন!
    • মালতী পারুল, গল্পের বই - সুখলতা রাও, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশক-ইউ, রায় এণ্ড সন্স্, প্রকাশসাল- ১৯১২ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৯ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৪০-১৪১
  • কাপড় কাচা শেখা হয়ে গেলে পর সে যখন চলে আস্‌বে তখন ধােপা তাকে একটা গাধা দিয়ে বল্‌ল, “এই গাধাটা নাও, তােমার অনেক কাজে আস্‌বে। তােমার যখনি টাকার দরকার হবে, গাধাকে বল্‌বে ‘থু-থু!’ অমনি দেখ্‌বে গাধার মুখ দিয়ে মােহর পড়্‌বে।’ গাধা পেয়ে দরজীর ছেলের খুবই সুবিধা হল। টাকার দরকার হলেই সে বলে “গাধা! থু-থু!” আর অমনি গাধা মেলাই মােহর বার করে দেয়। তখন সে ভাব্‌ল, “এইবার বাবার কাছে ফিরে যাই।”
    • দরজী আর তার ছাগল, গল্পের বই - সুখলতা রাও, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশক-ইউ, রায় এণ্ড সন্স্, প্রকাশসাল- ১৯১২ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৯ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১১৬
  • রাজার মেয়ে চারদিকে আর কাউকে দেখ্‌তে পেল না, খালি দেখ্‌ল, একটা মস্ত ব্যাঙ্‌ জলের ভিতর থেকে মাথা বার ক’রে ড্যাব ড্যাব করে তার দিকে চেয়ে আছে!
    • ব্যাঙ্ রাজা, গল্পের বই - সুখলতা রাও, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশক-ইউ, রায় এণ্ড সন্স্, কলকাতা, মুদ্রক- ব্রাহ্মমিশন প্রেস, প্রকাশসাল- ১৯১২ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৯ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা