শায়খ আহমাদুল্লাহ
লেখক, গবেষক ও ইসলামিক ব্যক্তিত্ব
শায়খ আহমাদুল্লাহ একজন বাংলাদেশী ইসলামি ব্যক্তিত্ব, দাঈ, আলোচক ও সক্রিয় সামাজিক কর্মী। তিনি আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমানে এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।
উক্তি
সম্পাদনা- মেয়েকে বিয়ে দিতে ভালো পাত্র খুঁজছেন? ফজরের সময় মসজিদে মসজিদে তালাশ করুন।
- নারীরা প্রেসিডেন্টের মতো। সে যেখানেই যায়, তার বডিগার্ড লাগবেই। নারীর বডিগার্ড হলো তার মাহরাম। সবচেয়ে সেরা বডিগার্ড তার বাবা, ভাই ও স্বামী।
- "কাউকে কটূক্তি করা, গালি দেওয়া কিংবা আঘাত করাকে যদি আপনি ইসলামের সেবা মনে করেন, তাহলে আপনার ইসলামের শিক্ষক পরিবর্তন করা জরুরি।"
- ফাগুনে হলুদ হলেন, ভ্যালেন্টাইনে লাল। সাদার জন্য প্রস্তুত তো কাল?
- স্রোতের তালে গা ভাসিও না, ভাই। স্রোতের তালে গা ভাসাতে যোগ্যতা লাগে না, স্রোতের বিপরীতে চলতে যোগ্যতা লাগে।
- তথাকথিত কাছে আসার পরেই তৈরি হয় সৃষ্টিকর্তার নাফরমানির গল্প, মা-বাবার অবাধ্যতার গল্প, প্রতারিত হওয়ার গল্প, পরিবার ধ্বংসের গল্প, খুন-ধর্ষণের গল্প, ময়লার ভাগাড়ে নবজাতক পড়ে থাকার গল্প, আত্মহননের গল্পসহ আরো বহু ভয়ংকর গল্প। সমাজ নষ্টের কারিগররা যিনার আগের গল্প শোনালেও পরের গল্পগুলো শোনায় না।
- অন্য ধর্মাবলম্বীরা আমাদের ধর্মগ্রন্থ পড়ে না। তারা আমাদের কর্ম ও আচরণ দেখে। সুতরাং তাদের প্রতি সুন্দর আচরণ করুন। আপনার আচরণ দেখে তারা ইসলামকে বিচার করবে; ইসলামের প্রতি আগ্রহী হবে।
- ইহুদিদের যেসব পণ্য আপনি টাকা দিয়ে কিনছেন, বোমা হয়ে সেটা ফিলিস্তিনের মানুষের উপর পড়ছে। ইহুদিদের পণ্য বর্জন করুন। দেশি পন্য ব্যবহার করুন। এটি নিরীহ ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াবার সূবর্ণ সুযোগ।
- আমরা যতই শিক্ষিত হই, ঈর্ষণীয় ক্যারিয়ার গড়ি, জগৎজোড়া খ্যাতি লাভ করি— তবু দিনশেষে সুখ-দুঃখের কথা বলে হৃদয়কে ভারমুক্ত করার জন্য আমাদের গোপন একটি জায়গা দরকার। সেই জায়গাটির নাম রবের দরবার।
- ধর্ম, রাজনীতি কিংবা বিয়ে-বিনোদন—যে নামেই হোক, মানুষকে অতিষ্ঠ করে, এমন বিকট আওয়াজ সভ্য সমাজে অগ্রহণযোগ্য। - (থার্টফাস্ট নাইটের আতশবাজি সম্পর্কে)
- ইহুদিদের যেসব পণ্য আপনি টাকা দিয়ে কিনছেন, বোমা হয়ে সেটা ফিলিস্তিনের মানুষের উপর পড়ছে। ইহুদিদের পণ্য বর্জন করুন। দেশি পন্য ব্যবহার করুন। এটি নিরীহ ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াবার সূবর্ণ সুযোগ।
- জীবনে যে যত বেশি চাপ নিতে পারে, আল্লাহ তাকে তত বড় করেন।
- পিতা-মাতার আনুগত্য করা সন্তানের ওপর যেমন ফরয, তেমনি সন্তানের সঙ্গে ইনসাফ করাও পিতা-মাতার অবশ্য-কর্তব্য। আমাদের সমাজে পিতা-মাতার খেদমত জনপ্রিয় টার্ম, অন্যদিকে সন্তানের প্রতি পিতা-মাতার দায়িত্ব অনালোচিত ও অবহেলিত। অথচ দুটোই ইসলামে গুরুত্বপূর্ণ।
- মানবতার সবচেয়ে বড় সেবা ও মানুষের সবচেয়ে বড় উপকার হলো, অনন্ত অসীমকালের জাহান্নামের আগুন থেকে তাকে বাঁচিয়ে দেয়া। চিরসুখের ঠিকানা জান্নাতে যাওয়ার বন্দোবস্ত করে দেয়া, পথ দেখিয়ে দেয়া।
