হাত
হাত হল প্রাইমেট (শ্রেষ্ঠ বর্গভুক্ত স্তন্যপায়ী প্রাণী)দের অগ্রবাহু বা অগ্রপদের শেষে অবস্থিত একটি প্রিহেনসিল বা একাধিক আঙুলযুক্ত উপাঙ্গ। এই প্রাইমেটদের মধ্যে আছে মানুষ, শিম্পাঞ্জি, বানর, এবং লেমুর। আরও কয়েকটি মেরুদণ্ডী প্রাণী, যেমন কোয়ালাদের, (যাদের প্রতিটি "হাত" য়ে দুটি বিপরীতমুখী বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ রয়েছে এবং মানুষের আঙুলের ছাপ এর অনুরূপ আঙুলের ছাপ রয়েছে) সম্মুখ প্রত্যঙ্গে থাবার পরিবর্তে যা রয়েছে তাকে "হাত" বলা হয়। বলা হয় র্যাকুনদের সাধারণত "হাত" রয়েছে, যদিও তাদের বিপরীতমুখী বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ নেই।
উক্তি
সম্পাদনা- সুন্দর হাত দু’খানিতে চুড়ী পরাইতে গিয়া চুড়ীওয়ালা যেন কেমন হইয়া গেল। চোখ ভরিয়া হাত দু’খানিই দেখিতেছিল— মুুখের দিকে তাকাইবার অবসর ঘটে নাই।
- চুড়ীওয়ালা,ইঙ্গিত,কৃষ্ণদাস আচার্য চৌধুরী,পৃষ্ঠা ২১
• | টিকি মুণ্ডে চড়ি উঠি কহে ডগা নাড়ি, |
রবীন্দ্রনাথ ঠাকু্র, কণিকা,পৃষ্ঠা ৪২ |
- তোমাকে কেহ যদি লাঠি দিয়া মারিতে আইসে, তবে তুমি কি কর? দৌড়াইয়া পালাও। আততায়ীর হাত এড়াইবার ইহাই সর্বোৎকৃষ্ট উপায় বলিয়া আমরা মনে করি। কিন্তু অনেক জানোয়ার ইহা অপেক্ষা অন্যরূপ উপায় অবলম্বন করে।
- উটপক্ষীকে কুকরেরা তাড়া করিলে যখন সে মনে করে যে আর ইহাদের হাত এড়ানো গেল না তখন মাথাটি বালির নীচে গুঁজিয়া রাখে। অবশ্য ইহাতে বিপরীত ফলই ঘটিয়া থাকে, কিন্তু উটপক্ষী প্রথমে মনে করে যে বড়ই নিরাপদ হইয়াছে।
- একপ্রকারের ফড়িং আছে, তাহারা পাখা দুটি একত্র করিলে দেখিতে ঠিক গাছের পাতার মতন হয়। তখন আর তাহাদিগকে সহজে চিনিতে পারা যায় না। এইরূপে তাহারা ফড়িংখাদক পাখিদের হাত হইতে রক্ষা পায়।
- শম্বুকজাতীয় অনেকপ্রকার জলজীব আছে, তাহার যখন দেখে যে শত্রুর হাত হইতে বাঁচিবার আর অন্য উপায় নাই, তখন একপ্রকার কালো জিনিস পেটের ভিতর হইতে বাহির করিয়া দেয়। ইহাতে জলটা অনেক দূর পর্যন্ত এত কালো হইয়া যায় যে, আর তাহার ভিতর দিয়া কিছুই দেখিতে পাওয়া যায় না। এই অবসরে সে পলাইয়া কোনো নিরাপদ স্থানে যায়।
