কৃষ্ণ

হিন্দুধর্মে পরম পুরুষোত্তম ভগবান

কৃষ্ণ হল হিন্দুধর্মের সর্বাধিক শ্রদ্ধেয় দেবতা, হিন্দুধর্মের অনেক ঐতিহ্য জুড়ে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণে পূজা করা হয় । তিনি ভগবান বিষ্ণুর অবতার ও তাকে স্বয়ম ভগবান বা পরম সত্তা বলে মনে করা হয়।

বাঁশি হাতে কৃষ্ণ

উক্তি সম্পাদনা

  • ন হি জ্ঞানেন সদৃশং পবিত্রমিহ বিদ্যতে।
  • তৎ স্বয়ং যোগসংসিদ্ধঃ কালেনাত্মনি বিন্দতি।। (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা, চতুর্থ অধ্যায়, ৩৮তম শ্লোক)
    • অর্থাৎ, ব্রহ্মজ্ঞান অজ্ঞান-নাশক ও অত্যন্ত শুদ্ধিকর। এর তুল্য পবিত্র বস্তু ইহলোকে বা পরলোকে আর কিছু নেই। দীর্ঘকাল প্রযত্ন দ্বারা কর্মযোগে চিত্ত শুদ্ধ হলে মুমুক্ষু নিজ আত্মায় সেই ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করেন।।[১]
  • ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে নীতির কথা আর রাগী মানুষের কাছে উচিত অনুচিত কথা অর্থ হীন।
  • ধর্ম, সততা, পরিচ্ছন্নতা, সহ্যশক্তি, ক্ষমতাশীলতা, আয়ু, শারীরিক ক্ষমতা এবং স্মৃতি শক্তি সবই কলিযুগে সময়ের সাথে সাথে হ্রাস পাবে।
  • সুখ তো উপলব্ধী করার বস্তু, প্রাপ্ত করার বস্তু নয়। যে ব্যাক্তি বস্তুকে সুখ বলে মানে বাস্তবে তার সুখ প্রাপ্ত হয় না। যে সত্তা অথবা সম্পত্তিকে সুখ বলে গন্য করে সে অবশ্যই নিজের জন্য বিনাশকে আমন্ত্রণ জানায়।
  • যে কেবল নিজের পীরাকে আপন করে জীবন কাটায়, সে শক্তিহীন হয়ে পরে। কিন্তু যে ব্যাক্তি সমগ্র সমাজের পীরাকে আপন হৃদয়ে ধারণ করে জীবন কাটায়, সে শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
  • দূর্বল কেবল ভাগ্যকে দোষারোপ করে আর বীর ভাগ্যকে জয় করে।
  • মাতৃঋণ কোনো সন্তানই কখনোই শোধ করতে পারে না।
  • সময় কখনও মানুষের নির্দেশিত পথে চলে না, মানুষকে সময়ের নির্দেশিত পথে চলতে হয়।
  • যখন সংসারে দেখার মতো কিছু থাকে না তখন মানুষ ঈশ্বরের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে।
  • দান তাকে বলে যাতে দানী হারায় আর যাচক প্রাপ্তি লাভ করে। কিন্তু বলিদান সেটাই যেটা দানী দেয় আর সারা জগত প্রাপ্ত করে।
  • নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে কখনো সন্দেহ প্রকাশ করা সঠিক নয়।
  • বিরোধিতা শক্তির প্রমাণ হয় না। শক্তিমান সেই যে সহনশীল, সহ্য করতে পারে। যখন হৃদয় থেকে ক্রোধ আর বিরোধিতা দূর হয়ে যায়, তখন সহনশক্তি ধর্মের শক্তিতে পরিণত হয়। ক্রোধ থেকে প্রতিশোধের জন্ম হয় আর ধর্ম থেকে ন্যায় জন্মায়। তোমার জীবনেও যদি এমন সময় আসে, যখন তোমার উপর কোন অন্যায় হয় তবে ন্যায় করার পূর্বে নিজের ক্রোধের উপর অঙ্কুশ অবশ্যই রেখো।
  • অধিকতর আত্মা নিজের দেহকেই সব কিছু বলে গণ্য করে, স্বয়ং দেহ থেকে যে ভিন্ন তা জানতেই পারে না শরীরের যে দুঃখ, সুখ, স্বাদ। গন্ধ আদির অনুভব হয় তাকেই নিজের অনুভব মেনে নেয়, আর পরিবর্তনের প্রয়াসই করে না।