- আল্লাহর নৈকট্যলাভ ও দোয়া কবুলের শ্রেষ্ঠ সময় রাতের শেষ প্রহর। রমজান উপলক্ষ্যে শেষ রাতে আমাদের উঠতেই হয়। সেই সুযোগে আমরা যদি সাহরির আগে-পরে দু-চার রাকাত তাহাজ্জুদ পড়ি, নির্জনে দোয়া ও মুনাজাতে মশগুল হই, তবে এই সামান্য সময়ের রাত্রিজাগরণ ও মিনতি আমাদের রমজানকে সার্থক করে দিতে পারে।
- মেয়েটিকে তার পিতা-মাতা খাইয়ে-পরিয়ে বড় করে, শিক্ষা-দীক্ষা দিয়ে আপনার হাতে তুলে দিয়েছেন। সেই খুশিতে আপনার উচিত সবাইকে ওয়ালিমা খাওয়ানো। সেটা না করে অনেকে উল্টো দর কষাকষি করে কনের পিতার ওপর কয়েকশ লোক খাওয়ানোর বোঝা চাপিয়ে দেয়, এদের বরযাত্রী বলা হলেও আদতে তারা বদযাত্রী।
- "আমাদের জীবনের মুহূর্তগুলোকে যদি একত্র করে ফিল্ম আকারে প্রদর্শন করা হয়, তবে কি সেই ফিল্ম সপরিবারে এবং সকল মানুষের সঙ্গে বসে দেখার মতো হবে? উত্তর যদি না-বাচক হয়, তাহলে আসুন— এখনি জীবনের ভালো ফিল্ম তৈরির পথে চলতে শুরু করি। এমন একটি জীবন যাপন করি, তাকে ফিল্ম বানালে যেন সপরিবারে দেখার মতো ফিল্ম হয়। সবার সামনে নিজেকে যেভাবে প্রদর্শন করি, বাস্তবেও তেমন হয়ে ওঠার চেষ্টা করি।"
- "মনের মধ্যে কারো প্রতি ক্ষোভ রেখে নিজেকে কষ্ট দেবেন না। নিজের সুখের জন্যই মনটাকে ফ্রেশ রাখুন। জীবনকে উপভোগ করুন। কারো প্রতি ক্ষোভ হলে জ্বালা-পোড়ার কষ্ট তার নয়; বরং আপনারই হয়! সুতরাং ক্ষোভ নয়, ক্ষমা করুন। মনটাকে নির্ভার রাখুন।"
- "মানুষের আসল শত্রু শয়তান। আদম-সন্তানের জান্নাতের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করাই তার মূল মিশন। আর সে মিশন বাস্তবায়নের জন্য তার বড় হাতিয়ার হলো, মানুষকে ভোগবাদে ডুবিয়ে রাখা এবং স্বভাবজাত লজ্জাশীলতা নষ্ট করে দেওয়া।"
- "আবেগ অনেকটা সফট ড্রিংকসের ঝাঁজের মতো। বেশি সময় থাকে না। অন্তরে যে আবেগ আছে সেটা বৈধ ভালোবাসার জন্য জমিয়ে রাখুন। আবেগ ও প্রেম যদি দুই নম্বর ভালোবাসায় খরচ করে ফেলেন তাহলে এক নম্বর ভালোবাসা যখন শুরু হবে তখন আপনার ভালোবাসার পুঁজিতে টান পড়বে। সুতরাং হারাম রিলেশনকে ‘না’ বলুন, পবিত্রতার পথে অবিচল থাকুন।"
- "হে যুবক, এ সংস্কৃতি তোমার নয়। তোমার রব তো তোমাকে সবচেয়ে সমৃদ্ধ সুমহান সংস্কৃতি দিয়েছেন ইসলামে। গভীর রাতে হারামে হারিয়ে, অপচয় করে, ভোগের উম্মাদনায় লিপ্ত হয়ে সারা বছর ভালো থাকার এই ভ্রান্ত বিশ্বাস ছিল অগ্নিপূজক ও প্যাগানদের। যেটাকে তুমি আবেগ বা সাংস্কৃতি বলছ, সেটা মূলত বাণিজ্যিক সাম্রাজ্যবাদীদের ব্যবসার পণ্য! এই অপসংস্কৃতির আড়ালে ওরা তোমার সম্পদ ও চেতনা-দুটোই হরণ করছে। একটু চোখটা মেলো প্লিজ।"
- "নিজের ভুল স্বীকার করতে আমাদের ‘দ্বিধা’ হয়। কাছের মানুষের অন্যায়কে অন্যায় বলতে ‘দ্বিধা’ হয়। গরিব বয়স্ক লোককে সম্মান জানাতে ‘দ্বিধা’ হয়। বাসার কাজের লোককে নিজেদের মতো মানুষ ভাবতে দ্বিধা হয়। এমন কতো মন্দ ‘দ্বিধা’ আমরা পদে পদে লালন করি। এসব নিন্দনীয় ‘দ্বিধা’ দূরের জন্যে ওরা ক্যাম্পেইন করে না। ওরা ক্যাম্পেইন করে মানব-চরিত্রের অলংকার —‘সহজাত লাজুকতা’ ও হারামে লিপ্ত হওয়ার ‘দ্বিধা’ দূর করার জন্যে। যারা তরুণদের প্রশংসনীয় লাজ দূর করতে চায়, নির্মূল করতে চায় দেশীয় সংস্কৃতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধ, তাদের থেকেই বরং দ্বিধাহীন দূরে সরার গল্প আমাদের রচনা করতে হবে।"