কচ্ছপগুলির কাণ্ড-কারখানা সকলেই দেখিয়াছ, সুতরাং তাহার সম্বন্ধে বিশেষ কিছু বলার আবশ্যক দেখি না। একপ্রকারের কচ্ছপ আবার শুধু গলাটি আর হাত-পাগুলি ভিতরে লইয়া গিয়াই সন্তুষ্ট হয় না। তাহার শরীরের আবরণটা কবাটের মতো হইয়া সেই হাত-পাগুলিকে ঢাকিয়া রাখে।
- উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র,বিবিধ প্রবন্ধ,নানাপ্রসঙ্গ,পৃষ্ঠা ৯৪০-৯৪১
• | পর্দায়, গালিচায় বক্তাভ রৌদ্রের বিচ্ছুরিত স্বেদ, |
বনলতা সেন,নগ্ন নির্জন হাত,জীবনানন্দ দাশ ,কলকাতা,২০১৭ খ্রিস্টাব্দ (১৪২৪ বঙ্গাব্দ),পৃষ্ঠা ২০ |
• | আপনি এসে ধরলে হাত |
সরলা বসু রায়, চিত্ত-প্রদীপ,ধরলে যখন আমার হা্ত,১৯৪১ খ্রিস্টাব্দ (১৩৪৮ বঙ্গাব্দ),পৃষ্ঠা ২৯ |
- ও পাড়ার নন্দ গোঁসাই, আমাদের নন্দ খুড়ো, স্বভাবেতে সরল সোজা অমায়িক শান্ত বুড়ো। ছিল না তার অসুখবিসুখ, ছিল সে যে মনের সুখে, দেখা যেত সদাই তারে হুঁকোহাতে হাস্যমুখে।হঠাৎ কি তার খেয়াল হল, চল্ল সে তার হাত দেখাতে— ফিরে এল শুকনো সরু, ঠকাঠক্ কাঁপছে দাঁতে! শুধালে সে কয় না কথা, আকাশেতে রয় সে চেয়ে, মাঝে মাঝে শিউরে ওঠে, পড়ে জল চক্ষু বেয়ে। শুনে লোকে দৌড়ে এল, ছুটে এলেন বদ্যিমশাই, সবাই বলে, ‘কাঁদছ কেন? কি হয়েছে নন্দ গোঁসাই?
- সুকুমার সমগ্র রচনাবলী (প্রথম খণ্ড),আবোল তাবোল,পৃষ্ঠা ৫৫
- আমাদের দুটো করে হাত আছে, বানরের আছে চারটি। কিন্তু আমাদের কেউ হাতি বলে না, হাতি বলে, যার একটাও হাত নেই, তাকে। আমার অনেকগুলো দাঁত পড়ে গেছে, তবু যা আছে, হাতির ততগুলি নাই। কিন্তু আমি দন্তী হতে পারলাম না, দন্তী হল হাতি।
- উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র,বিবিধ প্রবন্্পৃষ্ঠা ৮৭৮
• | পৃথিবীর বাধা— এই দেহের ব্যাঘাতে |
জীবনানন্দ দাশ, জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা,স্বপ্নের হাতে, পৃষ্ঠা ৪৪ |
• | আসিল দিয়াড়ি হাতে রাজার ঝিয়ারি |
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, গল্পসল্প,আসিল দিয়াড়ি হাতে , পৃষ্ঠা ৪১ |
• | এক হাতে ওর কৃপাণ আছে, আর-এক হাতে হার। |
রবীন্দ্রনাথ ঠাকু্র, গীতবিতান,পূজা,২১১,পৃষ্ঠা ৯৪ |
- কিন্তু, এই সংকলন উপলক্ষ্যে একটি কথা বলবার সুযোগ পাব প্রত্যাশা করে এ কাজে হাত দিয়েছি। যারা আমার কবিতা প্রকাশ করেন অনেক দিন থেকে তাঁদের সম্বন্ধে এই অনুভব করছি যে, আমার অল্প বয়সের যেসকল রচনা স্খলিত পদে চলতে আরম্ভ করেছে মাত্র, যারা ঠিক কবিতার সীমার মধ্যে এসে পৌঁছয় নি, আমার গ্রন্থাবলীতে তাদের স্থান দেওয়া আমার প্রতি অবিচার।
- সঞ্চয়িতা,রবীন্দ্রনাথ ঠাকু্র, ভূমিকা
• | প্রভু আজি তোমার দক্ষিণ হাত |
রবীন্দ্রনাথ ঠাকু্র,প্রভু আজি তোমার দক্ষিণ হাত,গীতাঞ্জলি, পৃষ্ঠা ৫২ |
• | প্রেমের হাতে ধরা দেব |
রবীন্দ্রনাথ ঠাকু্র প্রেমের হাতে ধরা দেব,গীতাঞ্জলি,পৃষ্ঠা ১৭২ |
• | আজ টেলিফোন বেজে উঠেছে আবার, বার-বার শুধু |
তপোধীর ভট্টাচার্য, কবিতাসংগ্রহ,তুমি সেই পীড়িত কুসুম,তোমার ঐ বিদায়ী হাত,পৃষ্ঠা ২৬ |
• | কার হাতে যে ধরা দেব, প্রাণ, |
রবীন্দ্রনাথ ঠাকু্র, গীতবিতান,নাট্যগীতি,পৃষ্ঠা ৭৯৫ |
• | “... সব পাখি ঘরে আসে — সব নদী ফুরায় এ-জীবনের সব লেনদেন; |
ভূমিকা,জীবনানন্দ দাশ, বনলতা সেন |
• | কার হাতে এই মালা তোমার পাঠালে |
রবীন্দ্রনাথ ঠাকু্র, গীতবিতান,পূজা,পৃষ্ঠা ২৪-২৫ |
- কলকাতার রাস্তায় বিষম এক খেলা। বন্দুকের সঙ্গে শুধু হাতের লড়াই। আশ্চর্য! এমন এক সাংঘাতিক কাণ্ড তার মধ্যেও মজা পেয়েছে সুকান্ত। গোটা বইতে এমনি সব মিঠে রসে ভেজানো কড়া পাকের ছড়া। সুকান্তই নিজে তাই তার বইয়ের নাম দিয়েছিল 'মিঠেকড়া'।
- মিঠেকড়া,ভূমিকা,সুকান্ত ভট্টাচার্য
• | আবার আমার হাতে বীণা দাও তুলি, |
রবীন্দ্রনাথ ঠাকু্র, আবার আমার হাতে বীণা দাও তুলি,নৈবেদ্য,পৃষ্ঠা ৩৬ |
• | হে রাজেন্দ্র, তব হাতে কাল অন্তহীন। |
রবীন্দ্রনাথ ঠাকু্র, হে রাজেন্দ্র, তব হাতে কাল অন্তহীন,নৈবেদ্য,পৃষ্ঠা ৫০ |
• | পৃথিবীর বাধা— এই দেহের ব্যাঘাতে |
জীবনানন্দ দাশ, স্বপ্নের হাতে,ধূসর পাণ্ডুলিপি,পৃষ্ঠা ৪৪ |
• | একবার দেখে যাও ডাক্তারি কেরামৎ— |
সুকুমার রায় সমগ্র রচনাবলী (প্রথম খণ্ড),আবোল তাবোল,হাতুড়ে,পৃষ্ঠা ৩৫ |
• | ডান হাত হতে বাম হাতে লও, |
রবীন্দ্রনাথ ঠাকু্র,উৎসর্গ,পৃষ্ঠা ৭৪ |
• | আমি তোমার ধরব না হাত, |
অতুলপ্রসাদ সেন,গীতিগুঞ্জ,পৃষ্ঠা ৭ |
- দুঃখীরাম। যথার্থ কথা। ওই-রকম তার চোখ বসে গিয়েছিল, গালের মাংস ঝুলে পড়েছিল, হাত-পা সরু হয়ে গিয়েছিল, ঠোঁট সাদা, মুখের চামড়া হলদে–
- হাস্যকৌতুক (১৯৪৬)/রোগীর বন্ধু,রবীন্দ্রনাথ ঠাকু্র,পৃষ্ঠা ৩২