  • প্রেম উন্নতি দেয়, উচিৎ অনুচিতের জ্ঞান দেয়। প্রেম আর মোহের মাঝে পার্থক্য থাকে। বাস্তবে যা প্রেম, তা কোন মোহ নয়। প্রেমের জন্ম করুণা থেকে হয়, আর মোহের জন্ম অহংকার থেকে। প্রেম মুক্তি দেয়, মোহ আবদ্ধ করে। প্রেম ধর্ম, আর মোহ অধর্ম।
  • ভবিষ্যৎ তো প্রতিদিন, প্রতিক্ষনে নির্মিত হয়। ভবিষ্যৎ যে কিছু নয়। মানুষের আজকের নির্ণয় ও কর্মের পরিনাম আগামীর ভবিষ্যৎ। আপনি যদি আজ কোন নির্ণয় করে সন্তোষ বোধ করেন, তবে বিশ্বাস রাখুন ভবিষ্যতে অবশ্যই তার থেকে সুখ লাভ হবে।
  • যে আত্মা পরিবর্তনের প্রচেষ্টাই করে না, নিরন্তর অধর্ম করে চলে তাকে জাগ্রত করার জন্য দন্ড দেয়া অনিবার্য। তুমিও এটা জেনে নাও যে তুমিও কোন শরীর নও, কেবল মাত্র এক আত্মা।
  • এই পৃথিবীতে পরিলক্ষিত সকল মানুষ তা নয় যা তুমি ওদের গণ্য করছ, কিছু সময়ের জন্য এরা শরীরে বসবাস করছে মাত্র। এদের শরীরের মৃত্যু হবে কিন্তু এরা সবাই অমর। সে পুনরায় নতুন শরীর ধারন করবে।
  • সুখের চাবিকাঠি হলো আকাঙ্ক্ষা দূর করা।
  • সুখের কামনা যে করে তার সুখ লাভ হয় না, যে সুখ চিনতে পারে তারই সুখ লাভ হয়। তুমি যদি এটা জেনে যাও যে তোমার জন্য সুখ কি, তবে তুমি সুখ অবশ্যই পাবে।
  • আত্মার জন্মও হয় না এবং মৃত্যুও হয় না।
  • সাহসী দেখতে চাইলে যারা ক্ষমা করতে পারে তাদের দিকে তাকাও।
  • আয়না যেমন ধূলিকণা দ্বারা আচ্ছন্ন হয়, তেমনি ক্রোধে বুদ্ধিও আচ্ছন্ন হয়।
  • তারা একাই সত্য দেখতে পায় যারা ভগবানকে প্রতিটি প্রাণী ও বস্তুর মধ্যে দেখতে পায়।
  • মানুষ অর্থের দাস, কিন্তু অর্থ কোনো মানুষের দাস নয়।
  • আত্মাকে কোন অস্ত্র দ্বারা টুকরো টুকরো করা যায় না, আগুনে পোড়ানো যায় না, জলে সিক্ত করা যায় না বা বাতাসে শুকানো যায় না।
  • সর্বদা আপনার অভ্যন্তরীণ আত্মা যা বলে তা অনুসরণ করুন।
  • আত্ম-ধ্বংস এবং নরকের তিনটি দরজা আছে কাম, ক্রোধ এবং লোভ।
  • ভাল কাজগুলি কখনই নষ্ট হয় না, সর্বদা ঈশ্বরের দ্বারা পুরস্কৃত হয়।
  • আপনার জীবনকে আপনি যেভাবে চান সেভাবে বাঁচুন, অন্যের ইচ্ছার দাস হয়ে যাবেন না।
  • অন্য কারো জীবনকে অনুকরণ করে পরিপূর্ণতা নিয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে নিজের ভাগ্যকে অসম্পূর্ণভাবে বাঁচানো ভালো।
  • সবকিছুই আমার থেকে জন্মেছে, আমিই সকলের আদি উৎস। সবকিছু আমার অধীন, কেউ আমার উপরে নয়।
  • যা কিছু করতে হবে তা করুন, কিন্তু অহংকার দিয়ে নয়, লালসা নয়, হিংসা নয়, প্রেম, মমতা, নম্রতা এবং ভক্তি দিয়ে।
  • পরিবর্তনই পৃথিবীর নিয়ম।
  • হৃদয়বানের কোন ক্রোধ নেই।

আরো দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

  1. শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা, জগদীশ্বরানন্দ, স্বামী, উদ্বোধন কার্যালয়, রামকৃষ্ণ মিশন, প্রথম সংস্করণ, পৃষ্ঠা ১২০ ও ১২১।