- "বিবাহের আগে একটু-আধটু জানাশোনা থাকলে বিবাহ-পরবর্তী বোঝাপড়াটা ভালো হয়, এ দাবি অনেকের। অথচ অভিজ্ঞতা ভিন্ন কথা বলে। সরাসরি বিবাহ করা আগের জেনারেশনের দাম্পত্য-জীবনে পারস্পরিক বোঝাপড়া আজকের লিভ টুগেদার প্রজন্মের চেয়ে ভালো, তাদের ভালোবাসা আমাদের চেয়ে নিখাদ এবং তাদের সম্পর্ক আজকের জেনারেশনের চেয়ে বেশি টেকসই ছিলো। সুতরাং প্রিয় যুবসমাজ, দৃঢ়তার সাথে হারামকে না বলুন। হালাল সম্পর্কের জন্য অপেক্ষা করুন। শয়তানের ফাঁদে পা না দিয়ে মহান আল্লাহর নির্দেশিত পথে থাকুন। জোয়ারে গা না ভাসিয়ে স্রোতের বিপরীতে চলতে শিখুন।"
- "অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, যারা বিয়ের আগে অবৈধ প্রেমে অনেক বেশি আবেগ-কাতর থাকেন, বিয়ের পর স্ত্রীর প্রতি অতটা আবেগ ধারণ করেন না। এর কারণ হারামের প্রতি মোহ মানুষকে হালালের আগ্রহ থেকে বঞ্চিত করে। হালালের স্বাদ থেকে বঞ্চিত করে। সুতরাং শুভার্থী হিসেবে তরুণ-যুবকদের প্রতি আমার আবেদন— অন্তরের আবেগ জমিয়ে রাখুন বৈধ ভালোবাসার জন্য, এটি পাওয়ার অধিকার যার তার জন্য। আবেগ ও প্রেম যদি অপাত্রে অপচয় করে ফেলেন, তা হলে যথার্থ পাত্রে খরচ করার সময় তা অবশিষ্ট থাকবে না।"
- "রাজা-বাদশারাও যে সুখভোগের সুযোগ পায়নি, বরং স্বপ্নেও কল্পনা করেনি, তা আমরা সহজেই উপভোগ করছি প্রতিনিয়ত! মহান রব অগণিত সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে ডুবিয়ে রেখেছেন আমাদের। আপনি চোখ দুটো যত বেশি মেলবেন তত বেশি মাথাটা নিচু হয়ে আসবে। এরপরও আমরা অনেকে ভাগ্য নিয়ে বিলাপ করি!"
- "স্বামী-স্ত্রীর কলহ বা মনোমালিন্যে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ অধিকাংশ ক্ষেত্রে দাম্পত্য-সমস্যাকে আরো জটিল করে তোলে, এমনকি অনেক সময় বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটিয়ে ছাড়ে। কলহ নিরসনের ভার দম্পতির ওপর ছেড়ে দিলে এবং বাইরের মানুষের ইন্টারফেয়ার না থাকলে অধিকাংশ পারিবারিক সমস্যা আপনাতেই দূর হয়ে যায়।"
- "‘খেলা’ মানসিক রিফ্রেশমেন্ট ও শরীর চর্চার একটি উপকরণ মাত্র। শরীয়ার সীমানায় থেকে তা থেকে উপকৃত হবেন একজন ঈমানদার। কিন্তু আখিরাত বিশ্বাসী মানুষ, যার প্রতিটি মুহূর্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং যার প্রতিটি কর্মকাণ্ড লিপিবদ্ধ হচ্ছে হিসাবের খাতায়, 'খেলা'র মতো তুচ্ছ বিষয়ে মেতে থাকা তাকে মানায় না।"
- "দুনিয়াতে মোবাইলের ভার বহন করা অনেক সহজ হলেও আখেরাতে এর দায়ভার বহন করা অনেক কঠিন হতে পারে।"
- "ঠকে গেলেও বিশেষ ক্ষতি নেই। এইটুকু জীবন কোনো না কোনোভাবে শেষ হয়েই যাবে। কিন্তু যারা ঠকিয়েছিল, প্রতারণা করেছিল, হক নষ্ট করে ছিল, তারা কীভাবে দীর্ঘশ্বাসটা নিশ্চিন্তে নেবে? ঠকিয়ে যারা ভাবছে জিতে গেল, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে।"
- "প্রিয়নবী (সা.)-কে শত্রুরাও বিশ্বস্ত মনে করত, অথচ আমাদেরকে আজ কাছের লোকেরাও বিশ্বাস করতে পারে না!"
আরও দেখুন
সম্পাদনাউৎস
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনাউইকিপিডিয়ায় শায়খ আহমাদুল্লাহ সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ রয়েছে।