সূর্যাস্ত

দিগন্তের নিচে সূর্যের দৈনিক অন্তর্ধান

সূর্যাস্ত হলো পৃথিবীর ঘূর্ণনের ফলে পশ্চিমে দিগন্তের নীচে সূর্যের প্রতিদিনের অদৃশ্য হওয়া। যে মুহূর্তে সূর্যের গোলাকার অংশের শেষ প্রান্ত পশ্চিম দিগন্তের নীচে অদৃশ্য হয়ে যায় তাকেই সূর্যাস্তের সময় হিসাবে জ্যোতির্বিজ্ঞানে সংজ্ঞায়িত করা হয়।

ও পারে সূর্যাস্ত, আকাশ সেদিন কী রকম লাল হয়েছিল—যেন সিঁদুরগোলা।—অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর

উক্তি সম্পাদনা

  • সহিত্যের জগৎ মানেই হচ্ছে মানুষের জীবনের সঙ্গে মিশ্রিত জগৎ। সূর্যাস্তকে তিনরকম ভাবে দেখা যাক। বিজ্ঞানের সূর্যাস্ত, চিত্রের সূর্যাস্ত এবং সাহিত্যের সূর্যাস্ত। বিজ্ঞানের সূর্যাস্ত হচ্ছে নিছক সূর্যাস্ত ঘটনাটি; চিত্রের সূর্যাস্ত হচ্ছে কেবল সূর্যের অন্তর্ধানমাত্র নয়, জল স্থল আকাশ মেঘের সঙ্গে মিশ্রিত করে সূর্যাস্ত দেখা; সাহিত্যের সূর্যাস্ত হচ্ছে সেই জল স্থল আকাশ মেঘের মধ্যবর্তী সূর্যাস্তকে মানুষের জীবনের উপর প্রতিফলিত করে দেখা—কেবলমাত্র সূর্যাস্তের ফোটোগ্রাফ তোলা নয়, আমাদের মর্মের সঙ্গে তাকে মিশ্রিত করে প্রকাশ।
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সাহিত্যের প্রাণ, সাহিত্য-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৫ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২১৩
  • মেঘলোকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত অতি আশ্চর্য্য দৃশ্য—ভূলোকে তাহার সাদৃশ্য অনুমিত হয় না। ব্যোমযানে আরোহণ করিয়া অনেকে একদিনে দুইবার সূর্যাস্ত দেখিয়াছেন। এবং কেহ কেহ একদিনে দুইবার সূর্যোদয় দেখিয়াছেন। একবার সূর্য্যাস্তের পর রাত্রি সমাগম দেখিয়া আবার ততোধিক উর্দ্ধে উঠিলে দ্বিতীয়বার সূর্যাস্ত দেখা যাইবে এবং একবার সূর্যোদয় দেখিয়া আবার নিম্নে নামিলে সেই দিন দ্বিতীর বার সূর্যোদয় অবশ্য দেখা যাইবে।
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, গগনপর্য্যটন, বিজ্ঞানরহস্য-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, দ্বিতীয় সংস্করণ, প্রকাশসাল- ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দ (১২৯১ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ২৫-২৬
  • প্রশান্ত সূর্যাস্ত পরে দিগন্তের যে রাগ-রক্তিমা,
    লেগেছে প্রাণের ‘পরে,
    সহসা স্মৃতির ঝড়ে
    মুছিয়া যাবে কী তার সীমা!
    • সুকান্ত ভট্টাচার্য, প্রথম বার্ষিকী, সুকান্ত সমগ্র- সুকান্ত ভট্টাচার্য, প্রকাশক- সারস্বত লাইব্রেরী, কলিকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৪ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ১৭০
  • সূর্যাস্তকালে আকাশ লোহিতবর্ণ হ’লে কৃষ্ণ বুকস্থলগ্রামে পৌঁছলেন। পরিচারকগণ তাঁর রাত্রিবাসের জন্য সেখানে শিবিরস্থাপন ও খাদ্যপানীয় প্রস্তুত করলে। কৃষ্ণ স্থানীয় ব্রাহ্মণদের আমন্ত্রণ ক’রে ভোজন করালেন।
    • কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস, ভগবদ্‌যানপর্বাধ্যায়, অনুবাদক- রাজশেখর বসু, মহাভারত - রাজশেখর বসু, প্রকাশক- এম. সি. সরকার এন্ড সন্স লিমিটেড, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৩০
  • ক্রমে সূর্যাস্ত হইল। কিন্তু আমাদের গন্তব্যস্থান বহুদূরে। আমরা চন্দ্রগিরি নামক শেষ পাহাড়ে নামিতে লাগিলাম।
    • হেমলতা দেবী, নেপাল যাত্রা, নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী, প্রকাশক- গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় এণ্ড সন্স, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯১১ খ্রিস্টাব্দ (১৩১৮ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৭
  • অন্য দিকে লুব্ধ ক্ষুব্ধ হিংস্র বারিরাশি
    প্রশান্ত সূর্যাস্ত-পানে উঠিছে উচ্ছ্বাসি
    উদ্ধত বিদ্রোহভরে। নাহি মানে হাল,
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দেবতার গ্রাস, সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক- বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, কলকাতা, প্রকাশসাল- ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দ (১৩৬২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৩৩৬
  • এ পারে চিতে সাজানো হল চন্দন কাঠ দিয়ে, ও পারে সূর্যাস্ত, আকাশ সেদিন কী রকম লাল হয়েছিল—যেন সিঁদুরগোলা।
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঘরোয়া, তৃতীয় পরিচ্ছেদ, ঘরোয়া-অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রকাশক-বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ, প্রকাশসাল- ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দ (১৩৭৭ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৫৯
  • শুরু হলো, চোরাবালি পেরিয়ে পেরিয়ে
    যাওয়া যতক্ষণ দেখা যাবে
    বাতিঘর, ভেবে নেওয়া এই তো সূর্যাস্ত
    হলো আরো বাকি আছে
    • তপোধীর ভট্টাচার্য, হে আগুন, শুশ্রূষা করো, কবিতাসংগ্রহ- তপোধীর ভট্টাচার্য, তৃতীয় খণ্ড, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশক- এবং মুশায়েরা, কলকাতা, প্রকাশসাল-২০১৫ খ্রিস্টাব্দ (১৪২২ বঙ্গাব্দ), পৃষ্ঠা ৪৫

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা