অজেয় রায়

বাঙালি লেখক

অজেয় রায় (১৭ আগস্ট, ১৯৩৪ - ৩ সেপ্টেম্বর, ২০০৮) একজন বাঙালি শিশুসাহিত্যিক। অজেয় রায় ১৯৩৫ সালে বীরভূম জেলার শান্তিনিকেতনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার ছাত্রজীবন অতিবাহিত হয় কলকাতা ও শান্তিনিকেতনে। কিছুকাল শিক্ষকতা করার পর বিশ্বভারতী কৃষি অর্থনীতি গবেষণাকেন্দ্রের কর্মীরূপে কাজ করতেন। শিশু কিশোরদের জন্যে অজেয় রায় প্রচুর কাহিনী রচনা করেছেন। তার লেখা সন্দেশ, আনন্দমেলা শুকতারা, কিশোর ভারতী ইত্যাদি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তার কয়েকটি গল্পে চিত্রাঙ্কন করেছেন সত্যজিৎ রায়। উল্লেখযোগ্য বইগুলির মধ্যে আছে আমাজনের গহনে, ফেরোমন, মুঙ্গু, মানুক দেওতার রহস্য সন্ধানে, কিশোর রচনা সংগ্রহ, এডভেঞ্চার সমগ্র ইত্যাদি।

  • আফ্রিকার প্রকৃতিতে মায়া আছে বুঝলে, আজ রাতে চাঁদ উঠবে। তখন দেখবে কি অদ্ভুত রহস্যময় দেশ। এই বিশাল মহাদেশের কতটুকুই বা আজ পর্যন্ত আমরা জেনেছি— এখানকার অসংখ্য জীবজন্তু, গাছপালা, এ দেশের উপজাতিদের রীতিনীতি।
  • আফ্রিকা সম্বন্ধে আমার তখন ধারণা ছিল অতি সামান্য, শুধু জানতাম এ এক বিশাল অজানা রহস্যময় দেশ। ঠিক করলাম, যেমন এ দেশের আদিবাসীরা প্রায় খালি হাতে মহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে বেড়ায়, আমিও তেমনি বেড়াব। তারপর একটু একটু করে আফ্রিকাকে চিনলাম।
  • আপনি তো আমার ছাত্র নন যে, নম্বর কাটব।
  • আর্মি-এন্ট হলো যাযাবর। কেবল দল বেঁধে ঘোরে। দিনের বেলায় গাছ বা পাথরের ছায়ায় বিশ্রাম নেয়, রাতে পথ চলে। এদের আর এক নাম ড্রাইভার এন্ট।
  • আন্দামানে গ্রীষ্ম বা শীতকাল বলে কিছু নেই। বর্ষা আর শরত, ব্যস্। এই দুই খতু। সব সময় হু হু করে সমুদ্রের হাওয়া ছুটছে। খাসা আবহাওয়া
  • আশ্চর্য জাতি এই ইংকারা; পাহাড়ের ওপর কী অদ্ভুত সব নগর গড়ে তুলেছিল। আমরা কুজকো শহরেও এমনি প্রকান্ড চৌকো পাথরে তৈরি মন্দির প্রসাদ ইত্যাদি দেখেছি, কিন্তু এমন খাড়া পাহাড়ের উপর তাদের এই কীর্তি না দেখলে বিশ্বাসই হতনা।
  • স্প্যানিয়ার্ডরা ষোলশো শতাব্দীতে পেরুর ইংকা সাম্রাজ্য এবং রাজধানী কুজকো অধিকার করে নেবার কিছু দিন পরে ইংকা রাজা মংকো সদলবলে পালিয়ে গিয়ে পাহাড়ের ওপর এই নগরে আশ্রয় নেয়। তারপর বলা যায় এটাই ছিল তাদের রাজধানী।
  • ইংকারা মাঝে মাঝে পাহাড় থেকে নেমে এসে স্প্যানিয়ার্ডদের ওপর উৎপাত করত। শেষে একদল স্প্যানিয়ার্ড সৈন্য ইংকাদের দমন করতে পাহাড়ে চড়তে শুরু করল। তখন তরুণ টুপাক-আমারু ইংকাদের রাজা। সে ভয় পেয়ে মাচুপিচু ছেড়ে পাহাড়ের অন্য পাশে পালাতে চেষ্টা করে। স্প্যানিয়ার্ডরা তাদের তাড়া করল। ইংকারা পাহাড় থেকে নেমে বনের মধ্যে হাজির হল। সামনে আমাজনের অববাহিকার গভীর অরণ্য। রাজা আর এগোতে ভরসা পেল না। সন্ধি করার মতলবে সে স্প্যানিয়ার্ডদের হাতে ধরা দিল। কিন্তু স্প্যানিয়ার্ডরা তাদের কুজকোয় নিয়ে গিয়ে স্রেফ গর্দান নিল। ব্যস, ইংকা রাজবংশ ধ্বংস হল। স্প্যানিয়ার্ডরা পাহাড়ের ওপর কী আছে তা নিয়ে আর মাথা ঘামায়নি। ইংকাদের পবিত্র নগরী ভিলকাঁপাম্প বহুকালের জন্য হারিয়ে গেল।

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা